বাংলাদেশ

আগাম বিদ্যা বিশেষজ্ঞ অপির্তা ভার্গব ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশও সেবা দিচ্ছেন

টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: আগাম বিদ্যা বিশেষজ্ঞ অপির্তা ভার্গব ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশও সেবা দিচ্ছেন। তিনি নাড়ি জ্যোতিষ, নিউম্যারোলজিস্ট ও বাস্তবিদ নিয়ে সুনামের সাথে কাজ করে আসছেন। তিনি জ্যোতিষবিদ্যা বিশেষজ্ঞ । ভারতের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষকে সেবা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশে গিয়েও মানুষকে সেবা দিচ্ছেন। তিনি বাংলাদেরে ১৪ নং পুরানা পল্টন, দারুসসালাম আর্কেড, ১১তলা, স্যুট নং ৫, পল্টন থানা, ঢাকা। তার অফিসের নাম হচ্ছে লিগ্যাল মেন্টর্স। আগাম বিদ্যা বিশেষজ্ঞ অপির্তা ভার্গব বাংলাদেশে প্রতি মাসেই আসেন। প্রয়োজনে তার নম্বরে ফোন করেও সাক্ষাতকারের জন্য সময় নিতে পারেন যে কেউ। নম্বরটি হচ্ছে: +৯১৭০০৩৪৫৫৩৭১।


