মতামত

নারীর মুক্তি, নারী সমস্যার প্রকৃত উপশম, পুরুষ জাতির কেউ চাই না

সৈয়দা রাশিদা বারী: ৮বছরের শিশু আছিয়ার নির্মমভাবে ধর্ষণ করা ঐ দুর্ধ্বস্ত ৩জনকেই শুধু দোষাবো না। নির্দ্বিধায় দোষ দেবো পুরুষ জাতির!!! আমি এই জীবনে অনেক দেখলাম। সবাই শুধু তাল দেয়, নিজের পজিশন ধরে রাখতে। দুর্ধর্ষদের থেকে আক্রমণ মুক্ত থাকতে। নারী ঘটিত বিষয় নিয়ে কথা বলে হাইলাইট হতে চাই, আলোচনায় অংশ নিয়ে গলা উঁচু করতে চাই কিন্তু সমাধান চায়না! নারীর মুক্তি ও নারীর সমস্যার উপশম চায়না। যার যার মত সবাই মনে করে, আমি তো ভালোই আছি! আমি তো ঠিকই আছি! আমার তো সমস্যা নাই?! আপাতত সমস্যা নাই অথবা আমার কন্যার, আমার বোনের অবস্থান ভালোই তো আছে! এই যে যার যার স্বার্থের দিকে, সেই সেই অটুট! এটাই হয়েছে নারীর আত্মমর্যাদা সম্মান এবং পজিশনের ক্ষেত্রে মহামারী!!! যার ফলে শুধু এই আছিয়াই নয়। আছিয়ার পরে আছিয়া, যুগে যুগে কালে কালে, লক্ষ লক্ষ এসেছে। তবু এই ন্যাংটা ঘৃণ্য এবং মারাত্মক অন্যায়টা এত মজবুতভাবে টিকে আছে!!! হ্যাঁ ঠিকই আছে যুগে যুগে কালে কালে!!! আবার যদি নিঃস্বার্থ পরায়ণ কোন ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর আসতো! বা তার মত আরো কয়েকজন ছিলো, তারা আসতো! তাহলে এই অন্যায়টারও কুপোকাত ঘটতো। নিশ্চিহ্ন হত। অমন কেউ আসুক এখন সেটাই প্রত্যাশা! মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে, সেই কালে নারীকে সম্মান করেছেন এবং নারী শিশুর জ্যান্ত কবর, মাটি চাপা দিয়ে পুঁতে দেওয়া আইন নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি নিজেই কিছু নারীর বিয়ে করে, নারীর নিরাপত্তার সিকিউরিটি দিয়েছেন। অভিভাবক হয়েছেন। মানুষকে দেখিয়েছেন, নারীর সম্মান এবং গৃহে নারী কতখানি জরুরী প্রয়োজনের। ইত্যাদি। মূর্খ গবেট লুচ্চা চরিত্রহীন মানুষ তো গবেষণা করে কিছু দেখবে না! বুঝবেও না পরিবেশ পরিস্থিতি সময়ের পরিবর্তন নানান সময় নানান রকম হয় আর সেটা মোকাবেলা করতে সমসাময়িক পদক্ষেপ জরুরী হয়ে দাঁড়ায়। তাই তার দোষ ধরে যে তিনি, এতগুলো বিয়ে করেছেন এই এই বয়সের ইত্যাদি!! যার পরিপ্রেক্ষিতে পুরুষ জাতি একাধিক বিয়ে করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে থাকে। বিয়ে না করতে পারলে পর নারী ভুকি হয়। তবুও তার ওইটা চাই একাধিক নারীতে অবৈধভাবে হলেও। এই যে তিনজন ধর্ষণ করেছে আছিয়াকে? প্রত্যেকের কিন্তু স্ত্রী রয়েছে! আছিয়া অপ্রাপ্ত বয়সের তাই ধরা খেললো! তা না হলে ধরা খেতো না। বিষয়টা প্রকাশ না হয়েই বিলুপ্ত হয়ে যেতো। কেউ জানতো না। ঐ তিনজনের স্ত্রীও তার হাসবেন্ডকে ধোয়া তুলসী পাতা মনে করে গা মাথা ডলে দিয়ে, সেবা যত্ন করতো। এ সব নিয়ে আমার কিছু বলার নাই কারণ এই সমাজের মানুষ, যতই শিক্ষিত হোক, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বুঝার মতন জ্ঞানী গুণী শিক্ষিত এখনো হয় নাই কেউ?। তার জীবন বিধান এটা এখনকার অন্য কারো সাথে মিলানো প্রযোজ্য নয়। তাই একাধিক বিয়ে করাকে ঘিরে- তাকে