টাইমস ২৪ ডটনেট: নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্রের উদ্যোগে বরেণ্য মনিপুরী নৃত্যশিল্পী তামান্না রহমানের পরিকল্পনায় গতকাল বুধবার, সন্ধ্যা ৭ টায় রাজধানীর নিউ বেইলি রোডস্থ বাংলাদেশ মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে নৃত্যসুধা (গুরু শিষ্য পরম্পরা) উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
এতে একই মঞ্চে বরেণ্য কত্থক নৃত্যশিল্পী মুনমুন আহমেদ, মনিপুরী নৃত্যশিল্পী তামান্না রহমান, ওড়িশী নৃত্যশিল্পী প্রমা অবন্তী ও ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী বেলায়েত হোসেন খান এবং তাদের একঝাঁক শিষ্যরা মঞ্চে নূপুরের গল্প ফোটান নৃত্যের মধ্যে দিয়ে।একক ও দলীয় পরিবেশনায় দর্শনার্থীরা একসঙ্গে উপভোগ করেন শাস্ত্রীয় নৃত্য।
পরিবেশনা পর্বের শুরুতে একসঙ্গে মঞ্চে আসেন মুনমুন আহমেদ, বেলায়েত হোসেন খান, তামান্না রহমান ও প্রমা অবন্তী। চার শিল্পীর সম্মিলিত উপস্থাপনায় উদ্ভাসিত হয় গুরু বন্দনা শীর্ষক পরিবেশনা। আর এই পরিবেশনার আশ্রয়ে তারা নিজ গুরুদের প্রতি প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করেন।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নৃত্যশিল্পী তাবাসসুম আহমেদ।উৎসবের প্রচ্ছদ অংকন করেছেন অভ্র বড়ুয়া।
এই আয়োজনে অতিথি হিসেবে সংক্ষিপ্ত কথনে অংশ নেন নাট্যজন আতাউর রহমান, বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী, একুশে পদকজয়ী নৃত্যশিল্পী আমানুল হক, বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মীনু হক ও বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সভাপতি সিতারা আহসানস্নস্নাহ।
তামান্না রহমানের পরিচালনায় নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র পরিবেশন করে বাজিকর খেল শীর্ষক উপস্থাপনায় উঠে আসে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা। এছাড়াও নৃত্যদলটি পরিবেশন করে মঙ্গলাচরণ, ষড়ঙ্গ নর্তন ও মৃদঙ্গ বাদন শীর্ষক পৌরাণিক গল্পময় পরিবেশনা।
চট্টগ্রামের ওড়িশী অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার,এর জৈষ্ঠ নৃত্যশিল্পীরা প্রমা অবন্তী’র সাথে একই মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করেন। ঈশ্বর বন্দনায় বিলীন ভক্তের হাত-পায়ের মুদ্রা রূপ নেয় ছন্দ, তালের নৃত্যে। ওড়িশি নৃত্যধারায় তাই দর্শককে খুশি করা ঈশ্বরকে তুষ্ট করারই শামিল। সেই কাজটিই নৃত্যের মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে তুলেন প্রমা অবন্তী ও তাঁর শিষ্যরা। চক্ষু সঞ্চালন,দেহভঙ্গিমা ও জটিল পদচারণায় মুগ্ধ করেন প্রমার শিষ্যরা।তাঁরা হলেন নিবিড় দাশ গুপ্তা,তূষি ভট্টাচার্য,ময়ূখ সরকার,মৈত্রী চক্রবর্তী,দিয়া দাশ গুপ্তা,অর্জিতা সেন চৌধুরী,বৈশাখী বড়ুয়া ও শ্রাবণী ধর।
মুনমুন আহমেদের পরিচালনায় রেওয়াজ পারফর্মার্স স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রথম পরিবেশনায় উপস্থাপন করে নটরাজ শিব বন্দনা। ‘ও পাখি তারে বলে দিস’ গানের সঙ্গে পরে শিষ্য শর্মিষ্ঠা সোনালী সরকারকে নিয়ে ‘বর্ষায় ময়ূর বরষে বাদারিয়া সাওয়ান কি’ গানের সুরে নৃত্য পরিবেশন করেন মুনমুন আহমেদ।
ভরতনাট্যমের যতিস্বরম শীর্ষক উপস্থাপনা দিয়ে পরিবেশনার শুরু করেন বেলায়েত হোসেন খান ও তার দল। বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে মঞ্চে পারফর্ম করেন কান্তা সরকার, অন্তরা ও প্রমি।
উৎসবের পরিকল্পক তামান্না রহমান বলেন, আমাদের তত্ত্বাবধানে অনেক শিক্ষার্থী তৈরি হচ্ছে। এই নৃত্যশিক্ষার্থীদের পরিবেশনার সুযোগ করে দিতে হবে। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা সেই সুযোগটি পাচ্ছে এবং শাস্ত্রীয় নাচ শেখার প্রতি অনুপ্রাণিত হবে।