সৈয়দা রাশিদা বারী: দুনিয়ার নানা বৈষম্যে এবং ব্যস্ততায় মানুষ কেউ কারো কেয়ার নেয় না। মর্যাদাও বোঝে না। তবে যখন কারো হারাই, তখন বোঝে তার প্রয়োজন। বোঝে সে না থাকার জ্বালা। তেমনি শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গর ব্যাপারেও হয়। জিনিসটা না থাকলে, হারিয়ে গেলে বা নষ্ট অসুস্থ অকেজো হলে, তখনই বোঝে সেটার গুরুত্ব। অথচ তখন জিনিসটার টেম্পার শেষ হয়ে সমস্যা ঘনিয়া আসে। আর তখনই বুঝতে জানতে অনুভব করতে পারে প্রয়োজন মানে কি? প্রয়োজন কারে কয়। জিনিসটাকে যখন আর ফিরিয়ে আনার কোন সুযোগ থাকে না! দাঁত কান চোখ ঠোট নাক হাত পা ইত্যাদি এক একটা কি যে প্রয়োজনীয়, না হারালে বোঝা যাবে না। যারা হারিয়েছে সেই সব মানুষ জানে। শুধু কি মানুষ ভিত্তিক, দেহ ভিত্তিকই যত গুরুত্ব? এবং হারাবার জালা? না, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সমস্ত চাহিদায়, মানুষের প্রয়োজনীয়। সে সব জিনিসের ব্যাঘাত ঘটলেই, সমস্যা হলেই বুঝতে পারে মর্যাদা, যে সেটা কত প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ খুবই দরকারী। ৯ রমজানের দিন মাত্র ১১ঘন্টা (বেলা ১১টা থেকে রাত ১০টা) গ্যাস ছিল না, অন্তত ২০০০ ঘরে বা ফ্লাটে।
ঢাকার মত একটা ব্যস্ত জনবহুল মহল্লায়, এলাকায়, একটা পাড়ায়। রাস্তা মেরামতের কাজ করতে লেবারদের কোন ভুলে বা দুর্ঘটনায় হঠাৎ করে গ্যাসের লাইন ছুটে গিয়ে এটা হয়েছিলো। এই এক্সিডেন্টে ক্ষয় ক্ষতি কারো হয়নি। তবে রান্নায় দুর্ভোগ পোহায়েছে পুরা মহল্লাবাসী। একে তো রোজা রমজানের দিন। প্রায় দুপুরের পর বিকাল শুরু না হওয়া থেকেই যেখানে ইফতারির আয়োজন হয়, আর চুলাতেই সেখানে মেন ভূমিকায় থাকে। কি যে অবস্থা, সমস্যার আর কি বলবো! গ্যাস না থাকার যে যন্ত্রণা, এলাকার সবাই তা জানলো। সাশ্রয় বলতে কি বুঝায়, সে প্রশ্নও এখানেই এলো এবং আবছে জবাব মিললো। অভাবে যে শুধু স্বভাব নষ্ট হয় না, সুবুদ্ধি এবং ভালো কিছুও অর্জন বা লাভ হয়, এটা তার চাক্ষুস একটা প্রমাণ। আল্লাহ কেন সাশ্রয় পছন্দ করেন সেটাও বুঝলো। আর এই শিক্ষা অভাব ছাড়া অর্জন হয় না, ভুক্তভোগী ছাড়া সম্ভব না মূল জ্ঞান হওয়া। ধরা যেতে পারে এটাও একটা ইন্টার্নি জীবনে চলার পথের। তাই ঈদের মার্কেট শপিং বাজার ঘাট করা, যায় বলি না কেন? অপচয় করা যাবে না। এর আগে গত ৫মার্চ, পৃথিবীব্যাপী নেট নিষ্ক্রিয় হয়, আন্তর্জাতিক কোন প্রবলেমে। যার ফলে ফেসবুক মেসেঞ্জারও বন্ধ হয়। সেটা স্থায়ী ছিল রাত ৯ টা হতে সাড়ে ১০টা। কারো কারো বেশি সময়ের জন্যও বন্ধ হয়। আমার হয়েছিলো ২৪ঘন্টা বন্ধ। এই ব্রেক হওয়ার ফলে আমার লেখালেখির কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হয় ২৪ ঘন্টা। কেউবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রবলেমে আটকাই। সেটাও এমনই অবস্থার শিকার হয়ে মানুষ তখনো বুঝেছিল প্রয়োজন এবং সমস্যা সম্পর্কে। এই ধরনের সমস্যার সময় পার হতে চাই না। মানে ১ ঘন্টা যেন একদিন। তাহলে যার ২৪ ঘন্টার প্রয়োজন আটকায়। তার ২৪ঘন্টা মানে কি হতে পারে? ভুক্তভোগীই মাত্র জানে। সেই কবি কৃষ্ণ চন্দ্র মজুমদারের লেখা কবিতা প্রবাদের মত, অল্প বয়সে ভাব সম্প্রসারণ তখন করেছি বটে কিন্তু মর্ম বুঝি নাই, এখন বয়সের সীমানা পার হতে, জীবন চলার পথে, ধাপে ধাপে যেমন বুঝতে পারি।
যে জন দিবসে, মনের হরষে, জ্বালায় মোমের বাতি,
আশু গৃহে তার দেখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি।
চিরসুখী জন, ভ্রমে কি কখন, ব্যথিত বেদন, বুঝিতে পারে?
কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কীসে, কভু অশী বিষে দংশেনি যারে?
যতদিন ভবে, না হবে না হবে, তামার অবস্থা আমার সম।
ঈষৎ হাসিবে, শুনে না শুনিবে, বুঝে না বুঝিবে, যাতনা মম ”।
কিংবা রজনীকান্ত সেন এর-
বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,
“কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে
তুমি কত কষ্ট পাও রোধ, বৃষ্টির, ঝড়ে।”
বাবুই হাসিয়া কহে, “সন্দেহ কি তাই?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা,
নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর, খাসা।”
এইগুলো আমার বাবার কাছ থেকে শেখা, শিক্ষা জীবনে নানান ধাপে, ক্লাসে তো আছেই। কিন্তু তিনি আমার একদম শিশু কালে, যখন আমি তার পেটের উপর বুকের উপর চরে কাঁদতাম। অথবা বাবা তার পায়ের উপর বসিয়ে ঘুঘু সই পুতুল কই খেলাতেন। তখনই এইরকম আরো অনেক প্রবাদবাক্য এবং ছড়া আমায় শুনিয়ে শুনিয়ে শিখিয়েছিলেন। যার ফলে জিনিসগুলো আমার কঠিন ভাবে মুখস্ত আছে। যেগুলো সেইরকম পরিস্থিতিতেই মনে পড়ে। যেমন তিনি পদ্ম আকারে শিখিয়েছিলেন:
‘ধন ধন ধন, বিদ্যা মহা ধন।
এই ধন কেহ নাহি নিতে পারে কেড়ে।
যতই করিবে দান, তত যাবে বেড়ে।’
ঠিকই কত কিছুই হারিয়ে গেছে, জোর জুলুম পলিটিক্স করে নিয়েছে। মানুষই চুরি করে নিয়েছে, বিদ্যা ধন, এই জ্ঞানটুকু আজও দিয়ে তবু লেখালেখি করে খেয়ে বাঁচি। তিনি শিখিয়েছেন,
১. ‘না বলিয়া অন্যের জিনিস লইলে চুরি করা হয়।’
২. ‘মিথ্যা কথা বলিবো না। মিথ্যা বলা মহাপাপ।’’
ইত্যাদি… আজ বাবা নাই কিন্তু খেলার ছলে তার দেওয়া, এই ধরনের বহু বহু জ্ঞান বিদ্যা আমার প্রভাবিত করে। ভালো পথ দেখায়। বাঁচতে শেখায়। মা বলতেন তুমি এতোটুকু বাচ্চার এগুলো শুনাও কেন? মুখস্ত করাও কেন? ও এর কি বোঝে? শুধু শুধু মুখ নষ্ট করছো।
ভাদো পচাল পারছো। কিন্তু বাবা মায়ের কোন কথা আমলে না নিয়ে একই রূপ বলতেন। আমায় শিখাতেন। তার বলার সাথে আমি বলে লেখার উপরে পেন্সিল দিয়ে হাত ঘুরিয়ে লেখা শেখার মতো- বলা শিখতাম। তাই তার সাথে আমারও বলতে হতো। অথবা সে থামলে বলতে হতো।
যাহোক আসুন ঈদের বাজারঘাট করা বা সব কিছুতেই প্রত্যেকে সাশ্রয় করি। সাশ্রয়ী হই। এই যে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া খাদ্যদ্রব্য ছাড়াও অন্যান্য ফেলে দিতে হয়। বিলাসিতা সাজুগুজুর দ্রব্যাদিও দেখা যায় ময়লার ঝুড়িতে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে। ফেস পাউডার লিবিস্টিক লসুন ক্রিম স্নো ইত্যাদি কসমেটিক্স । কেন বাবা ঘরে থাকতেও কেন কিনতে হবে, সময় এবং পয়সা নষ্ট করে? আর শপিং করতে মানুষের সামনে গিয়ে, ভীড় জামানো, ঢলাঢলি ঠেলাঠেলিতে শামিল হওয়া। এটা কি রুচির বৈরী অভদ্রতা নয়? জরুরী কাজে বা চাকুরিতে যাওয়া সেটা আলাদা। শুধু ধর্ম বা ইসলাম টানবো কেন? আমাদের বিবেচনা কি বলে? কাপড়-চোপড়ের ক্ষেত্রেও সেরকম। এভেলেবেল নিত্যনতুন দামি খাষা পোশাক, একদম অব্যবহৃত ঘরে থাকতে, ওয়ারড্রব আলমারি ভরা থাকতে, দোকানে কেনার জন্য ভিড় করা এবং মানুষের সাথে পাল্লাপাল্লি কনটেস্টে লড়া, ঈদের মার্কেটিং বলে, এটা কতটুকু সমাচীন? ঈদ বলেই যে কিনা লাগবে, এরকমটা কেন করতে হবে? পোশাকের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় না কিন্তু পোশাক আশাক চিরস্থায়ীভাবে শরীরে সেটেল তো থাকে না। শিশুরা গায়ে গতরে বাড়তে থাকে। ছয় মাস বা বছর পরেই আর গায়ে হয় না। বয়স্কদের ক্ষেত্রে শরীর যদি ভারী হয়ে পড়ে, পোশাক সালোয়ার কামিজ কষা হয়ে যায়। ডিজাইনেরও ব্যাপার আছে। ২/৪ বছর গেলেই তো ব্যাকডেটেড হয়ে পড়ে। তখন আর গায়ে দেওয়া হয় না। মানুষ কি ভাববে মুখ লজ্জায়, নাক লজ্জায় বা চক্ষু লজ্জায়। এই জন্যও ঘর ভর্তি হয়ে থাকে। ওয়ারড্রব আলমারি বোঝাই হয়ে যায় ইত্যাদি। জিনিসপত্রে র্যাক সেলফ ভর্তি, কাজেই সাশ্রয়ী হলে ক্ষতি তো নাই বরং এটাও কিন্তু ইবাদত এবং ধর্ম পালনের মধ্যেই পড়ে। কেননা নবী রসূল যেটা করেন নাই, সেটা যদি শিরক বেদাত হয়ে থাকে। মানুষের যদি তখনকার আল্লাহর বান্দাদের। ফলো করতে হয়, পুরুষ ছাড়াও নারীদের ক্ষেত্রে, নারীরা ফলো করবে। তাহলে মা ফাতেমাই কি নিত্য নতুন পোশাক পড়তেন? এই ব্যাপারে নিজের জন্য বিলাসিতা অপচয় করতেন? এই যে হুজুররা এত বয়ান করেন, তালিম দেন, এটা তো বলেন না? কেন এত দরিদ্র এবং অসুস্থ চিকিৎসা বিহীন জরাজীর্ণ মানুষ, রাস্তায় বেড়োনো যায় না।
অথচ সমাজে চলছে কত রকম ফোটানি। হোটেল ভাড়া করে নিয়ে প্রতিবছর বিয়ে দিবস, জন্ম দিবস, খাতনা দেওয়া, মুসলমানি আয়োজন পরীক্ষায় পাস ইত্যাদি বোমাবাজি ফুটিয়ে যা করা হচ্ছে। এরকম সব ফুটানি বিরত রাখাই শ্রেয়। কারণ আল্লাহর প্রিয় বান্দারা তো এভাবে রং তামাশা ঢং দেখাতে ব্যস্ত ছিলেন না। শুকনা খাবারের পুটলা সুরাই করে পানি বয়ে ইসলাম ধর্ম প্রচারে লিপ্ত থেকেই জীবন কাটিয়েছেন। আর যাযাবরের জীবনে তাদের মৃত্যু হয়েছে। তাইতো অলি আল্লাহদের মাজার শরীফও বিশ্বের সবখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তারা যথন যেখানে অবস্থান করেছেন সেগুলোই মসজিদের রূপ ধারণ করেছে। এমনি তো আর আধ্যাত্মিক নজরুল লিখেন নাই ‘একটা মন ভাঙা আর মসজিদ ভাঙা সমান কথা।’ এর বাইরে জাগতিক জীবনের জন্য তারা দালান গড়েন নাই। গাড়ি কিনেন নাই। মিটকেস, মিকচেপ এ খাবার ভরেন নাই। এবং নষ্ট হলে র্দুগন্ধ হতে বাঁচতে ফেলে দেন নাই। এত পোশাক খাবার কসমেটিক্স লসুন সাবান ক্যাপসুল তেল ইত্যাদি কিনে আবার তা ডাস্টবিনে ছুঁড়ে না ফেলে ঐ অর্থে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেছেন। আর করেছেন প্রয়োজনের মূল্যায়ণ। তারা ১টা রুটি অনেকে মিলে ভাগ করে খেয়েছেন। মা ফাতেমা ৭তালি দিয়ে কাপড় পড়েছেন। এইসব শিক্ষায় আসুন মহান রমজানের আদর্শ করি। হ্যাঁ আসুন প্রয়োজনের মূল্যায়ন করি, এই রমজানে বৃথা অপচয় ছাড়ি।
তিনারা ২টা খেজুর খেয়ে ইফতারি করেছেন বটে। তবে সেখানকার সহজলব্ধ ফল হিসেবে, দামী জিনিসে বিনোদন মূলকভাবে খেজুর রাখেন নাই ইফতারিতে। পিয়াজু বড়া বেগুনি জুস সেভেন আপ বার্গার মোরগ পোলাও ইত্যাদি দিয়ে ইফতারি করতে হবে, এইসব কোথায় লেখা আছে- দলিল দেখাতে পারবে? পারবেনা। তাহলে দলিল ছাড়াই- কি হচ্ছে না কোন কাজ!? যত দলিল জব্দ করে আকড়ে ধরা হয়, নারীর জব্দ করা ষড়যন্ত্র, পুত্রের অর্ধেক কন্যার হবে, সেটার ব্যাপারে। এখানেও যে সমস্যা এবং প্রয়োজন বলে কিছু আছে, তা কিন্তু আমলে নাই। হুজুররা সেটা দেখেনা। ঈদ বলেই যে অপচয় করতে হবে, প্রয়োজন ছাড়াও কেনাকাটা করে, হাওয়াই বাজি বা জোনাকি বোম ফুটিয়ে, এগুলো কোথায় কোরআনে লিখা আছে? দলিল কেন লাগে না এগুলো করতে? বরং এই ব্যয় অর্থটা আত্মীয় প্রতিবেশী অসহায় গরিব মিসকিন এতিমদের দেওয়া যায়। শিক্ষা জ্ঞান সংস্কৃতি চর্চায় বা অবদান রাখতে, কারো বই কিনতে, স্কুলের বেতন দিতে, শীতের পোশাক, গরমের পোশাক, ফ্যান, টেবিল চেয়ার এমনই দরকারি প্রয়োজনীয় আসবাব খরচ, কন্যাদায় বিয়ে এবং খাতনায, ঘর মেরামত ইত্যাদি ব্যাপারে সহযোগিতা করা যায়। পারলে তাদের একটু খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা, ভালো কাপড়ের ব্যবস্থা, ভালো বাসস্থান চলার ব্যবস্থা করা উত্তম। ওই যে লোক দেখিয়ে হাইলাইটস হয়ে, কুমা লুঙ্গি শাড়ি কিনে বিলানোর পক্ষপাতী আমি নই। কম বেশি যাই হোক অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করলে, তারা তাদের বেশি প্রয়োজন বুঝে সেখানে খরচা করলো। এইতো ভালো। সহযোগিতা করতে হবে তাদের স্বাধীনতা রেখে। নারীর জীবনের মত স্বাধীনতা বেধে নয়। কেননা ৫/১০ স্থান থেকে ৫/১০খানা শাড়ি পেল, দেখা যাচ্ছে ২/৩ হাজার টাকা শাড়ির দাম। তারা অর্থনৈতিক সংকটে ২টি শাড়ি