
এস.এম. নাহিদ:রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় রেলওয়ের জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বৃহৎ পরিসরের অভিযান চালিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রেলওয়ের যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে পরিচালিত দিনব্যাপী এই অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় অসংখ্য স্থাপনা।রেলওয়ের মূল্যবান জমিতে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা প্রায় ৩০০টি কাঁচা সবজি, মাছ, ফলমূল ও নিত্যপণ্যের দোকান ছিল এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য একমাত্র সাশ্রয়ী বাজার। হঠাৎ অভিযান চালিয়ে এগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম ক্ষতির মুখে। চাহিদামত নিত্যপন্য না মেলায় এলাকাবাসীরও দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
খিলক্ষেতে বসবাসকারী বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদ ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা ইতিপূর্বে স্থায়ী বাজার নির্মানের লক্ষ্যে দৃশ্যমান কোন উদ্দ্যেগ গ্রহন করেনি। লক্ষ লক্ষ মানুষের বসবাস এই খিলক্ষেতে অথচ নিত্যপন্যের চাহিদা মেটাতে নেই স্থায়ী কোন কাঁচাবাজার, মাছমাংস কিংবা ফলমূলের বাজার।ফলে এইসবের চাহিদা মেটাতে কর্মজীবী নানা শ্রেণীপেশার মানুষকে নির্ভর করতে হয় রেলওয়ের জায়গায় গড়ে ওঠা বাজারের ওপর।জন-চাহিদার এই সুযোগকে পুঁজি করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এলাকার স্থানীয় কিছু গণ্যমান্য ব্যাক্তি,রাজনীতিবিদ,হাজী সাহেব,ব্যাবসায়ী সহ বহিরাগত কিছু মাদক ব্যাবসায়ী ও ক্যাডাররা রেলওয়ের সরকারি জায়গা ও রাস্তার দুইপাশ দখল করে ছোটছোট দোকান তুলে বাজার বসিয়ে ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে দোকান প্রতি অগ্রিম ২০ হাজার থেকে ১লক্ষ টাকা সহ প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রায় দেড় কোটি টাকা।দৈনন্দিন বাজার ব্যাবস্থায় মুখোশধারী এইসব স্থানীয়দের সরাসরি প্রভাব থাকার ফলে খিলক্ষেতের লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের ভাগ্যে স্থায়ীভাবে নিত্যপন্যের বাজার নির্মিত হয় না।
৫ই আগষ্টের পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে হাজার হাজার বেকার মানুষের আগমন ঘটে এই খিলক্ষেতে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তখন মাঠে না থাকায় রেলওয়ের ফাকা পরিত্যাক্ত জায়গাকে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে যে যেভাবে পেরেছে দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরী করেছে।তাছাড়া ইতিপূর্বে খিলক্ষেতে রেলের জায়গায় দখলবাজির খবর গনমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় রেলওয়ে কর্তৃ্পক্ষ বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে দেয়। ফলে কতিপয় অবৈধ দখলদার ও স্বার্থান্বেষী একটি মহল দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।তাদের দাবি, সুযোগ সন্ধানী এই মহলটি উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছে।স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে এই ষড়যন্ত্রকারীদের একটি অংশ খিলক্ষেত এলাকায় অবস্থান করতে পারে। তারা রেলওয়ের মূল্যবান জমিতে পুনরায় অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলার পাঁয়তারা করছে।
এমতাবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উচিত অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং খিলক্ষেত এলাকায় স্থায়ী কাঁচাবাজার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া, যাতে সাধারণ মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সুষ্ঠুভাবে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে।