
টাইমস ২৪ ডটনেট: ফিলিস্তিনি ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন (হামাস)-এর একজন নেতা বলেছেন, “দখলদার ইসরাইল কঠোর অবরোধ এবং ফিলিস্তিনিদেরকে অনাহারের রাখার মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখে ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে কোনো সুবিধা আদায় করতে পারে না।” তিনি আরো বলেছেন, “প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অস্ত্রশস্ত্র আলোচনার বিষয় নয় এবং এ নিয়ে দরকষাকষিও করা যায় না বরং ইসরাইলি বন্দীদেরকে কেবল একটি চুক্তির মাধ্যমে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে।”যুদ্ধ বন্ধের কোনও নিশ্চয়তা ছাড়াই হামাসকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করার এবং বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে ইসরাইল যখন গাজা উপত্যকার বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নতুন করে অপরাধমূলক কাজ করছে, সমস্ত ক্রসিং পয়েন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে এবং এ অঞ্চলে সাহায্য প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, তখন হামাস নেতা সামি আবু জুহরি ঘোষণা করেছেন যে ইসরাইলের এসব কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ। পার্সটুডে জানিয়েছে, মঙ্গলবার আবু জুহরি জোর দিয়ে বলেছেন, “প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অস্ত্র আমাদের জন্য রেড লাইন এবং এ নিয়ে আমরা কোনো আপোশ করবো না।”
এই প্রসঙ্গে, ইসরাইলি ‘চ্যানেল-১২’ টেলিভিশন মঙ্গলবার জানিয়েছে যে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে হামাসের সাথে বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে চুক্তি না হলে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় পুনরায় হামলা শুরু করবে।ইহুদিবাদী ইসরাইলের হুমকির একইসাথে, ফিলিস্তিনি ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন (হামাস) এর মুখপাত্র হাজেম কাসেম মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন যে, একটি জাতীয় চুক্তির মাধ্যমে গাজার ভবিষ্যতের ব্যাপারে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এবং হামাস কোনও বিদেশী শক্তিকে গাজার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে দেবে না। এই বিবৃতিটি এমন এক পরিস্থিতিতে জারি করা হয়েছে যেখানে গতকাল, মঙ্গলবার মিশরে “ফিলিস্তিন শীর্ষ সম্মেলন” নামে আরব রাষ্ট্রপ্রধানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সম্মেলনে আরব রাষ্ট্রপ্রধানরা ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির বিরোধিতা করার পাশাপাশি গাজা উপত্যকার পুনর্গঠনের প্রতি তাদের সমর্থন এবং গাজা ও পশ্চিম তীরকে ঐক্যবদ্ধ সার্বভৌমত্বের অধীনে রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
এই প্রেক্ষাপটে, ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ আন্দোলন কায়রোতে আরব রাষ্ট্রপ্রধানদের গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ সম্মেলনের চূড়ান্ত বিবৃতির বিষয়বস্তুকে ইতিবাচক বলে মনে করেছে, কিন্তু একই সাথে জোর দিয়ে বলেছে যে এই সিদ্ধান্তগুলো ফিলিস্তিনি জনগণ এবং আরব দেশগুলোর উপর ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে চ্যালেঞ্জগুলো চাপিয়ে দিয়েছে তা মোকাবেলায় কার্যকর নয়।
গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও বেশ কয়েকজন শহীদের মৃতদেহ উদ্ধারের পর, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সাল থেকে এই অঞ্চলের বিরুদ্ধে দখলদার শাসকগোষ্ঠীর আগ্রাসনে শহীদের সংখ্যা বেড়ে ৪৮,৪০৫ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ধ্বংসস্তূপ থেকে ৭ জন শহীদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং গাজায় দখলদার বাহিনীর আগ্রাসনের সময় আহত একজন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। এছাড়াও, একই সময়ে ১১ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাবলীর ঠিক একই সময়ে, একজন ফিলিস্তিনি পশ্চিমতীরের উত্তরে ইসরাইলের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা করে, যেখানেই ইসরাইলি সৈন্যরা তাকে শহীদ করে। হামাস এই শাহাদাত পিয়াসি অভিযানের প্রশংসা করে বলেছে যে বিপ্লবী ফিলিস্তিনি তরুণদের হৃদয়ে প্রতিরোধের চেতনা জীবন্ত।
সূত্র: পার্সটুডে।