মতামত

মানুষে মানুষে বিভেদ নয় সব সমস্যার সমাধান চাই

সৈয়দা রাশিদা বারী : পুরনো ঐতিহ্য যাত্রার দল অপেরা’র এক সদস্যার কাছে, একজন লেখিকা বললো আপনারাও অভিনয়ে সমাজের সমস্যাই তুলে ধরেছেন, দেবদাস উপন্যাসের লেখক বিখ্যাত শরৎচন্দ্রের মতো। কিন্তু আমি মানুষের হাত করার ফন্দি না করে, খারাপ জানার তোয়াক্কা না করে, আমার লেখালেখিতে সমাধান চাই। পুরুষের দুষিয়ে সমাধান চাইলেও আমি অমার্জিত মেয়ে নয়। বিশ্বাস করি এদেশের সব জনগণও অত অমার্জিত অশ্লীল অমানবিক এবং মন্দ নয়। তারপরও কেন বৈষম্য পার্থক্য বিভেদ ভিন্নান্তর আলাদা, এ সমস্ত শব্দ এবং ধ্যান-ধারণা সবকিছুতে পুষে রাখা হয়?! লিঙ্গান্তর জেন্ডার এর প্রশ্নে নয়। মানুষ এবং মনুষ্যত্বের প্রশ্নে। এই আপডেট যুগে এ সমস্ত সমস্যার সমাধান হওয়া জরুরী প্রয়োজন, বিশেষ করে সৃজনশীলতার দৃষ্টিকোণ থেকে। এখনো বর্বর যুগের মত নারীর উপরে অনেক জুলুম অত্যাচার বৈষম্য অন্যায় অনাচার পুষে রাখা হয়েছে। সেই দুঃখে অধিকাংশ নারী প্রতিশোধ নেয় স্বামীর জন্মদাত্রী মায়ের উপর! পুরুষের আসল ভেদ ঘরের খুঁটি ভাঙলে যেমন ঘর থাকে না! তেমন জন্মদাত্রী মা পুরুষের খুঁটি ইহকাল পরকাল দুই কালেরই। নারীর বলতে স্ত্রীর কাজ ওই খুঁটিটিই উপড়িয়ে উঠিয়ে পুরুষের খুঁটিহীন অপদার্থ অকেজো দুর্বল করে ফেলানো।‌ এটা স্বামীকে জব্দ করার বা জব্দ রাখার জন্য। কিন্তু পুরুষ সমাজ কত মূর্খ সেটা বোঝে না! আমরা কি এখনো ‌যুগ অনুসারে সুন্দরকে আরো সুন্দর করতে পারি না? এবং তা করলে দোষের কিছু নেই! মন্দ কাটিয়ে সুন্দরের দিকে যাওয়া অন্যায় কিছু নয়।
আর আমার রাজনীতি এবং কোন রাজনৈতিক দলকে এটাক করারও প্রশ্ন নেই। কারণ আমি রাজনীতির মাঠে নেই। আমার একনিষ্ঠ দেশ প্রেমিক ভাষাসনিক বাবার নিষেধের কারণে। এই দেশ সম্মানীর সম্মানিত করবে না এটা তিনি বোধ হয় বুঝেছিলেন বা জানতেন। শেষে আমি ব্যথা পাবো তাই তিনি আমার সাহিত্য চর্চা করতেও নিষেধ করেছিলেন। এত কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়ে নিষেধ করলেন, বিদ্যা অর্জন নিয়ে শিক্ষিত সমাজ গঠনে কাজ করতে, এর অর্থ তখন বুঝি নাই। এখন বুঝি। কিন্তু আল্লাহ আমার তৈরিই করেছেন মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত সাহিত্য সংস্কৃতিক মুড়িয়ে! তাই সরে যেতে পারি নাই, বলা যায় বাচার স্বার্থে। কিছু পাওয়ার স্বার্থে আমার দাদা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের পক্ষে অর্থ করি ইত্যাদি সহযোগিতা করেন নাই। বাবাও