রাজনীতি

ঠাকুরগাঁ ২ আসনের ৭ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোহাম্মদ দবিরুল ইসলাম অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা উন্নায়ন

মুহাম্মদ আলী, টাইমস ২৪ ডটনেট, ঠাকুরগাঁ থেকে: ঠাকুরগাঁ ২ আসনের ৭ বারের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য শহীদ পরিবারের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোহাম্মদ দবিরুল ইসলাম এলাকার অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন টাইমস ২৪ ডটনেটের কাছে। সাক্ষাতকারটি ধারণ করেছেন টাইমস ২৪ ডটনেটের বিশেষ প্রতিনিধি মুহাম্মদ আলী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোহাম্মদ দবিরুল ইসলাম বলেছেন, ঠাকুরগাঁ ২ আসনের পথপরিক্রমায় অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবে রূপলাভ করছে তার সুযোগ্য কন্যার হাত ধরেই। অমিত সম্ভাবনার নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে তার যাদুকরী নেতৃত্বের ছোঁয়ায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে এগিয়ে চলেছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার অসাধারণ বিচক্ষণতা, দেশকে ক্রমেই আরও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়, দৃপ্ত সাহসী পদক্ষেপ; সর্বোপরি দেশের জনগণের প্রতি অপরিসীম মায়া ও ভালোবাসা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সক্ষম করেছে তাকে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল, বিচক্ষণ, দক্ষ নেতৃত্বের সাফল্যগাথা এবং বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার উজ্জ্বল চিত্র ফুটে উঠেছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়
২০১৫ সালে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ, ২০১৮ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি মিলেছে। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এমনকি ২০১৫ সালে নিজের পিতার জন্মভূমি কেনিয়া সফরকালে বাংলাদেশকে অনুসরণের পরামর্শ দেন। জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব এন্টিনিও গুটেরাসও একই মন্তব্য করেন।
২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে দেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪ ডলার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ও মাথাপিছু আয়ের সাময়িক হিসাবে এই চিত্র উঠে এসেছে। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি মুদ্রায় মানুষের মাথাপিছু আয় বছরে দাঁড়াচ্ছে গড়ে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ, মাসে গড় আয় প্রায় ১৪ হাজার ৬০০ টাকার মতো। এটা সহজেই অনুমিত যে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। ১৯৯১ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে দুই কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছে। স্বাধীনতার ৪৯ বছরে দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে ৬০ শতাংশেরও বেশি। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরেও জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮ দশমিক ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে খরস্রোতা উত্তাল পদ্মায় আজ বাংলাদেশের গর্ব। প্রমত্তা পদ্মায় ৬ হাজার ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু গড়েছে বাংলাদেশের নতুন এক দিগন্ত। বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা পদ্মার সাথে প্রকৃতির বিরূপ আচরণ এবং নানামুখী সমালোচনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে-বাংলাদেশ উঁচু করে কথা বলতে শিখেছে-এই দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ। এই দেশ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ কাজ ছিল এটি। ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ সেতু এখন বাংলাদেশের বড় সেতু। এই সেতু প্রমাণ করেছে বাঙালি জাতি আর পিছিয়ে নেই। নিজস্ব অর্থায়নে বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষমতা রাখে।
করোনার সার্বিক অভিঘাত মোকাবিলার সক্ষমতা বিবেচনায় বিশ্বে বসবাস উপযোগী নিরাপদ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২০তম। দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দেশ এই তালিকায় বাংলাদেশের ওপরে নেই। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণসহ অর্থনীতিতে করোনার অভিঘাত মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখা দেশগুলোর যে র‌্যাংকিং করেছে, সেখানে এই তথ্য উঠে এসেছে । বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে বিশ্বের ৫৩টি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক মানদণ্ডে মহামারি মোকাবিলার সক্ষমতা নিয়ে ১০টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে এই র‌্যাংকিং করা হয়। এমনকি জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোও রয়েছে এই তালিকায় বাংলাদেশের পেছনে।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্র সীমার বিরোধ নিষ্পত্তি একটি যুগান্তকারী অর্জন। এই অর্জনের ফলে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের টেরিটোরিয়াল সমুদ্র , ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্ন্ত সমুদ্রের তলদেশে অবস্থিত সব ধরণের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা ১৬ কোটি মানুষের দেশ। সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। সেখানে আরও ৭ লাখ মানুষকেও খেতে দিতে পারবো- জাতির জনকের কন্যার এই মন্তব্যই বিরল মানবিকতার প্রমাণ।
ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় আওয়ামী লীগ সরকারের একটি যুগান্তকারী সফলতা। ২০১৫ সালের ২১ জুলাই মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের ছিটমহল বিনিময় চুক্তি কার‌্যকর হয়। ফলে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় থাকা বাংলাদেশ ও ভারতের ১৬২টি ছিটমহলের প্রায় ৫৫ হাজার মানুষের বন্দিত্বের অবসান হয়।
নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকারের রয়েছে বেশ কিছু সফলতা। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনটি ছিল সময়োপযোগী। নারীর ক্ষমতায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ইউএনউইমেন প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন এবং এজেন্ট অব চেঞ্জ এওয়ার্ড পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এছাড়াও ২০১৪ সালে ইউনেস্কোর পিস ট্রি পুরস্কার এবং গ্লোবাল উইমেন লিডারশিপ ২০১৮ পুরস্কারে ভূষিত হন। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ৫০ উন্নিতকরণ, উপজেলা পরিষদে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি, ইউনিয়নে সংরক্ষিত নারী আসন ব্যবস্থাকরণ ছিল যুগান্তকারী সিদ্বান্ত। গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৫ অনুযায়ী রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। নারী উদ্যোক্তা ও ক্ষমতায়নে উৎসাহিতকরণে জয়িতা পুরস্কার তৃণমূলে একধরনের প্রতিযোগিতা তৈরি করেছে। তথ্য আপা প্রকল্পটিও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ন্যাশনাল হেল্পলাইন ১০৯, জয় মোবাইল এপস যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ ছিল দৃশ্যমান। ১১ মে ২০১৮ বাংলাদেশের জন্য ছিল এক ঐতিহাসিক দিন। যুক্তরাস্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস স্টেশন থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ উৎক্ষেপণ। তথ্য প্রযুক্তি ও সফটওয়ার শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন কার্যক্রম এই খাতকে অনেক এগিয়ে নিয়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাইটেক পার্ক, টেকনোলজি পার্ক, ট্রেনিং ইনস্টিটিউট যুবকদের কর্মসংস্থানে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পটি ডিজিটাল বাংলাদেশের বিনির্মাণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের সরকারি দপ্তরের ২৫ হাজারেরও অধিক ওয়েবসাইটকে একই ছাদে নিচে আনার কার্যক্রমটি সত্যিই প্রশংসনীয়। এই জাতীয় তথ্য বাতায়ন ২০১৫ সালে দ্য ওয়ার সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি পুরস্কারে ভূষিত হয়। তথ্য প্রযুক্তির সেবা তৃণমূলে পৌঁছে দেয়া ছিল অভূতপূর্ব। সারা দেশের প্রায় ৪৫৪৭টি ইউনিয়ন, ৩২৫টি পৌরসভা এমনকি প্রতিটি সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড ভিত্তিক ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন ডিজিটাল বাংলাদেশকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। আমি শুধু
ঠাকুরগাঁ ২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে উন্নায়নের কাজে সহযোগিতা করেছি। এলাকার উন্নায়ন করেছি। দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছি। এখনো দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যাতে এইভাবে কাজ করেই মরতে পারি।

Related Articles

Back to top button