topরাজনীতি

বাংলাদেশে ফের তিন দফা ভূমিকম্প

টাইমস ২৪ ডটনেট: বাংলাদেশে গত সাড়ে ৩১ ঘণ্টায় চারবার ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শনিবার সকালে একবার ও সন্ধ্যায় পরপর দুবার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এর আগে গত শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা।
জানা গেছে, গত শুক্রবারের ভূমিকম্প সারা দেশেই অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের সময় অনেকেই আতঙ্কে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। এতে শিশুসহ ১০ জন নিহত ও ছয় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে নরসিংদীতে। ঢাকায় চার ও নারায়ণগঞ্জে একজন মারা যান। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে অনেকেই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন। এ ছাড়া কিছু ভবন হেলে পড়ে ও ফাটল দেখা দেয়।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে পরপর দুটি ভূমিকম্প হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। এর এক সেকেন্ড পর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডে দ্বিতীয়বার ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এটির মাত্রা ৪ দশমিক ৩। দুটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকার বাড্ডা এলাকায়।
এর আগে শনিবার সকালে নরসিংদীতে আরও একটি মৃদু ভূমিকম্প হয়। জেলার পলাশ উপজেলায় সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩। গত শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা। ভূমিকম্পের সময় অনেকেই আতঙ্কে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। ভূমিকম্পের ঘটনায় শিশুসহ ১০ জন নিহত ও ছয় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে নরসিংদীতে। ঢাকায় চার ও নারায়ণগঞ্জে একজন মারা যান। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে অনেকেই ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন। এ ছাড়া কিছু ভবন হেলে পড়ে ও ফাটল দেখা দেয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রকাশিত মানচিত্রে দেখা যায়, দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা জোন-১-এর আওতায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত। ফল্ট লাইন বা প্লেট বাউন্ডারির কাছাকাছি অঞ্চলগুলো ভূমিকম্পের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। বিশেষ করে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ৯টি জেলা, ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নরসিংদীর কিছু অংশ, পুরো কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির নানা এলাকা উচ্চঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে বিবেচিত। অন্যদিকে জোন–৩ এলাকাভুক্ত খুলনা, যশোর, বরিশাল ও পটুয়াখালীতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কম।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ভূমিকম্পের বড় ধাক্কা সামলানোর সক্ষমতা রাজধানী ঢাকার নেই। ঢাকা শহরে অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে ভূমিকম্পে ক্ষতির ঝুঁকিও বেশি। তাই বড় কোনো ভূমিকম্প হলে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে ঢাকা। পড়তে পারে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্টের অংশ হিসেবে রাজউক পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, রাজধানীতে ২১ লাখ ৪৫ হাজার ভবন রয়েছে। ঢাকার নিকটবর্তী মধুপুর ফল্টে (টাঙ্গাইল) ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানলে ঢাকা শহরের কয়েক লাখ ভবন ধসে পড়তে পারে। এর অন্যতম কারণ– অধিকাংশ ভবন তৈরির ক্ষেত্রে জাতীয় ভবন নির্মাণ কোড অনুসরণ করা হয়নি। বেশিরভাগ ভবন নির্মাণে সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেই। ৯৫ ভাগ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে অনুমোদিত নকশার বাইরে।
জানা গেছে, চলতি বছর প্রায় সাড়ে ৩ হাজার অবৈধ ভবন চিহ্নিত করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এসব ভবনের বিরুদ্ধে অভিযানও পরিচালনা করছে সংস্থাটি। তাছাড়া কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই নগরীর বসিলা, ঢাকা উদ্যান ও কেরানীগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় শত শত ভবন গড়ে উঠেছে।
রাজধানীর মাস্টারপ্ল্যান ড্যাপের তথ্যমতে, ২০০৬ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৯৫ হাজার স্থাপনা গড়ে ওঠে। ওই সময় রাজউক থেকে মাত্র ৪ হাজার ১৪৭টি ভবন নির্মাণের অনুমোদন নেওয়া হয়। সে হিসাবে অনুমোদন ছাড়াই ৯৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে রাজধানীতে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আগে থেকেই সতর্ক করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা।
ঢাকায় ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাব্য ঝুঁকি বাড়ার পেছনে বেশকিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। যার মধ্যে রয়েছে– বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এ শহরে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা বহুতল ভবন, বস্তি এবং সরু রাস্তা। তাছাড়া অনেক ভবনই ভূমিকম্প সুরক্ষা মানদণ্ড মেনে তৈরি হয়নি, যা এগুলোকে মৃত্যুফাঁদে পরিণত করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের মাটির গঠনগত দুর্বলতাও ঝুঁকির একটি বড় কারণ। দেশের বড় অংশই আলগা ও জলাবদ্ধ পলিমাটির ওপর গঠিত। শক্তিশালী কম্পনে এই মাটি তরলীকৃত হয়ে যেতে পারে, যা ভবন ধসের কারণ হতে পারে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতায় থাকা ভবনগুলোর ওপর করা এক জরিপে দেখা গেছে, অধিকাংশ ভবনই ২০ থেকে ৩০ বছর আগে নির্মিত। অনেক জায়গায় রড-সিমেন্টের মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি, আবার কোথাও অনুমোদিত নকশার বাইরে গিয়ে ভবন তৈরি করা হয়েছে। ফলে সামান্য কম্পনেও এসব ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। গত শুক্রবার হওয়া ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে রাজধানীর ১৪টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার মো. সালাহ উদ্দীন-আল-ওয়াদুদ। তার দেওয়া তথ্যমতে, মালিবাগ চৌধুরী পাড়ায় ১টি, আরমানিটোলায় ১টি, সূত্রাপুরের স্বামীবাগে ১টি, বনানীতে ১টি, কলাবাগানে ১টি, বসুন্ধরায় ১টি, নর্দ্দা এলাকায় ১টি, দক্ষিণ বনশ্রীতে ১টি, মোহাম্মদপুরে ১টি, খিলগাঁও এলাকায় ২টি, বাড্ডা এলাকায় ১টি, মগবাজারের মধুবাগে ১টি এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় ১টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, রাজধানীতে গড়ে ওঠা ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনীয় কি না সেটি নির্ণয়ের মতো প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি নেই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)। ঢাকায় অনুমোদনহীন ভবনের সঠিক সংখ্যাও জানা নেই তাদের। খাল-বিল নদী দখল করে কত ভবন হয়েছে সেই সংখ্যাও জানা নেই। ঢাকায় লাখ লাখ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এসব ভবন অপসারণ না করেই নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে ঢাকায় বসবাস করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পরিকল্পনা করে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন করা দরকার। তা না হলে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে দেশে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তাই সব নতুন ভবন নির্মাণে নকশা ও বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড কঠোরভাবে অনুসরণ করা দরকার।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী বলেন, গত শুক্রবারের ভূমিকম্পটা বড় ভূমিকম্প আসার আগে যে ছোট ছোট ভূমিকম্প হয়, তার অন্যতম। রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রায় যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে ৭ মাত্রার হলে ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেড়ে যাবে, ভেঙে যাবে বহু ভবন, প্রচুর হতাহত হবে। ঢাকার ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে এমন ভূমিকম্প হলে ঢাকায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হবে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক ড. আব্দুল লতিফ হেলালী বলেন, ঢাকা ও আশপাশের ভবনগুলো ন্যূনতম মান বজায় না রেখেই তৈরি হয়েছে, হচ্ছে। এ কারণে ভূমিকম্পের ঝুঁকি আরও মারাত্মক। যদিও ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করতে এরই মধ্যে মাটির গুণগতমান পরীক্ষা করে একটি রিস্ক সেনসিটিভ ল্যান্ড ইউজ প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। ভূমিকম্প সহনীয় ব্যবস্থা ও ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরীক্ষার জন্য ‘আরবান সেফটি অ্যান্ড রেজিলেন্স ইনস্টিটিউট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় আছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) সভাপতি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ভূমিকম্প বার্তা দিচ্ছে যে আমাদের এখানে বড় আকারে ভূমিকম্প আসছে। যেটা অনেক দিন ধরে আমরা বলছিলাম। কিন্তু শুক্রবারের ভূমিকম্পে এত বড় ঝাঁকুনির পর এখন ঢাকা শহরের প্রতিটা অধিবাসী অনুভব করতে পারছে বিপদ নিকটে। ভূমিকম্পের মতো বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় ঢাকা শহরে জনসাধারণের আশ্রয় নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপদ ও খোলা জায়গার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে মানুষ যখন হুড়োহুড়ি করে বের হয়ে একটু নিরাপদ বা খোলা জায়গায় আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে, তখন অধিকাংশ এলাকায় সেই খোলা জায়গা খুঁজে পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি, ২০২০), ঢাকা মহানগরীর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮, ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ)সহ একাধিক পরিকল্পনাগত নীতি ও বিধান বিদ্যমান। কিন্তু এসব নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তদারকি দুর্বলতা, রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি ও জবাবদিহির অভাব পরিস্থিতিকে অকার্যকর করে তুলেছে। সম্প্রতি ভবন নির্মাণ অনুমোদন প্রক্রিয়ায় স্থাপত্য নকশা, কাঠামোগত নকশা, অগ্নিনিরাপত্তা, বৈদ্যুতিক ও প্লাম্বিং নকশা বাধ্যতামূলকভাবে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এগুলো অবশ্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে এগুলো কার্যকর ও স্বচ্ছ তদারকি ছাড়া বাস্তবে কোনো কাজে আসবে না। করণীয় নিয়ে এই নগরপরিকল্পনাবিদ বলেন, ভূমিকম্প প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, তবে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। জরুরি ভিত্তিতে কঠোরভাবে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড ও নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ করতে হবে। বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি (বিবিআরএ) গঠন করে দ্রুত বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। নিম্নাঞ্চলে নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। জলাধার, বেসিন এলাকা বা পানি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন স্থান ভরাট করে কোনো সরকারি-বেসরকারি উন্নয়নই অনুমোদন করা যাবে না। পুরোনো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর তালিকা প্রকাশ ও উচ্ছেদের পদক্ষেপ নিতে হবে। রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত সব বিপজ্জনক ভবন দ্রুত খালি করতে হবে।
রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে বিধিবহির্ভূত ৩ হাজার ৩৮২টি ভবন চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমরা রাজউকের সবাইকে প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শুক্রবারের ভূমিকম্পের পর এলাকাভিত্তিক কর্মকর্তাদের মাঠে নামানো হয়েছে। যেসব ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে তা প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 

Related Articles

Back to top button