অনেক কাঠ খরি পুড়িয়ে দেশপ্রেমিক ভাষা সৈনিক ছিলেন না। আমিও সাহিত্য চর্চা কিছু পাওয়ার জন্য করি না। কিন্তু মানুষের উপহাস কষ্ট দেয় বটে। এর থেকে তো আর মুক্তি পাওয়ার উপায় নাই। এই জন্যই বাবার নিষেধাজ্ঞা ছিলো! তার একটা কথা শুনেছি, রাখতে পেরেছি যে, আমি বুদ্ধি জ্ঞানে পরিপূর্ণ বা আকৃষ্ট হওয়া থেকে ভুলেও রাজনীতি করি না। কিন্তু রাজনীতি দলনীতি করি না বলে, দেশ নিয়ে কিছু কথা লিখবো না বলবো না তা তো হয় না। আমি তো দেশের নাগরিক। একজন দেশের নাগরিক হিসেবে দেশের স্বার্থে লিগাল কথা তো না বললেও অন্যায়। হ্যাঁ হ্যাঁ নিষেধ করেছিলেন হয়তো বাবা ভেবেছিলেন, স্বাধীন দেশে রাজনীতি করা মানে দুর্নীতি করা হবে। তাছাড়া তিনি লেখাপড়া শিখিয়ে নিষেধ করলেন কেন?? এটাও কিন্তু বিশদ গবেষণার বিষয়। আমার মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত যেহেতু সাহিত্য আর সংস্কৃতি দিয়ে মোড়ানো তাই সাহিত্য চর্চা করি আমি মনের খোরাক মেটাতে, এর নামই বাঁচার স্বার্থে। রাজনীতির মাঠে থাকলে, চামচামি বাদরামি করলে, কি আর, প্রায় ৪০০ গ্রন্থ লিখে, ৭০০০ টপিক্স বাক্য লিখে, ৫০০০ গান লিখে এবং নাটক প্রতিবেদন ফিচার গল্প উপন্যাস কবিতা ছড়া হাইকু রম্যকথা ইত্যাদি সমান তালে সামঞ্জস্য এবং অসংখ্য লিখে, এমন সাধারণ বেশধারী থাকতাম?? এমন মরিচ তলায় হাট বসাতাম? বটগাছ বনে তালগাছের তলায় হাট বসাতাম! ঘরের সাথে বাংলাবাজার নিউ মার্কেট কাঁটাবন খুলতাম! সরকারি জাতীয় পুরস্কার গুলো লুকানো বিচারে কবেই ধুম ধারাক্কায় পেয়ে। ১খানি থেকে, বেশি হলেও ৪ খানি বইয়ের কালেই এবং ২০ বছর বয়সেই পেতাম। প্রতিভা এবং কর্মযোগ্যতার স্বীকৃতি অর্জন হতো চোখ বন্ধ করে। লোক লস্কর সৈন্য সামন্ত বাহিনী গাড়ি বাড়ি সব থাকতো। এসব সত্যি কথা তাই বললাম। তাছাড়া আমি কিন্তু মানুষকে কলমের ছুরি দিয়ে আঘাত করি না। সাহিত্য সংস্কৃতির এটম বোমাই হামলা করিনা। ঠেলা মেরেও লিখার প্রবণতায় লিখলাম না। যেমন লিখা দরকার, দেশে এভাবে চলতে চলতে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন পলাশীর প্রান্তরের মতন। দেশ ২০০ বছরের জন্য চলে যাবে কোন লোভী শক্তিধর দেশের দখলে। যেমন ব্রিটিশদের দখলে গিয়েছিল একবার তেমন। কোন চালাক এবং শক্তিধর রাষ্ট্রের দখলে, মূর্খ দেশরাই যায়। আবার নীল চাষের ঠেলায় ভাত যেন খেয়ে দেখে! জয়নাল আবেদীনের দুর্ভিক্ষ কারে কয় বোঝে!? কাক চিল কুকুর শকুন মানুষ এক খাবার টানাটানি করবে। ব্যাঙ সামুক ইদুর বাঁদর ধরে ধরে