রেখে, বাকি শাড়ি বিক্রি করে। মূল দামের থেকে অর্ধেক দাম কমে। নানান কিছু ঢাকার জন্য বা লেপের কভার বানানোর জন্য, ধনীরায় আবার তাদের থেকে লাভ করে কেনে। এটা কি ভালো?? কেননা অত শাড়ি কাপড় বা লুঙ্গি তার লাগবে না। লাগবে দৈনন্দিন ক্ষুধা নিবারনের পেটের ভাত। ভাতের সাথেও তো তরকারি লাগে। তরকারি রানতে দরকার আরো অনেক কিছু। কাঁচা বাজার মসলার যে আগুন দাম! দরকার সাবান তেল ঔষধ বিছানার চাদর প্রভৃতি। কাজেই উপায় নাই মিথ্যাও বলতে হবে। এই মিথ্যা বলাও কিন্তু এরাই শেখাচ্ছে। বিক্রি তো করতেই হবে বাচার স্বার্থে। কাজেই দুই-ই অন্যায়। এই জন্যই দান করতে হয়, কিন্তু খরচের স্বাধীনতা গ্রহীতা ক্যান্ডিডেটের থাকবে। এখন লুঙ্গি কাপড় দেওয়া হয় বলেই, লুঙ্গি কাপড়ই চেয়ে নেয় লগবে বলে। লাগবে না বললে তো কেউ দেয় না। কাজেই মিথ্যে বলে গ্রহণ করে, তারপরে বিক্রি করে অন্যান্য চাহিদা মিটাই। অর্থাৎ যা বেশি প্রয়োজন এবং আগে প্রয়োজন তাই করে। যার ফলে স্বাধীনতা দিয়ে সহযোগিতা করলে, আমি মনে করি সেটাই উত্তম সেবা দান। গ্রহীতাও মিথ্যা বলবে না, দাতারও হবে দান করা। যা হোক আসুন আমরা মানুষ দেখানো, ফুর্তি মারা, ডাট করা ডামপাই দেওয়া ছাড়ি। এইসব অপচয় না করে, প্রয়োজনের মূল্যায়ন করি। দুই দিনের দুনিয়ায় সবাই সবার, সমস্যা ও প্রয়োজনের মোকাবেলা করি, শরিক হই। মরে গেলে সব অন্যের হয়ে যায়, তখন আর কেউ কারো মনে রাখেনা। আর দুনিয়ার উপরে যাদের রেখে যাওয়া হবে, তারাও মৃতদের নামে দান ধ্যান ফিতরা যাকাত দিতে পারবেনা। আদায় তারা নিজেদের নামে করবে। কারণ এটা নতুন এ যুগের হুজুরদের ফরমাইস। আবার কবরে কিছু নিয়েও যাওয়া যায় না। একমাত্র কর্ম গুন বেঁচে থাকে এবং নিজের হাতে যা সেবা দান আল্লাহ রসূলের রাস্তায় অর্থাৎ যা ইবাদত বন্দেগী করা হয়, সেটাই সাথে যাই। সেটাই নিজের হয়। কাজেই আসুন যার আছে অপচয় না করে যার নাই তার কাজে লাগাই, জনগণের জন্য কিছু করে। সেটাতে নিজেদের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশী সবার মধ্যে, সবার হক ভাগ করে, সুখ শান্তি নেওয়া হবে। আমার মনে হয় বা আমি মনে করি, এটাই একনিষ্ঠ সেবা দান। প্রকৃত বিনোদন। অন্তরালে যেখানে থাকে মানব সেবা, মনের শান্তি, আর হয় মানুষের জন্য কিছু করা। অলি আল্লাহ পীর পয়গম্বর বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশসহ পৃথিবীর প্রতি মুসলিম ঘরে ২০২৪ এর ঈদ উৎসব। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পবিত্র আনন্দ।
২১.০৩.২০২৪ইং, দুপুর ২টা, বৃহস্পতিবার।