আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনীয় বাহিনীর গোলাবর্ষণে পূর্ব ইউক্রেনের রুশ-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও ১৯ জন। মস্কো-নিযুক্ত অঞ্চলের কর্মকর্তারা বুধবার (৩১ মে) একথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে ড্রোন হামলার ফলে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি তেল শোধনাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের গোলাবর্ষণে পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্ক অঞ্চলের একটি গ্রামে পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে মস্কো-নিযুক্ত কর্মকর্তারা বুধবার বলেছেন।এছাড়া এক সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো সীমান্তের কাছে অবস্থিত রাশিয়ান শহরে আঘাত হেনেছে ইউক্রেনীয় গোলা। এতে বেশ কয়েকটি ভবন ও যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং চারজন আহত হয়েছেন বলে রাশিয়ান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। রয়টার্স বলছে, মস্কোর বহুতল ভবনে আক্রমণ করতে কিয়েভের বিরুদ্ধে ড্রোন পাঠানোর অভিযোগ করার একদিন পর লুহানস্কে রাশিয়ান-নিযুক্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী রাতের আঁধারে সেখানকার কার্পাটি গ্রামের একটি খামারে মার্কিন-নির্মিত হিমারস রকেট লঞ্চার ব্যবহার করে আক্রমণ করেছে। ওই হামলায় পাঁচজন নিহত এবং আরও ১৯ জন আহত হয়েছেন।রুশ বাহিনী পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্ক অঞ্চলের প্রায় পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
এদিকে আঞ্চলিক গভর্নর ব্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেছেন, ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের সীমান্তের প্রায় ৭ কিলোমিটার (৪.৫ মাইল) উত্তরে অবস্থিত রাশিয়ার শহর শেবেকিনোতেও আঘাত করেছে ইউক্রেনীয় গোলা। এই ঘটনায় আহত দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং গোলাবর্ষণের জেরে জানালা ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি একটি আট তলা অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের ছাদ, চারটি বাড়ি, একটি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রয়টার্স অবশ্য স্বাধীনভাবে এসব তথ্য যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। অন্যদিকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। যদিও টানা ১৫ মাস ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়া উভয় পক্ষই বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা করার কথা অস্বীকার করেছে।এদিকে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রাসনোদর অঞ্চলে আফিপস্কি তেল শোধনাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া এই আগুন সম্ভবত ড্রোন হামলার কারণে ঘটেছে বলে সেখানকার গভর্নর বুধবার জানিয়েছেন। অবশ্য অগ্নিকাণ্ডের পর খুব দ্রুতই আগুন নিভিয়ে ফেলা হয় এবং কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে গভর্নর ভেনিয়ামিন কন্ড্রাতিয়েভ বলেছেন। এছাড়া আফিপস্কি তেল শোধনাগারের কাছে আরেকটি শোধনাগারও এই মাসে বেশ কয়েকবার আক্রমণের শিকার হয়েছে। রয়টার্স বলছে, আফিপস্কি তেল শোধনাগারটি ক্রাসনোদারের নভোরোসিস্কের কৃষ্ণ সাগর বন্দর থেকে খুব বেশি দূরে নয়। কারা ওই ড্রোন সেখানে পাঠিয়েছে সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ইউক্রেনকে মঙ্গলবার মস্কোসহ দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য অভিযুক্ত করেছে রাশিয়া।অবশ্য ইউক্রেন প্রায় কখনোই প্রকাশ্যে রাশিয়ার অভ্যন্তরে বা ইউক্রেনের রুশ-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে হামলার দায় স্বীকার করে না।