খাবে। গাছ ঘাসের শিকড় পর্যন্ত উঠিয়ে খাবে। একসাথে ঘুমোবে এবং একসাথে আস্তাকুড়ে খুঁজে কচু ঘেচু পশুপক্ষী খাবারের সন্ধান করবে! গাছের শিকড় দাঁতে কেটে বন্যপশু জানোয়ারের মত খাবে, ভক্ষণ করবে। নারী ধর্ষণের কথা তো বলবই না, স্বামী আর ভিনদেশীরা সব একাকার হয়ে হয়ে যাবে। তারপরে আবার প্রায় ২০০ বছর মানুষ মানে শত শত তিতুমীর বিনয় বাদল দীনেশ বাঘাযতীন ক্ষুদিরাম বসু ফুসে উঠে আন্দোলন করে, একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি…হাসি হাসি পরবো ফাঁসি দেখবে ভারত বাসি… কলের বৌমা তৈরি করে….বড় লাটকে মারতে গিয়ে মারলাম আরেক ইংল্যান্ড বাসির …শনিবার… মা ক্ষুদিরামের ফাঁসি … ১২ লক্ষ ৩৩ কোটি রইল মা তোর ব্যাটা বেটি… মা মোদের করিস দাসী…দশ মাস দশ দিন পরে… তখন যদি না চিনতে পারিস, দেখবি গলায় ফাঁসি ….! তারপরে আবার দ্বিতীয় ৪৭ আসবে। কাঁটা তারের বেড়া দেবে। দ্বিতীয় ৫২ হবে বাংলা ভাষার ছোবল হামলা কেটে যাবে! শত্রু ঘনিয়ে, শেয়ালের মুরগি ধরা নিপাত যাবে। তারপরে ল্যাংড়া ল্যাংড়িয়ে হেঁটে হেঁটে ৭১ আসবে। মিছিল মিটিং আন্দোলন পেরিয়ে সব দলে দুমড়ে দেশ স্বাধীন হবে। গমের যাও, জবের যাও, ময়দা ঘুটা, ফেকু রান্না, ছালের চাপড়ি, খুদের ভাত, কলার পাতায় বেঁধে, কচুর শাক সিদ্ধ খাবে। পিচোটের জাত ! পিচটের যাতের সুখে খেতে ভুতে কিলায়!!! এই ধরনের লিখতাম। কিন্তু কই ভাই আমি তো তা লিখছি না। পূর্বপুরুষদের বিপদ আপদের কথা এমন ইত্যাদি কত কি একদম তুলে ধরছি না! যা পিছনে বিসর্জন গিয়েছে তা আর সামনে আনছি না। অপপাদ্য কিছু লিখা লিখছি না? নীলদর্পণ জমিদার দর্পণ মীরের কালে মীর মোশারফ লিখেছেন! পথের পাঁচালীতে বিভূতিভূষণের কালে, বিভূতিভূষণ যা দেখেছেন এবং পাইয়েছেন তাই লিখেছেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলও শিউলি মালা রিক্তের বেদন নজরুলের কালের কথা লিখেছেন। আমি তো তা লিখছি না?! পিছনের কথায় কান দিচ্ছে না। কলম ধরছে না। আমি লিখছি ২৪ নিয়ে। আমি বৈষম্য বিরধী কথাই লিখি কিন্তু রাজনীতিকে ঘিরে নয়। আমি মানুষ এবং মানবতাকে ঘিরে কথা বলি। সেদিন আমাকে একজন বোন বললো, আপনি তো নারী নিয়ে কাজ করেন। আমাদের মত নারীকে সরকার কেন দেখেনা? আমাদের কি সরকারের কাছে কিছুই প্রাপ্তি নাই?? ভীষণ কথা বলেছে সাধারণ মহিলা! এ যে বহুমাত্রিক গবেষণার বিষয়!! মানে তার কথা বাড়িতে আমরা কাজ করি, সন্তান মৃত্যুপন জন্ম দিয়ে, লাঞ্ছনা গঞ্জনা দুঃখ সয়ে, লালন পালন করি। স্বামীকে সেবা যত্ন করি, এটা কি কাজ নয়? এটা কি পরিশ্রম নয়? এটা কি দেশের প্রতি অবদান রাখা নয়? তবে আমাদের পারিশ্রমিক কেন দেয় না সরকার?! আমি তো নামাককুল অবাক হতভঙ্গ! মানে কি জবাব দেবো কিছুই বুঝলাম না! কি জবাব হয় তাও জানিনা!