topআন্তর্জাতিক

কারাগারেই মারা গেলেন পুতিনের প্রতিপক্ষ নাভালনি

টাইমস ২৪ ডটনেট: মারা গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সই নাভালনি। স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। রাশিয়ার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ইয়ামালো-নেনেতের একটি কারাগারের বন্দী ছিলেন নাভালনি। সেই কারাগারেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। নাভালনি জালিয়াতি, চরমপন্থীদের সমর্থন দেওয়াসহ একাধিক মামলায় ২০ বছরেরও বেশি সাজা ভোগ করছিলেন।
রুশ কারা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘নাভালনি হাঁটার পর অসুস্থ বোধ করেন এবং একটু পরই জ্ঞান হারান। দ্রুত চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স দলকে ডাকা হয়। তাঁর জ্ঞান ফিরিয়ে আনা চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। পরে চিকিৎসকেরা তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে।’ মৃত্যুকালে নাভালনির বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৭ বছর। তিনি তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রীর নাম ইউলিয়া, মেয়ের নাম দারিয়া এবং তাঁর ছেলের নাম জাহার। নাভালনি ১৯৭৬ সালে মস্কোর নিকটবর্তী শহর বায়তনে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চশিক্ষা নেন অর্থনীতি ও আইন বিষয়ে। তিনি সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন ২০০৮ সালে এবং ২০১১ সালে দুর্নীতি বিরোধী মঞ্চ এফবিকে গঠন করেন তিনি। তাঁর রাজনৈতিক স্লোগান ছিল, ‘আগামীর বিস্ময় রাশিয়া’।
রাজনৈতিক জীবনে নাভালনি পুতিনের কট্টর বিরোধী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বিশেষ করে রাশিয়ার দুর্নীতি ও শাসন ব্যবস্থার কড়া সমালোচক ছিলেন তিনি। রাশিয়ায় তিনি বিগত কয়েক যুগ ধরেই বিদ্যমান সরকার ও শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন। দেশজুড়ে এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় আন্দোলন চালিয়েছেন।নাভালনি ২০১৭ সালে রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভের বিলাসবহুল জীবনযাপনের বিষয়টি উন্মোচিত করেন। এমনকি বিষয়টি নিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনও গড়ে তোলেন তিনি। পরে ২০১৮ সালে নাভালনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করেন কিন্তু তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করা হয় ২০১৪ সালের একটি অভিযোগ সামনে এনে। এর পর, ২০২০ সালের আগস্টে একটি সফরে নাভালনির খাবারের বিষ মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সে সময় তাঁর খাবারে সামরিক নার্ভ এজেন্ট মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে নাভালনি অভিযোগ করেন, এই বিষয়টির সঙ্গে পুতিন জড়িত। তবে ক্রেমলিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে। রাশিয়ার এই নেতাকে ২০২১ সালের শুরুর দিকেই গ্রেপ্তার করা হয় ২০১৪ সালে দায়ের করা একটি অর্থ আত্মসাৎ মামলায়। দ্রুতই বিচারের মাধ্যমে তাঁকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে আদালত অবমাননার অভিযোগে তাঁকে আরও ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০২১ সালের আগস্টে চরমপন্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নাভালনিকে আরও ১৯ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

Related Articles

Back to top button