topরাজনীতি

আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে। তিনি বলেন, ভেবেছিল কয়েকটা গাড়ি পোড়ালেই সরকার পড়ে যাবে, অত ভাত দুধ দিয়ে কেউ খায় না। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূমিহীন গৃহহীন যারা, তাদের বিনা মূল্যে ঘর করে দিয়েছি। ৮ লাখ ৪১ হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছি। ৩২ জেলা ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছি। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এ দেশে এসেছিলাম। আমার একটাই লক্ষ্য, এ দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলা। মূল্যস্ফীতি কমেছে, দেশে আর কখনো খাদ্যের কষ্ট হবে না। এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে ভোট দিতে দেবে না। নির্বাচন বন্ধ করে দেবে। এত সাহস কোথায় পায়। তারেক রহমান মানি লন্ডারিং মামলার আসামি। লন্ডনে বসে মানুষ মারার নির্দেশ দিচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখন উন্নয়ন করে, বিএনপি তখন অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ মারে। তারা মনে করে আগুন দিলে সরকার পড়ে যাবে। এত সহজ নয়।
নাশকতা করছে বিএনপি-জামায়াত: বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে নাশকতা করছে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আগুন নিয়ে খেলতে এলে তাদের হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে। কয়েকটি গাড়ি পোড়ালেই সরকার পড়ে যাবে, অত সহজ না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনে থাকা বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন বন্ধ করবে এত সাহস কোথা থেকে পায়। লন্ডন থেকে হুকুম দেয়। আগুন নিয়ে খেলতে গেলে আগুনে হাত পুড়িয়ে দেওয়া হবে। কয়েকটা গাড়ি পোড়ালে সরকার পড়ে যাবে, অত সহজ না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখন উন্নয়ন করছে তখন বিএনপি আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারছে। দেশের সব ধরনের নাশকতায় বিএনপির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিএনপি বাণিজ্য করেই ধ্বংস করেছে নির্বাচন। একজন লন্ডনে বসে মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে। আরেকজন গুলশানে বসে মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে। আবার পল্টন থেকেও আরেকবার বিক্রি করেছে। তারা এভাবে নির্বাচনকে বাণিজ্যে পরিণত করে ধ্বংস করেছে নির্বাচনকে।
অগ্নিসন্ত্রাসীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন শেখ হাসিনা: আগুন নিয়ে খেললে সেই আগুনে হাত পুড়ে যায় বলে অগ্নিসন্ত্রাসীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, লন্ডনে ঘুকুম দেয়, এখানে কিছু মানুষ আগুন দেয়। তাদের মনে রাখা উচিত, আগুন নিয়ে খেললে সেই আগুনেই হাত পুড়ে যায়। তারা ভেবেছিল, দুই-চারটা গাড়ি পোড়ালেই সরকার পড়ে যাবে। আসলে অতভাত দুধ দিয়ে কেউ খায় না। নির্বাচন বানচাল করতে গিয়ে সাধারণ মানুষদের ওপর চালানো অত্যাচারের জবাব দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারবে, ভোট দিতে দেবে না; ভোটে বাধা দেয়ার এত সাহস তারা কোথায় পেয়েছে? তাদের জবাব দিতে হবে।
মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এসেছে: মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এসেছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। দেশের মানুষের খাদ্যের আর সংকট হবে না। তিনি বলেন, আল্লাহ জন বুঝে ধন দেন। বিএনপি ক্ষমতায় থাকালে যেসব স্থানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্যাস পায়নি, আওয়ামী লীগের আমলে সেসব স্থানেই গ্যাসের সঙ্গে তেলও পাওয়া গেছে। বিএনপির আমলে মিললে এসব তারা লুটেপুটে খেতো, কিন্তু এসব সম্পদ জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করছি। সিলেটের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সিলেটবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সিলেটবাসী সেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে শুরু করে সবসময়ই আমাদের সঙ্গে রয়েছে। উপস্থিত জনতাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই নৌকা নুহ নবীর নৌকা। এই নৌকার মাধ্যমে মানব জাতিকে রক্ষা করেছেন রাব্বুল আলামিন। এই নৌক স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। নৌকা ক্ষমতায় এসেছে বলেই দেশের আর্তসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।
নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা: আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে নেতাকর্মীদের কাছে ওয়াদা নিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন,এই নৌকা নুহ নবীর নৌকা। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছি, নৌকায় উন্নয়ন হয়েছে তাই আগামী নির্বাচনে আপনারা ওয়াদা করেন নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। এসময় নেতাকর্মীরা নৌকা নৌকা বলে ওয়াদা করেন। । এই নৌকায় ভোট দিয়ে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। আপনাদের কাছে অনুরোধ, যাদের নৌকা মার্কায় নমিনেশন দিয়েছি, তাদের দেশের সেবা করার সুযোগ দেবেন। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করার পরিকল্পনা করেছি। আমাদের হারাবার কিছু নেই। এই দেশ স্বাধীন করেছেন আমার বাবা। একটাই লক্ষ্য দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলা। চা-শ্রমিকের উন্নয়নে কাজ করেছি, তাদের মজুরি বাড়িয়েছি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ। বুধবার সকাল থেকেই আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সিলেট বিভাগের ৪ জেলা থেকে নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন। দলীয় সভানেত্রীর নির্বাচনী প্রচারণার জনসভায় যোগ দিতে মিছিলে মিছিলে জড়ো হন নেতা-কর্মীরা। নগরের বিভিন্ন সড়কে ছোট-বড় মিছিল নিয়ে নৌকার স্লোগান দিয়ে জড়ো হচ্ছেন তারা। সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আশপাশের এলাকা, চৌহাট্টা, রিকাবীবাজারসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ভিড় করেন। লিফলেট বিতরণ করেন। কেউ কেউ পুরো শরীরজুড়ে নৌকা প্রতীক এঁকেছেন, কেউবা ছোট ছোট রঙিন নৌকা বানিয়ে মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ান। শেখ হাসিনার পক্ষে ‘উন্নয়নের মার্কা নৌকা’ বলে স্লোগান দেন। এদিন বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে মাদরাসা মাঠে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সিলেটের এ জনসভা থেকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন তিনি। এর আগে বেলা ১১টা ৩৩ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-৬০১ এর একটি ফ্লাইটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর হযরত শাহজালাল (র:) এর দরগাহ্ শরীফ জিয়ারত করেন তিনি। সেখানকার কর্মসূচি শেষে যান হযরত শাহ্ পরাণ (র:) এর মাজারে। এই সফরেও নিরাপত্তা ছাড়া কোনো সরকারি প্রটোকল নেননি প্রধানমন্ত্রী। সফরে তার সঙ্গে রয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানা। এছাড়াও তার সঙ্গে আছেন কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও রয়েছে সিলেটের নেতারা।

 

Related Articles

Back to top button