এখনও পুরো ইউক্রেন দখল করতে চান পুতিন: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা

টাইমস ২৪ ডটনেট: ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের সব ধরণের প্রচেষ্টা আর আলোচনা অব্যাহত থাকলেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেনে যুদ্ধের লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে-বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। এ সংশ্লিষ্ট ছয়টি সূত্র ব্লছে, পুতিন এখনও পুরো ইউক্রেন দখল এবং সাবেক সোভিয়েত সাম্রাজ্যের অংশ ছিল ইউরোপের এমন কিছু ভূখণ্ড পুনর্দখলের লক্ষ্য ছাড়েননি। রয়টার্সের খবর।
এই সূত্রগুলোর বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, এসব গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার শান্তি আলোচক দলের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ট্রাম্প ও তার প্রতিনিধিরা দাবি করে আসছেন, পুতিন সংঘাতের অবসান চান। সর্বশেষ গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে প্রস্তুত করা হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে পুতিন ইউরোপের জন্য হুমকি নন বলে দাবি করা হয় সেটিও খণ্ডন করা হয়েছে। ২০২২ সালে সর্বাত্মক আগ্রাসন শুরুর পর থেকে মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়ন ধারাবাহিকভাবে একই রকম রয়েছে। ইউরোপীয় নেতারা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণার সঙ্গেও তা মিলে যায়।
তাদের মতে, পুতিন পুরো ইউক্রেনসহ সাবেক সোভিয়েত ব্লকের দেশগুলোর ভূখণ্ড, এমনকি ন্যাটোভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর অংশও দখল করতে চান।রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হাউজ ইন্টেলিজেন্স কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্য মাইক কুইগলি জানান, গোয়েন্দা তথ্য বরাবরই বলছে, পুতিন আরও বেশি চান। ইউরোপীয়রা এতে নিশ্চিত। পোল্যান্ড একেবারেই নিশ্চিত। বাল্টিক দেশগুলো মনে করে, তারাই প্রথম লক্ষ্য।বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মধ্যে রয়েছে ডনবাস শিল্পাঞ্চলের লুহানস্ক ও ডনেস্কের বড় অংশ, জাপোরিজ্জিয়া ও খেরসনের কিছু এলাকা এবং কৌশলগত কৃষ্ণসাগরীয় উপদ্বীপ ক্রিমিয়া। পুতিন ক্রিমিয়া ও এই চারটি প্রদেশকে রাশিয়ার অংশ বলে দাবি করেন।দুটি সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে ট্রাম্প কিয়েভের ওপর ডনেস্কে ইউক্রেনীয় বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা ছোট একটি এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের চাপ দিচ্ছেন। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও অধিকাংশ ইউক্রেনীয় নাগরিক এই দাবি প্রত্যাখ্যান করছেন।
হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধ শেষ করতে প্রেসিডেন্টের টিম উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে এবং শান্তিচুক্তি আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে কাছাকাছি। তবে তিনি গোয়েন্দা প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছেন।
এদিকে গত শনিবার এক্সে দেওয়া পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড জানান, আইনপ্রণেতাদের জানানো হয়েছে যে, রাশিয়া ইউরোপের সঙ্গে বড় যুদ্ধ এড়াতে চায় এবং ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছে তারা বর্তমানে ‘পুরো ইউরোপ তো দূরের কথা, ইউক্রেনও দখল করার ক্ষমতা রাখে না’।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও রিয়েল এস্টেট উদ্যোক্তা স্টিভ উইটকফ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা অগ্রগতির কথা বললেও ভূখণ্ড প্রশ্নে বড় মতপার্থক্য রয়ে গেছে।



