
টাইমস ২৪ ডটনেট :হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিক্ষক্ষ ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ২০১০ সাল পর্যন্ত যথাযথ ব্যবসা করে নিয়মিত গ্রাহক সেবা দিয়ে আসছিলো। ২০১০ সালের পর এই কোম্পানি অবনতির দিকে গিয়েছিল, ষসেসময়ে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হতে থাকে কোম্পানিটি।
আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা দেখা দেয় যেমন, claims পরিশোধ করতে না পারা অথবা নতুন পলিসি বিক্রি কমে যাওয়া। কোম্পানির উচ্চ পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা ও ভুল সিদ্ধান্ত কোম্পানির অবনতির কারণ বলে মনে করা হয়। কর্মকর্তাদের দ্বারা অর্থ আত্মসাৎ এবং জালিয়াতির ঘটনা ঘটলে আর্থিক সংকট সৃষ্টি হয়, কোম্পানিটি লোকসানের কারণে মুখ থুবড়ে পড়ে।
আর্থিক অনিয়ম ও তহবিল তছরুপের অভিযোগ ওঠে শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে, গ্রাহকের প্রায় ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাৎের অভিযোগ উঠে। এই অভিযোগে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশনও দায়ের করা হয়েছিল।
অভিযোগ রয়েছে যে, বোর্ড মিটিংয়ের ভুয়া নথি, জমি কেনার কাগজপত্র এবং কমিশনসহ অন্যান্য ব্যয়ের ভুয়া ভাউচার তৈরি করে তহবিল তছরুপ করা হয়েছে।
কোম্পানির নামে অস্তিত্বহীন জমি কেনা এবং অন্যান্য খাতে ভুল বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থ সরানোর অভিযোগ রয়েছে। দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদে স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতির কারণে অপচয় ও ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আয়ের তুলনায় ব্যবস্থাপনা খরচ অনেক বেশি ছিল, যা লোকসানের একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষায় সঠিক নীতি নির্ধারণের অভাব ছিল, যার ফলে বীমা দাবির পরিশোধে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাহকদের অর্থ বিভিন্ন অলাভজনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা কোম্পানির আর্থিক অবস্থাকে দুর্বল করে দিয়েছিল।
অনিয়ম ও ভুল বিনিয়োগের কারণে কোম্পানির তারল্য সংকট দেখা দেয়, ফলে মেয়াদপূর্তি হওয়া সত্ত্বেও গ্রাহকদের বীমা দাবি পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। গ্রাহকের বীমা দাবি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে কোম্পানির প্রতি আস্থা কমে যায়, যার ফলে নতুন বীমা বিক্রি কমে যায় এবং আয় হ্রাস পায়। সময়মতো পদক্ষেপের অভাব ছিল বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (IDRA)’র আইআরডিএ’র সময়মতো কোম্পানির আর্থিক অনিয়মগুলো চিহ্নিত করতে এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এসব কারণ সম্মিলিতভাবে ২০১০ সালের পর থেকে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে লোকসানের দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং বর্তমানে কোম্পানিটি একটি কঠিন আর্থিক পরিস্থিতির সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (IDRA) কোম্পানিটির সংকট নিরসনে এবং পূর্বেকার অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পরিচালনা পর্ষদের পরিবর্তন করেছে।
নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত এমডি শাহাদাৎ হোসেন, ডিএমডি জাকির হোসেন সরকার, এএমডি আমিম উল্লাহ, এএমডি ফয়সাল আহমেদ মজুমদারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নতুন পর্ষদ হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পুরানো ইমেজ ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা শুরু করেছে। ডিএমডি হেড অব মার্কেটিং জাকির হোসেন সরকারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে মাঠ পর্যায় থেকে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে কোম্পানিটি।
কোম্পানীর সংগঠন সম্প্রসারণ ও ব্যবসায়ীক লক্ষমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কুটি চৌমুহনী, বি-বাড়িয়া ও ফেনী এরিয়ার, সকল সংগঠন প্রধান, উন্নয়ন কর্মকর্তা, সকল সার্ভিসিং সেন্টার ইনচার্জ এবং ডেপুটি ইনচার্জ দের নিয়ে সংগঠন সম্প্রসারণ ও ব্যবসায়ীক লক্ষমাত্রা অর্জনের কাজ করবে। ২০১০ সালের পূর্বপর্যন্ত কোম্পানির লাভ জনক অবস্থায় আবারও ফিরিয়ে আনতে জাকির হোসেন সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছি, তিনি পুরানো উন্নয়ন কর্মকর্তাদের নিয়ে সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাফল্য অর্জন করবো।
এই লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার ৯ মে চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ডিএমডি হেড অব মার্কেটিং জাকির হোসেন সরকারের হাতে গাড়ির চাবি তুলে দেন।