টাইমস ২৪ ডটনেট, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের উত্তর অংশে পুনরায় বসতি গড়তে চায় ইসরাইল। আলজাজিরার সোমবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ লক্ষ্যে রোববার রাতে জেরুজালেমে একটি সম্মেলনে জড়ো হয়েছেন ইসরাইলের বসতি স্থাপনকারী সম্প্রদায়ের শত শত সদস্য। ‘সেটেলমেন্ট ব্রিংস সিকিউরিটি’ শিরোনামের এই সম্মেলনটি করে দেশটির ডানপন্থি নাহালা সংগঠন।
তবে ইসরাইলের চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, জননিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচসহ দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির ১২ জন মন্ত্রী এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। ৩৮ বছরের দখলের পর ২০০৫ সালে ইসরাইল গাজা থেকে তার সামরিক বাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। সে সময় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, গাজায় ইসরাইল স্থায়ী উপস্থিতি বজায় রাখতে চায় না। তবে একটি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অঞ্চলটিতে নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা হবে।
ডানপন্থিদের রোববারের সম্মেলনে স্মোট্রিচ বলেন, গাজা থেকে ইসরাইলের বসতি থেকে সরিয়ে নেওয়ার পর অনেক শিশু যুদ্ধে হামাসের সৈনিক হিসাবে ফিরে এসেছে। এর আগেও গাজা থেকে বসতি সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় প্রতিনিয়ত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। সোমবার পর্যন্ত অঞ্চলটিতে ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা ২৬ হাজার ৪২২-এ দাঁড়িয়েছে। আর আহত হয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৭ জন। রোববার গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠকটিতে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের প্রতিনিধিরা। ইসরাইলের প্রতিনিধিও এদিনের বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ইসরাইলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে সেখানে। তবে বেশ কিছু বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলেও এখনো আলোচনায় অনেক ফাঁক থেকে গেছে। আলোচনায় অগ্রগতি হলেও অনেক ফাঁক আছে বলে নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকেও জানানো হয়েছে।
সূত্রের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান নিজে উপস্থিত ছিলেন। কিভাবে গাজায় সংঘর্ষ-বিরতি করা যায় তা নিয়ে সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। বৈঠক চলাকালীন কোনো কোনো সংবাদ সংস্থা জানায়, আলোচনা ফলপ্রসূ হচ্ছে। একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে সবপক্ষ। আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি এবং চলতি সপ্তাহে আবার বৈঠক হবে বলেও জানানো হয়েছে। বৈঠকটিতে সংঘর্ষ এবং যুদ্ধবিরতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
একই দিনে গাজায় সাহায্য নিয়ে একটি ট্রাক প্রবেশের সময় তা আটকে দেয় ইসরাইলের বিক্ষোভকারীরা। জিম্মি মুক্তির দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে ট্রাকটি আটকে দেয় তারা। অন্তত ১০০ বিক্ষোভকারী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ইসরাইলের সেনারা যদিও জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের সীমান্তে অবস্থিত ওই এলাকাটি সেনা-এলাকা বলে চিহ্নিত হয়েছে। সাধারণ মানুষের সেখানে প্রবেশ নিষেধ। তারপরও কয়েকশ মানুষ সেখানে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।