জানা গেছে, জ্যোতিষবিদ্যা যাঁরা চর্চা করেন, তাঁরা জ্যোতিষী এবং জ্যোতির্বিদ্যা যাঁরা চর্চা করেন তাঁরা জ্যোতির্বিদ। জ্যোতিষী হলেন কিরো, ভৃগু, পরাশর, অমুক সম্রাট, তমুক সমুদ্ররা। অপরদিকে জ্যোতির্বিদ হলেন উইলিয়ম হার্শেল, ভেইনু বাপ্পু, মেঘনাদ সাহা, জয়ন্ত বিষ্ণু নার্লিকার, আর্যভট্ট, গ্যালিলিও, কোপারনিকাস প্রমুখ।জ্যোতির্বিদ্যার বিষয় সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, ছায়াপুঞ্জ, উল্কা, ধূমকেতু। জ্যোতিষবিদ্যার বিদ্যার বিষয় হাত-পা-মুখ গুনে ব্যক্তির ভূত-ভবিষ্যত বলে দেওয়া। জ্যোতির্বিদ্যায় সূর্যের চারপাশে পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহরা ঘুরপাক খায়।জ্যোতিষবিদ্যায় পৃথিবীর চারপাশে সূর্য সহ অন্যান্য গ্রহরা ঘুরপাক খায়। পৃথিবী নামে কোনো গ্রহের অস্তিত্ব নেই। জ্যোতির্বিদ্যায় উপগ্রহ আছে, জ্যোতিষবিদ্যায় কোনো উপগ্রহ নেই।জ্যোতির্বিদ্যায় রাহু ও কেতুর কোনো অস্তিত্ব নেই, জ্যোতিষবিদ্যায় রাহু ও কেতুর অস্তিত্ব প্রবল। জ্যোতির্বিদ্যার গ্রহ বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, নেপচুন, প্লুটো ইত্যাদি। জ্যোতির্বিদ্যার গ্রহরা বালি-পাথর-গ্যাসীয় মহাজাগতিক নিথর বস্তু বিশেষ। জ্যোতিষবিদ্যার গ্রহ সূর্য বা রবি, চন্দ্র, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র, শনি, রাহু এবং কেতু। জ্যোতিষবিদ্যার গ্রহরা সবাই দেবতা, তাদের কোপে মানুষের সব্বোনাশ হয়। জ্যোতিষবিদ্যায় গ্রহরত্ন, গ্রহমূল, অষ্টধাতুর ব্যবহার আছে। জ্যোতির্বিদ্যায় এসবের কোনো ব্যবহারই নেই।জ্যোতিষবিদ্যায় মামলা-মোকদ্দমা জিতিয়ে দেওয়া, বিয়ে হওয়া, পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়া, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার দাবি করে। জ্যোতির্বিদ্যায় এসবের কোনো চর্চা নেই।জ্যোতির্বিদ্যায় পদার্থবিদ্যা, গণিত, দূরবীক্ষণ যন্ত্র প্রয়োজন হয়। জ্যোতিষবিদ্যায় কোনো বিদ্যাই লাগে না — লাগে ব্যক্তির দুর্বলতা খুঁজে বের করার ক্ষমতা, কৌশল-চাতুরতা, সম্মোহনী আর রত্ন-মাদুলি-কবচ গছানোর ক্ষমতা। গ্রহ-নক্ষত্র দেখতে দূরবীক্ষণ যন্ত্র লাগে না, দূরবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়াই বহুদূরে থাকা ভবিষ্যত আর অতীত দেখাই জ্যোতিষ।
ভারতে বৈদিক যুগের মাঝামাঝি মায় ব্রাহ্মণ সাহিত্যাদি রচনার যুগ থেকেই জ্যোতির্বিদ্যায় বিশেষ অগ্রগতি হয়েছিল। বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ রামশরণ শর্মা বলেন-প্রাচীন বৈদিক সাহিত্যে জ্যোতিষীর ভবিষ্যবিচারের কোনো ইঙ্গিত নেই। হস্তরেখা বিচারের প্রাচীনতম আলোচনা গরুড়পুরাণে পাওয়া যায়। এ বিষয়ে প্রথম উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ খ্রিস্ট্রীয় ষষ্ঠ শতকের ‘বৃহৎসংহিতা’, যে গ্রন্থটির রচয়িতা বরাহমিহির। ব্রাহ্মণ্য যুগে জ্যোতর্বিদ্যাকে একটি স্বতন্ত্র বিদ্যা হিসাবে গণ্য করত। ব্রাহ্মণ্য সাহিত্যে জ্যোতিষকে বলা হয়েছে ‘নক্ষত্রবিদ্যা’ এবং জ্যোতির্বিদকে ‘নক্ষত্র দর্শক’ বলা হয়েছে।আর্যভট্টই প্রথম ভারতীয় জ্যোতির্বিদ, যিনি পৃথিবীর আহ্নিক গতির কথা বলেন। গ্রিকদের অনেক আগে থেকেই ব্যাবিলনীয়, মিশরীয় এবং ভারতীয়রা ২০০০ বছর ধরে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় আত্মনিয়োগ করে এসেছে। সেই জ্ঞান চর্চা অর্থাৎ জ্যোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রে গ্রহ-নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের পরিপূর্ণ সদব্যবহার গ্রিক বিজ্ঞানীরা করেছেন। গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কখনোই জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় ধর্ম এবং ফলিত জ্যোতিষের প্রতি বেশি গুরুত্ব আরোপ করেনি।
বিভিন্ন রত্ন পরীক্ষার বিধান, স্ত্রী ও পুরুষের লক্ষণ, বৈবাহিক নক্ষত্র ও লগ্ন বিষয়ক আলোচনা। পূর্তকর্ম, স্থাপত্য, জাতকশাস্ত্র, অঙ্গবিদ্যা, রাজব্যবহার, বাস্তুবিদ্যা, ভূবিদ্যা, প্রাণীবিদ্যা প্রভৃতি। বিভিন্ন গ্রহ বক্র হলে তার খারাপ ফল কেমন হতে পারে তার বিস্তৃত আলোচনা। গর্গ, পরাশর, কশ্যপ, ভৃগু, বশিষ্ঠ, বৃহস্পতি, মনু প্রমুখ মনীষীদের নাম ও তাঁদের মতামত আছে।পঞ্জিকাগুলি আসলে সেই জ্যোতিষবিদ্যার ফল।
অতএব জ্যোতিষশাস্ত্র বলতে যা বোঝায় একজন ব্যক্তির বা জাতকের জন্মপত্রিকা অনুশীলনসাপেক্ষে তার চরিত্র ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একটা আপাত ধারণা তৈরি করা এবং এই কাজে জাতকের জন্ম সময়ের চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্রদের অবস্থান পর্যালোচনা করা। জ্যোতিষবিদ্যার এই সাম্প্রতিক সংস্করণ প্রকৃতপক্ষে সুমেরীয় যুগের অপরিণত জ্যোতিষবিদ্যারই ক্রমবিকাশ।জন্মপত্রিকা থেকে একজন ব্যক্তি বা জাতকের ভাগ্য আগাম বলে দেওয়ার ভাবনা জ্যোতিষীয় পদ্ধতি দৃশ্যমান কোনো ঘটনার উপর তৈরি হয়নি, এর উদ্ভব হয়েছিল জন্মকালে গ্রহ-নক্ষত্রদের সঙ্গে জাতকের তৈরি হওয়া এক অদৃশ্য বন্ধনের অলীক কল্পনা থেকে।বস্তুত জ্যোতিষশাস্ত্র গড়ে উঠেছে বিভিন্ন সভ্যতার ধর্মীয় ভাবনাকে ভিত্তি করে। প্রাচীন মিশর এবং মেসোপটেমিয়ায় প্রতিটি গ্রহ-নক্ষত্রকে কোনো-না-কোনো ঈশ্বর বা অতিমানবের সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। তারা মনে করতেন, ঐশ্বরিক শক্তিসম্পন্ন এইসব বস্তু সত্ত্বা পার্থিব জীবনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাই বুঝি পৃথিবীর প্রাণীজগত এক অদৃশ্য বন্ধনে মহাজাগতিক গ্রহ-নক্ষত্রদের সঙ্গে আবদ্ধ। অবশ্য এখানে প্রাণীজগত বলতে মানুষের জগত বুঝতে হবে। কেন-না মানুষ ছাড়া আর কোনো প্রাণীদের ভাগ্য-গ্রহ-প্রতিকার নিয়ে বিন্দুমাত্রও মাথাব্যথা নেই।

Related Articles

Back to top button