সে বলেছে কেন সরকার আমাদের ভাতা দেবে না? আমাদের বেকার নারীদের সরকার কিছুটা দায়িত্ব নিলে তো আমাদের চাহিদার এবং প্রয়োজনের উপরে অতিষ্ঠ হয়ে হাজবেন্ড স্বামীরা মারবে না! চুল টেনে ছিড়ে দেবে না! আমাদের একটু ভাতার ব্যবস্থা সামান্য অর্থ পয়সা কড়ি দিলে তো আমরাও স্বামী সন্তানের কাছে সম্মানিত হই। স্বামী তো শুধু ভাত কাপড় দেয়। সরকার আমাদের সম্মান করলে, সংসারে আমাদেরও সম্মান বাড়ে। আমরাও ভাত কাপড় বাদে চাহিদা মিটিয়ে একটু ভালো থাকতে পারি। শুধু ভাত কাপড়ে চলে নাকি? হাতেও একটু পয়সা করি থাকলে, মনটা ভালো লাগে! আমরা আমাদের উপযুক্ত সময়ের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারি। স্বামী তো চিকিৎসা নিয়ে হেলাফেলা করে। ঝামেলা ভাবে। বলো তোমার চিকিৎসা করে পয়সা ফুরানোর থেকে, ওই পয়সায় আরেকটা নতুন মেয়ে আনা, বিয়ে করা অনেক ভালো! যেন স্ত্রী নারী মানে আমরা তাদের ঘরের আসবাব। তাই বলেন স্বামী নষ্ট মেশিন মেকারের কাছে নিয়ে ভালো করার থেকে, সারাবার থেকে, নতুন যন্ত্র কেনা অনেক ভালো। তাই তুমি ওভাবেই অসুস্থ থাকো, প্রয়োজনে চলে যাও। আমি আরেকটা বিয়ে করবো। আল্লাহ আমার প্রয়োজন পরলে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছেন। ৪টা পর্যন্ত বিয়ে করা আমার জায়েজ আছে। মহিলা বিষয়টা খোলাসা করে বলল এজন্যই সরকার সহযোগিতা দিলে আমরা আমাদের শারীরিক মানসিক অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারি। মন চাইলে কারো কিছু দিতে পারি। আমাদের কি মন চায় না কারো কিছু দিতে? আমরাও তো মানুষ, আমাদেরও তো ইচ্ছা আকাঙ্খা আছে নিজের মতো করে। স্বামীর কাছ থেকে লাথি গুতো খেয়ে, তিতে হয়ে মন্দ হয়ে, আর জবাব দিহিতা দিয়ে, মিথ্যে বানিয়ে বলে ও ছোট হয়ে কেন আমাদের চেয়ে চেয়ে নিতে হবে? একটু আলাদা কিছু করতে গেলে কেন আমরা বিপদগ্রস্ত হবো? মন চাইলেও পারিনা আমরা মনের চাহিদা মেটাতে। মনের সম্মান করতে। কেন এমনটা আমরা কি মানুষ না? সরকার তো আমাদের এই সমস্যাটা দূর করতে পারে। লাঘব করতে পারে। কারণ আমরাও তো ভোট দেই দেশ গঠনে, সরকার গঠনে সংযুক্ত থেকে। ভোটের বিনিময়ে, আমরা বাড়ি ঘরে কাজ করা, স্বামী সন্তানের পায়ের তলে বা আন্ডারে থাকা, এই ধরনের বেকার অভাবী নারীরা