আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের স্থল বাহিনী রোববার রাতে গাজা উপত্যকায় সীমিত পরিসরে অভিযান চালিয়েছে। সামরিক বাহিনী গাজার এমন কিছু জায়গায় বিমান হামলা চালিয়েছে, যেখানে হামাসের সদস্যরা ইসরায়েলে বিস্তৃত পরিসরে হামলা চালানোর জন্য জড়ো হয়েছিলেন। সোমবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজায় রাতারাতি সীমিত পরিসরে স্থল অভিযান চালানোর দাবি করেছে। তবে এটা পূর্ণমাত্রার স্থল হামলার শুরু নয়। সীমিত পরিসরে অভিযানের সময় গাজায় ইসরায়েলি এক সৈন্য নিহত ও আরও তিনজন আহত হয়েছেন।
এদিকে, গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীনগোষ্ঠী হামাস বলছে, তাদের যোদ্ধারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলে সাঁজোয়া যান নিয়ে অনুপ্রবেশকারী ইসরায়েলি একদল সৈন্যের সঙ্গে লড়াই করেছেন। এ সময় ইসরায়েলি কিছু সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস করেছেন তারা। তবে সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংসের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। সোমবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, ৭ অক্টোবর আন্তঃসীমান্ত হামলার সময় হামাস ২২২ জনকে জিম্মি করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।তিনি বলেন, ‘রাতের সীমিত অভিযানের সময় ট্যাংক এবং পদাতিক বাহিনীর সদস্যরা অংশ নিয়েছে। যারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরবর্তী পর্যায়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তাদের স্কোয়াডকে হত্যার করার জন্য এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় তিনি তিনি গাজার ‘গভীরে’ ইসরায়েলি সৈন্যদের ঢুকে পড়ার বর্ণনাও দিয়েছেন।
হ্যাগারি বলেন, আমরা গোয়েন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযানে নিখোঁজ ও জিম্মিদের অবস্থান এবং উদ্ধারের বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছি। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর এই মুখপাত্র বলেছেন, ‘হামাসের সদস্যরা কোথায় একত্রিত হচ্ছে এবং পরবর্তী পর্যায়ের জন্য কী ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তা বুঝতে সহায়তা করে এই ধরনের অভিযান। এসব হুমকি হ্রাস করাও আমাদের অভিযানের লক্ষ্য।’ গাজার চারপাশে ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক স্থল হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর কর্ম প্রস্তুতি ‘সব সময়ই’ উচ্চপর্যায়ে ছিল এবং তা আরও বাড়ানো হচ্ছে। এর আগে, রোববার এক বিবৃতিতে হামাসের সশস্ত্র শাখা ইজ আল-দ্বীন আল-কাসেম ব্রিগেড জানায়, তাদের সৈন্যরা গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের পূর্ব দিকে অনুপ্রবেশকারী একটি সাঁজোয়া বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল। হামাস যোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণের মুখে অস্ত্রশস্ত্র ফেলে পালিয়ে গেছেন ইসরায়েলি সৈন্যরা। পরে হামাস যোদ্ধারাও ঘাঁটিতে ফিরে গেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হামাসের যোদ্ধারা অনুপ্রবেশকারী বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের সময় দুটি বুলডোজার এবং একটি ট্যাংক ধ্বংস করেছেন। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করেন তারা।’ সামরিক সরঞ্জাম বা যানবাহন ধ্বংসের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।