টাইমস ২৪ ডটনেট: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি বাস্তবায়িত হলে আয়ারল্যান্ডের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস ওষুধ ও রসায়ন খাতে ধস নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের ৭০ শতাংশেরও বেশি আসে এই খাত থেকে। আর এর ৮০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়। তাই, ট্রাম্প শুল্ক বাড়ালে এই খাতে রপ্তানিতে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
সরকারি তথ্য ডেটা অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি করে রেকর্ড ২ হাজার ২২০ কোটি ইউরো আয় করেছে আয়ারল্যান্ড। একক দেশ হিসেবে এই আয়ের সিংহভাগই যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে। এরপরই ইউরোপী ইউনিয়নের দেশগুলোর জোট ইইউ-এর অবস্থান।তবে ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর এই পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে বলে মনে করছেন শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা। কারণ, দায়িত্ব নিয়ে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আমদানি শুল্ক বাড়ালে আইরিশ পণ্য রপ্তানি ব্যাপক হারে কমবে। তাছাড়া, ভ্যাকসিনবিরোধী অবস্থানের জন্য সুপরিচিত রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রকে ট্রাম্প স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ায় বাড়তি উদ্বেগ যোগ হয়েছে।অডিট ফার্ম গ্র্যান্ট থর্নটনের কর বিভাগের পরিচালক জ্যানেট ম্যাক্সওয়েল আইরিশ টাইমসকে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতি আইরিশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যে সম্ভাব্য বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। যদিও ২০২৫ সালের আগে এর প্রভাব না।’
চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি ফার্ম ‘বিডিও’ আয়ারল্যান্ডের কাস্টমস অ্যান্ড ট্রেড পার্টনার ক্যারল লিঞ্চ সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি আইরিশ টাইমসকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মোট আমদানির ৩১ শতাংশের বেশি আইরিশ রপ্তানি থেকে। এটা ইইউভুক্ত দেশগুলোর বাইরে একক দেশ হিসেবে সর্বোচ্চ। কিন্তু ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে আইরিশ রপ্তানি বাজারে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির উপস্থিতি সংকুচিত হয়ে যেতে পারে।’তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি চিন্তা হলো ওষুধ ও রাসায়নিক খাত নিয়ে। দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসে এই খাত থেকে, যার ৮০ শতাংশই আসে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি থেকে।’রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রকে ট্রাম্পের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ার পর এই উদ্বেগ আরও বেড়ে গেছে বলে মনে করেন ক্যারল লিঞ্চ।
আয়ারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিসের (সিএসও) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের প্রথম নয় মাসে আইরিশ পণ্যের রপ্তানি ১২ শতাংশ বেড়ে প্রায় ১৬ হাজার ৬০০ কোটি ইউরো হয়েছে। সেপ্টেম্বরে শুধু ওষুধ ও রসায়ন খাতের রপ্তানি থেকে ৪৬০ কোটি ইউরো বা ৭৭ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৭০ কোটি ইউরোতে পৌঁছেছে, যা দেশটির মোট রপ্তানি আয়ের ৪৮ শতাংশ।
গত সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৪০ কোটি ইউরোর পণ্য (৪৭ শতাংশ) রপ্তানি হয়েছে কয়েকটি ইইউ দেশে। এর মধ্যে বেলজিয়ামে ২৬০ কোটি, নেদারল্যান্ডসে ২৪০ কোটি ও জার্মানিতে ১৭০ কোটি ইউরোর পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর বাইরে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে ৬৯০ কোটি ইউরোর পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা মোট আইরিশ রপ্তানি আয়ের ৩১ শতাংশ।