অনুসরণ অনুকরণ তার ওছিলায় বা আল্লাহর নির্দেশ কোরআন হাদীসের দোহায় দিয়ে, ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করলেই তো হয় না? ধর্ম বোঝা এবং ধর্ম পালন করা ঠেলা আছে। দারি টুপি জুব্বা গায়ে, মানুষ দেখানো নামাজ পড়লেই ধর্ম হয় না। ধর্মের ব্যাখ্যা আল্লাহ প্রদত্ত ঐশ্বরিক আধ্যাত্মিক জ্ঞানের বিষয়। রবীন্দ্রনাথের কালেও কবি অনেক ছিলো কিন্তু একবাক্স গ্রন্থের লেখক রবীন্দ্রনাথ একজনই হয়েছেন। আল্লাহ, নবী, ইসলাম ধর্মকে চিনতে জানতে বুঝতে এখনকার যুগ অনুসারে মানুষ বেশি তাই কোটি কোটি হুজুরের ভিতরে একজন হওয়াই স্বাভাবিক। না হওয়াও স্বাভাবিক। আমার এসব বলার দরকার নাই, আমি ইসলামিক চিন্তাবিদ কিন্তু এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত নিজের জন্য। এটার উপরে আমি ব্যবসা করি না যে, এটাকে জাহিরি করতে হবে। ব্যবসায়িক হলে জাহিরি লাগতো প্রভাব বাড়ানোর জন্য। কবিতা তো অনেকেই লিখেছিল, কবর কবিতা লেখা পল্লীকবি জসীম উদ্দীন কি সবাই হয়েছিল? কত নারী খেকি, নারী ভোগী পুরুষ ঠাসাঠাসি ছিল, তার মধ্যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরও একজনই হয়ে এসেছিলেন। এই মুহূর্তে নিঃস্বার্থ নিঃশর্তে নারীর জীবন মান উন্নয়নের জন্য, আবার যদি কোন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আবির্ভূত হতো?! পরবর্তী নারী জেনারেশনের কথা ভাবে, তিনিই একটা উত্তম মাধ্যম আইন চরিত্রহীন লুচ্চাদের উপরে ধার্য বা গৃহীত করতেন। তাহলে সেটা নারীদের পক্ষে শতভাগ কার্যকরী হতো। নারীদের হাউ মাউ খাও নৃশংস অত্যাচারী স্বার্থলোভী সুবিধাবাদী পুরুষদের কানে ঢুকে না! কারণ তাদের শতভাগ সুযোগ সুবিধা তারা নষ্ট করবে না! মায়াময়ী নিরীহ নারী পেয়ে, যা একবার অত্যাচারী ব্যভিচারী পুরুষরা মগজে ঢুকিয়ে নিয়েছে! তা কি আর সহজে হাতছাড়া করবে? ওদের চাবুক মেরে, নারীর উপর চাপিয়ে দেওয়া ওই শৃঙ্খলা ভাঙতে হবে। তাছাড়া ভালই ভালই ওরা হটিবে না। নৃশংস অন্যায় করে নেওয়া একতরফা সুবিধাগুলো ছাড়বেনা। বঞ্চিত হওয়ার জালা, ওদের নিজের ঘাড়ে না পড়লে, বুঝবে না। তাই হাইকোর্ট দেখিয়ে বড় বড় কথাই বলবে, কাজ উদ্ধার করবে না। পুরুষদের সুবিধা আছে বলেই তো, হাইকোর্ট মানে। সেই হাইকোর্টের নাম অন্য কিছু না ইসলামিক আইন, কোরআন হাদীস ইসকন পুরুষ শাসিত সমাজের পুরুষতান্ত্রিকতা ইত্যাদি ! যুগের পর যুগ, কালের পর কাল, শতাব্দীর পর শতাব্দী, এই অন্যায় ব্যাভিচারীটা নারী জাতির উপর করা হয়। যেখানে পুরুষ হায়ানার দৃষ্টি এড়াতে নিষ্পাপ নারী শিশু পর্যন্তও পারেনা! নাবালিকা শিশুও নির্মম তাণ্ডবতা থেকে ক্ষমা বা ছাড় পায় না!! নচ্ছার পুরুষ হায়ানাদের জব্দ করতে পারে সেই মানুষ সেই পুরুষ পূর্বেও ছিলো না, ২০২৫ শতাব্দী নাগাত আজও নাই। মহান আল্লাহ পাকই ভালো জানেন নারী সমস্যার প্রকৃত সুষ্ঠ সমাধান। উপসম মুক্তি দুনিয়ায় কবে মিলবে? যা পুরুষ জাতির কেউ চাই না! স্বার্থের ঠুকাঠুকির আজকের দিনে সেই দায়িত্ব কেউ নেয় না।

 

Related Articles

Back to top button