আমরা কি কিছুই পাবো না?! আমাদেরও কেন ভাতা বা কোন খরচ দেয় না সরকার??? ভদ্রমহিলার এত এত সমস্যা বলা সমস্যার সমাধান চাওয়া। আমি কিন্তু পুতুলের মত অনর হয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনছিলাম! ‌শুনেছি শুধু কোন জবাব দেই নাই! যদিও জানি, সংবিধানের নীতিমালায়, দেশের প্রত্যেক নাগরিককে, ভাত কাপড় চিকিৎসা বাসস্থান দিতে সুনিশ্চিত করেছে সরকার! এই সমস্ত পেতে কারনে অকারনে কেন মানুষ চুরি করবে?! এবং স্বামী কর্তৃক স্ত্রী সম্মান শ্রদ্ধা না পেলে, স্বামীর দরদ না থাকলে, দরদ না দেখালেও, বেহায়ার মতো এবং একঘেয়েমি হয়ে স্বামীর পা ধরে পড়ে থাকবে?? অথবা স্বামীর থেকে বেরিয়ে এসে, পথে পথে বিপন্ন জীবন যাপন করবে?? তা মোটেই শোভনীয় নয়। সেদিন দেখলাম ফেসবুকে একটা নারীকে চুরি করার দায়ে বহু পুরুষ মিলে অনেক হেনস্তা অপদস্ত করতে। তারা আঘাত তো করেছে বটেই এমনকি পরনের কাপড় পর্যন্ত ছিঁড়ে খুলে নিয়েছে! আর নারী লজ্জাস্থান হাত দিয়ে ঢেকে আড়াল করছে!! পুরা শরীরও আড়াল করতে, একটা স্কুটারের মধ্যে ঢুকে পড়ে ড্রাইভার এর বিনা পারমিশনে! নারীর মাথায় আলাদা কাপড়ের টুকরা বাধা, মাথা ঢাকার বন্দোবস্ত এবং পর্দা নিয়ে এত করে! আর রাস্তার মধ্যে সর্বাঙ্গন আলগা করে এইভাবে বেপর্দা করে দিলো! নিশ্চয়ই এই দৃশ্য আরো অনেকেই দেখেছে! এটা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কি কোন আইনি একশন হয়েছে? এসব করেও পর্দা নিয়ে গগানো লোকেরাই। যে দেশে নাবালিকা কন্যা শিশুকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলেছে! পুরুষ শিশুকে বলাৎকার করেছে! এটা দমন করার চাইতে বেশি গুরুত্ব দেয়, নারীর মাথা মুখ হাতের তালু পায়ের তালু ঢাকবার। বেশ তো হাসিলের আকাঙ্ক্ষায়! মনে হয় যেন বলার কারী ও ধর্ষক মানে বেগানা অসভ্য পুরুষ সভ্যতার কান্ডারী! জান্নাত বেহেস্ত তারাই দেয়! দেখুন এখনো তাদের উপযুক্ত বিচার হয়নি!! অথচ ইসলামের গুন্না টেনে পর্দা পর্দা পর্দা করে হুঙ্কার দিয়ে নারীকে শাসায়! দোযখ বেহেশত নারীকে দেখায়!! নিজেদের বেলায় ঢং ঢঙা ঢং! কোন কিছুই মানে না! সুযোগ পেলেই শিশু না বালিকা থেকে বৃদ্ধা নারী ধর্ষণ করে, পায়জামা পাঞ্জাবি টুপি পরে দাড়ি রেখে!!! কি সাংঘাতিক পুরুষের চরিত্র এবং ধর্ম!!! সব পুরুষ না ঠিক আছে। কিন্তু বিচার তো সব পুরুষ চায়না! বরং সব পুরুষ মেনে নেয় ধর্ষকের পক্ষে থাকে! এক ঘরে করেনা। মৃত্যুদণ্ড দেয় না। তাই তাদের মৃত্যুদণ্ড হয় না!! তারা সমাজে ভালোই চলে ভালোই থাকে!! এর মানে কি হয় বলুন??? ওদেরকে কেন ধরে প্রকাশ্যে যে কেউ মেরে ফেলে না? মেরে ফেলাবার অধিকার রাখে না? আইনির হাতে তুলে দেওয়া মানে, ফাক ফোকর তৈরি করে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া! ভাওতাবাজি আইনের এই সমস্ত জায়গায় কেন ধার ধারতে হবে?