শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চলছে, চলবে -অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী

মো: আ: জব্বার, ফুলবাড়িয়া প্রতিনিধি : এমপিওভূক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি অধ্যক্ষ মাও. দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক/কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চলছে, এবং আগামী দিনেও চলবে, ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, যেখানে শিক্ষক নির্যাতন হবে, শিক্ষক হয়রানীর ঘটনা ঘটবে, সেখানেই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
কাতলাসেন কাদেরিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শিক্ষক নেতা মাও. দেলোয়ার হোসেন আজিজী আরও বলেন, বেসরকারী শিক্ষকরা তাদের অধিকার নিয়ে এখন অনেকটাই সোচ্চার ও সচেতন। আগামীতে যারাই ক্ষমতায় আসবে তারা নিশ্চয়ই শিক্ষকদের এখন আর তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবেন না। কারণ আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে সরকার বাহাদুরকে বুঝিয়ে দিয়েছি, যৌক্তিক দাবি কিভাবে আদায় করতে হয়? আমরা চেয়েছিলাম ২০% বাড়ি ভাড়া। তারা ৫% দিতে সম্মত হয়েছিলেন কিন্তু আমরা মানি নাই বরং প্রজ্ঞাপনকে বাতিল করে আবারও প্রজ্ঞাপন নিয়ে শহীদ মিনারে এসেছি এবং শিক্ষকদেরকে সুশৃঙ্খলভাবে শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে দিয়েছি। সরকারের সম্মান রক্ষার্থে আমরা ৫% ছাড় দিয়েছি। ১৫ % দাবি আদায় করে এনেছি।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় পালকী কমিউনিটি সেন্টারে এমপিওভুক্ত শিক্ষা পরিবার আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের অন্যান্য সংগঠন এ আন্দোলন করলে খরচ হতো লক্ষ লক্ষ টাকা আর আমাদের খচর হয়েছে মাত্র ৩০ হাজার টাকা। এ সততা ও স্বচ্ছতার কারণেই শিক্ষক সমাজ জোটের প্রতি আস্থা রেখে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর গড়ে তুলেছেন বলে আমাদের দাবী আদায় সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, কোথাও যদি শিক্ষক নির্যাতন হয়, সেটা উপজেলা, জেলা, অধিদপ্তরে ফাইল আটকিয়ে রাখা হয়, তাহলে সেখানে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা হবে।
তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, মন্ত্রণালয়ে গেলে আমাদের বিভিন্ন অনিয়মের কথা শুনতে হয়। আপনারা প্রতিষ্ঠানে সময়মত উপস্থিত হন না, ঠিকমতো ক্লাসে যান না, গেলেও মনযোগের সাথে পাঠদান করেন না। দয়া করে আপনাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সর্বোচ্চ মেধা ও শ্রম দিয়ে যথাযথভাবে পালন করে, জাতিকে বুঝিয়ে দিবেন শিক্ষকরা দায়িত্বহীন না। তারা দায়িত্বশীল। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আগামীদিনে সকল বৈষম্য দূর করব, ইনশাআল্লাহ।
এরপর তিনি ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ‘জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’ এবং মাদ্রাসা শিক্ষকদের একটি আহ্বায়ক কমিটি (আংশিক) ঘোষণা করেন।
ফুলবাড়িয়া কে. আই. কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাও. মো: তাজাস্মুল ইসলাম খান কে আহ্বায়ক এবং পলাশীহাটা স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক মো: মাসুদুল ইসলাম কে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ‘জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের কমিটি ঘোষণা করেন।
অপরদিকে মাদ্রাসা শিক্ষকদের নিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি (আংশিক) ঘোষণা করেন। এ কমিটিতে আহ্বায়ক হলেন মাও. মো: তাজাস্মুল ইসলাম খান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন ধুরধুরিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. জিয়াউল হক শাহীন।
ফুলবাড়ীয়া কে. আই কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও. ইউনুছ আলীর সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ফুলবাড়ীয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোপাল চন্দ্র সরদার, সংবর্ধনা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক উপাধ্যক্ষ মাও. তাজাম্মুল ইসলাম খান, অধ্যাপক এ.কে.এম শামসুজ্জোহা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়াও অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আব্দুর রউফ আকন্দ, সুপার জি.এম.এম নূরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান, সহকারী শিক্ষক মোছা কালীমুল্লাহ, নাজিম উদ্দিন, তানভীর আহমেদ, শাখাওয়াত হোসেন।
ইংরেজি বক্তব্য প্রদান করেন মো: সাইফুল ইসলাম এবং সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অতিথি বরণ করেন প্রধান শিক্ষক মো: নজরুল ইসলাম স্বাধীন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করেন। পরে সংবর্ধিত অতিথিকে ফুলের তোরা দিয়ে বরণ করে নেয়া হয় এবং অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।



