সারাদেশ

৭১ এর খুনী, বঙ্গবন্ধুর খুনী, তাহেরের খুনী পাকিস্তানপন্থীদের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি মোকাবেলা করেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে: ইনু

মাহমুদ হোসেন মনির, টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: মহান মুক্তিযুদ্ধের ১১ নং সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল আবু তাহেরের ৪৭ত শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে জাসদের উদ্যোগে বিকাল ৪ টায় রাজধানীর শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, জাসদের কার্যকরী সভাপতি এড. রবিউল আলম, জাসদের সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর জাসদের যুগ্ম সমন্বয়ক নুরুল আখতার, জাসদের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, ফজলুর রহমান বাবুল, বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম, নইমুল হক চৌধুরী টুটুল, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান মুক্তাদির, শওকত রায়হান, রোকনুজ্জামান রোকন, নইমুল আহসান জুয়েল, মোঃ মোহসীন, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইফুজ্জামান বাদশা, ঢাকা মহানগর পশ্চিম জাসদের সভাপতি মোঃ নুরুন্নবী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাসদের সাধারণ সম্পাদক এড. মুহিবুর রহমান মিহির, জাতীয় কৃষক জোটের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুল আমিন কাউছার, জাতীয় আইনজীবী পরিষদ নেত্রী এড. নিলঞ্জনা রিফাত সুরভী, জাতীয় যুব জোটের সহ-সভাপতি আমিনুল আজিম বনী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ) কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাশিদুল হক ননী প্রমূখ। সভা পরিচালনা করেন জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু।

সভাপতির ভাষণে হাসানুল হক ইনু এমপি শহীদ কর্নেল তাহের বীরউত্তমের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তিনি ছিলেন একজন মহান দেশপ্রেমিক ও বিপ্লবী। কর্নেল তাহের চেয়েছিলেন ঔপনিবেশিক আমলের রাষ্ট্র-প্রশাসন-আইন-কানুন এবং পূঁজিবাদী ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী দেশী-বিদেশী শক্তি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশকে পাকিস্তানী ধারায় ঠেলে দেয়। শহীদ কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাধারণ সিপাহীরা বঙ্গবন্ধুর খুনী ও উচ্চাভিলাষী সামরিক অফিসারদের ক্ষমতা দখলের রাজনীতি ক্যু-পাল্টা ক্যুর বিরুদ্ধে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহী বিদ্রোহ সংগঠিত করেছিল। তিনি বলেন, যে দেশী-বিদেশী চক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল তারাই জিয়ার নেতৃত্বে সিপাহী বিদ্রোহকে নস্যাৎ করতে শহীদ কর্নেল তাহের, বিদ্রোহী মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী এবং জাসদের উপর মরন কামড় হানে। জিয়া তার প্রাণ রক্ষাকারী কর্নেল তাহেরের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে সাজানো মিথ্যা মামলায় প্রহসণমূলক বিচারে কর্নেল তাহেরকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে হত্যা করে, জাসদ নেতাদের দীর্ঘ মেয়াদী কারাদন্ডে দন্ডিত করে। তিনি বলেন, কর্নেল তাহের একজন মহান দেশপ্রেমিক বিপ্লবী, মহানায়ক আর জিয়া একজন বিশ্বাসঘাতক খলনায়ক। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, তাহেরকে হত্যা করেছিল, জাসদকে নির্মূল করতে চেয়েছিল-তারা এখনো পাকিস্তানপন্থার রাজনীতিরই ধারক-বাহক। এরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আদি শত্রু। এরা দেশে সাংবিধানিক ধারা বানচাল করে নির্বাচনী ব্যবস্থার বিরোধীতা করে অসাংবিধানিক-অস্বাভাবিক সরকার এনে ঘোলা জলে পাকিস্তানপন্থার রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। জনাব ইনু বলেন, ৭১ এর খুনী, বঙ্গবন্ধুর খুনী, তাহেরের খুনী বাংলাদেশের আদি শত্রু পাকিস্তানপন্থার রাজনীতির ধারক-বাহক বিএনপি-জামাত ও তাদের রাজনৈতিক সঙ্গীদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের রাজনীতি মোকাবেলা করে সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বাংলাদেশের পথে রাখা এবং শোষন-বৈষম্য-দুর্নীতির অবসান করে সুশাসন ও সমাজতন্ত্রের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংগ্রামের মধ্যেই কর্নেল তাহেরের স্বপ্ন ও আদর্শ বেঁচে থাকবে।

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি তার ভাষণে বলেন, দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দেয়ার ষড়যন্ত্রের রাজনীতি মোকাবেলার সংগ্রামের সমান্তরালেই শ্রমিক-নারী-সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম পরিচালনা করতে হবে। তিনি বলেন, সমাজ বদলের সংগ্রামে শহীদ কর্নেল তাহের চিরদিন প্রেরণার উৎস হিসাবে থাকবে।

Related Articles

Back to top button