বাংলাদেশ

কু-চক্রের ছত্রছায়ায় খাদ্য অধিদপ্তর

ওএমএস’র গম বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে পুরোন সিন্ডিকেট

টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: গত ২৯ অক্টোবর ২০২৪ ইং তারিখে ওএমএস কার্যক্রমে আটা প্রদানে নিমিত্তে খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান নভেম্বর ২০২৪ মাসের ওএমএস খাতের চাল ও আটার বিক্রির অনুমোদন প্রদান করেন এবং এতে শর্ত প্রদান করেন যে বেসরকারী ময়দার মিলে গম বরাদ্দের ক্ষেত্রে বেসরকারী ময়দার মিলে সরকারী গম বরাদ্দ নীতিমালা ২০২২(সংশোধিত) অনুসরণ করতে।
এখানেই ঘটে বিপত্তি কারন ২০২২ এ নীতিমালা প্রণয়ন হয় ঠিকই কিন্তু আর প্রয়োগ করতে দেয়া হয়নি। ২০২২ সালের (সংশোধিত) নীতিমালায় বলা ছিল ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলাসহ সকল শ্রমিক ঘন জেলায় পর্যাপ্ত মিল থাকলে ঐ জেলার মিলমালিকদের গম বরাদ্দ দিতে হবে। এ নীতিমালার তোয়াক্কা কখনই করে নি ঢাকা মহানগর ও ঢাকাসহ সকল জেলা খাদ্য পরিদর্শকেরা।
একটি কূ-চক্রমহল (যারা নারায়নগঞ্জ জেলার শামীম ওসমানের লোক) তারা সাবেক খাদ্য সচিবকে বিপুল অর্থ প্রদান করে নীতিমালা তোয়াক্কা না করে একটি পরিপত্রের মাধ্যমে নারায়নগঞ্জ জেলার মিল গুলোকে গম বরাদ্দ দিয়ে আসছে। এর মূল হোতা মো. সোহাগ ও নারায়নগঞ্জের সরকারী ৫০০ কোটি টাকার গম আত্নসাৎকারী জসিম।
সূত্র জানায়, এ চক্রটি সারা বাংলাদেশের মোট গম বরাদ্দের শতকরা ৭০ গম বরাদ্দ নীতিমালার বহির্ভূত নারায়নগঞ্জের মিলের মাধ্যমে নিয়ে যেতেন। অথচ ভুয়া কাগজ পত্রে মিলের মালিক সেঝে এ গম বরাদ্দ গ্রহন করে। সরকারী উন্নতমানের গম কালোবাজারে বিক্রি করে নিম্নমানের গো খাদ্যের গম দিয়ে আটা তৈরি করে ঢাকা মহানগরসহ অন্যান্য শ্রমিক ঘন জেলায় সরবরাহ করতেন। সাবেক সচিব ছিলেন তাদের কেনা গোলাম, শুধু তাই নয় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক থেকে শুরু করে সকল পরিচালক (বিশেষ করে সরবরাহ,বন্টন ও বিপনন বিভাগের)তার স্বপালিত।সাবেক সচিবের দুর্নীতির জন্য সরকার অব্যাহিত প্রদান করা হয়।
নতুন সচিব যোগদানের পর যখন বুঝতে পারেন উল্লেখিত জেলায় নীতিমালা অনুসরণ না করে গম বরাদ্দ দেওয়া হয় । বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করেন। খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব মোঃ মাসুদুল হাসান নভেম্বর ২০২৪ মাসের ওএমএস খাতের চাল ও আটার বিক্রির অনুমোদন প্রদান করেন। এ নীতি অনুসরণ করলে সাধারণের উপকার হবে এবং তারা নিয়মিত নির্ধারিত মূল্যে চাল ও আটা পেতে কোন বাধা থাকতো না।কিন্তু এতে ঐ চক্রের বিপুল ক্ষতি হবে বুঝতে পেরে খাদ্যের সকল পরিচালক নীতিমালার পক্ষে কাজ শুরু করে ।
সূত্রটি জানান, চক্রটি পরামর্শ করেন যে আমরা এ নীতিমালা অনুসরণ করে এখন গম বরাদ্দ দিব না।আমরা বরাদ্দ প্রদান না করে ওএমএস খাতে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি করব, এতে সরকার ও সচিব দুজনই বেকায়দায় পরবে। তারপর বাধ্য হয়ে নীতিমালার পুন পরিবর্তন করে নারায়নগঞ্জের মিলকেই বরাদ্দ প্রদান করবেন।এ কাজ করার মূল কারন সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে খাদ্য অধিদপ্তরে আওয়ামী ফ্যাসীস সরকারের কার্য হাসিল করা। ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলায় প্রয়োজনের তুলনায় ২ গুন পোষন ক্ষমতার মিল রয়েছে।
এ চক্রের মূল হোতা সোহাগ ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষের শক্তি ছিল। তিনি শামীম ওসমানের ইশারায় ছাত্রদের আন্দোলন চলার সময় থানায় জিডিও করেন এবং মানুষকে এ বলেন আমরা টাকা বিলিয়ে হলেও সরকার কে টিকিয়ে রাখব। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এখন অদৃশ্য শক্তির সহযোগীতায় সচিবের নীতিমালা না মেনে উল্লেখিত জেলায় গম বরাদ্দে বাধা দিয়ে বাজার ব্যবস্থা অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে।
জেলার মিল মালিকেরা ৫ আগষ্টের পর আশা করেছিল ন্যায় বিচার পাবে কিন্তু ঐ চক্রের ক্ষমতার কাছে তারা অসহায়। তাদের ভয়ে খাদ্য ভবনে ঢোকার সাহস ও পাচ্ছে না। খাদ্য মন্ত্রনালয়ের নতুন নীতির বিরুদ্ধে কোন কিছু করতে না পেরে ঢাকা মহানগর ও জেলার বরাদ্দকৃত গম আটকে রাখছে। এতে সাহায্য করছে সরবরাহ,বন্টন ও বিপনন বিভাগের পরিচালক,ঢাকা রেশনিং এর প্রদান ও ঢাকা জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক। এসকল অনিয়ম ও অনাচারের হাত থেকে প্রতিকার পেতে মিল মালিকগন গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা বরাবর স্বারক লিপি প্রদান করেছেন। এছাড়াও খাদ্য অধিদপ্তরের ঠিকাদার, মিলমালিকগন দুদকেও অভিযোগ প্রদান করেছেন।

Related Articles

Back to top button