‌ এই সমস্ত কবিরা গুনাহ ক্ষমার অযোগ্য অন্যায় তবুও ক্ষমা কিভাবে পাই!! আমার কথা প্রত্যেক মানুষ সরকারের কাছ থেকে ওই যে সংবিধানে স্পষ্টভাবে ওয়াদা চুক্তি আছে, ভাত কাপড় বাসস্থান চিকিৎসা নিশ্চিত দেওয়ার, এর জন্য একটা কিছু পাবে। বিশেষ করে নারী পাবে। নারীর কি আছে না আছে সেটা কোন দেখার বিষয় না। তাদের নেওয়া না নেওয়া সেটাও ব্যক্তির বিষয়। যার লাগবে, চাহিদা থাকবে, সে নেবে। যার লাগবে না, সে নেবে না কিন্তু সরকারের দায়িত্ব প্রত্যেককে বুঝিয়ে দেওয়া। পুরুষ মা-বাবার কর্তৃক গিনি খাঁটি নির্ভেজাল সম্পদ যেহেতু দুই ভাগ নিয়ে থাকে তাই সব পুরুষের নাও দরকার হতে পারে। আর পুরুষ ইচ্ছা করলে স্ত্রী সন্তানের দায়িত্ব এরিয়েও যেতে পারে। সন্তান আমার নয় চামড়ার মুখ দিয়ে বলে, দায়িত্ব নাও বইতে পারে। কিন্তু মা তার সন্তান বইতেই হয়। মায়ের অস্বীকার করার এবং এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নাই। ওই যে ভদ্র বোনটা, যুক্তি তর্ক দাঁড় করিয়ে আমাকে ধরেছে, সে ভাবছে স্বামী আমার ভাতণ কাপড় দিক। পাশে আমার সরকারের সহযোগিতাও দরকার। কারণ একজন সচেতন প্রাণ বুদ্ধিদীপ্ত ভদ্র নারীর, মধ্যবিত্ত বা দরিদ্র হলেও, ভাত কাপড় ছাড়াও প্রয়োজনীয় চাহিদা থাকে। সৃজনশীল ভাবেই থাকে।
এখানে সরকার কর্তৃক প্রাপ্তি পেলে, সেই চাহিদা ঘুচতো এবং তার সম্মান বাড়তো সমাজ সংসারে। কথা তো ঠিকই। পুরুষ বাইরে কর্ম করে, তারপরও কিন্তু ওই যে বললাম বাবা-মায়ের থেকে ডাবল নেয়। এই সমাজের একমাত্র ডাক্তার জাকিরুল্লাহ চৌধুরী বাদে, কোন পুরুষ কখনো এটা বোঝো নাই বা আমলে নেই নাই। বলে নাই আমার অনেক আছে। আল্লাহ আমাকে যথেষ্ট দিয়েছেন। অতএব আর প্রয়োজন নাই বিধায় আমি বাবা মায়ের জিনিস দুই ভাগ নেব না। আমার বোনকেই দুই ভাগ দেবো! এবং বরং সবই আমার বেকার অসহায় বোনকেই দিয়ে দিলাম! অবশ্য বেকার অসহায় নন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী তিনি মনে করেছেন তার তুলনায় বেকার অসহায়। তিনি বলেছেন আমার প্রয়োজন হলে মানুষ আমাকে দেবে কিন্তু ওর প্রয়োজনে কেউ তো ওকে দেবে না! তাই আমি ওকে সবাই দিয়ে দিলাম!!! বোন আমার যেন সব পরিস্থিতিতেই ভালো থাকেন মহান আল্লাহর পিতায়। ইস রে কত বড় মহব্বতের কথা! বড় আক্তার প্রমাণ! সাব্বাস মারহাবা বাংলাদেশের কিংবদন্তি পুরুষ। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নারী সুরক্ষার বীর, কিংবদন্তি পুরুষ তুমি, ডক্টর জাকিরুল্লাহ চৌধুরী! পৃথিবীতে দুই চার জন পুরুষও এমন হলে, পৃথিবীতে কখনোই কোন নারী বিপদগ্রস্ত এবং ধর্ষিত হতেন না! পৃথিবীর সকল নারীর পক্ষ থেকে আমিই তোমাকে দিলাম স্যালুট, বিখ্যাত চিকিৎসক ডক্টর জাফরুল্লাহ চৌধুরী! অবশ্যই নারী তারও মনের চাহিদা থাকবে, কারো কাছে কোন জবাব দিহিতা না দিয়ে, দান ক্ষয়রাত করার। পুরুষ দান ধ্যান মন চাইলে করবে। নারীর কেন করবে না?! নারীর কেন থাকবে না, ব্যক্তিগতভাবে দান ধ্যান করার চাহিদা? মন চাইলেও বীনা জবাবদিহিতাই নারি কেন দান ধ্যান করতে পারবে না?? নারীও রাষ্ট্রের অর্ধেকশক্তি! পুরুষের সমান অংশ! নানান কাজে পুরুষের সহযোগিতায় অবদান রাখেন নারী সমাজ। ভোট দিচ্ছেনা। গায়ের রক্ত পানি বিসর্জন দিয়ে দেশের ভবিষ্যৎ বংশবিস্তার প্রজন্ম দিচ্ছেন। দেহের দুধ খাচ্ছেন, সন্তান দেশের সম্পত্তি, আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। দেশের প্রজন্ম বড় করতে, বীনা কৃপণতায় একনিষ্ঠভাবে নারী শ্রম দিচ্ছেন! এর বিনিময় কেন সে পাচ্ছেন না?? স্বামীকে দেহ দিচ্ছেন। দেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে স্বামীর দেহের তৃষ্ণা মিটাচ্ছেন। ঘর সংসার ঘর কন্যায় মুগ্ধ রেখে আনন্দ দেওয়া থেকে, সমস্ত কাজ শামলে রান্না করেও খাওয়াচ্ছেন। বিনিময়ে স্বামী শুধু ভাত কাপড় দিচ্ছে। তবুও যে কয়দিন তার পছন্দ হবে, ভালো লাগবে স্ত্রীর দেহ। স্বামী সেই কয়দিন ভোগ করার বিনিময়ে ভাত কাপড় দিবে এবং সেটাই দেয়। পছন্দ না হলে স্ত্রীকে ত্যাগ করবে এবং সেটাই করে। ধর্ম শরীয়ত মোতাবেক দেশের আইন শাসন মোতাবেক। ত্যাগ করলে স্ত্রীর হাতের পানি খাবে না। স্ত্রীকে ধরবেনা ছোবে না। তখন ভাত কাপড় দেবে না, অবশ্যই দেয়ও না। এটা নাকি পুরুষের জন্য রাইট আছে। ভালো। কিন্তু নারীর পার্মানেন্ট আস্থা এবং নিরাপদ আশ্রয় তাহলে কোথায়?! জন্মদাতা জন্মদাত্রীর সহায় সম্পদ স্বাবলম্বী ভাই দুই ভাগ অংশ নিয়ে নেয়া। বেকার অসহায় বোনকে এক ভাগ দিয়ে। তারপরও ভাইয়েরা পলিটিক্স করে লিখেই বেশি নেই। মানে ভিটে ছাড়া করে দেয় বোনকে। এদিকে আবার অস্থায়ী স্বামী এবং স্বামীর ঘরের নিরাপত্তার বিশ্বাস নাই! কখন ছুটে যায় কখন ছুটে যায় এমন অবস্থা, টেনশন থাকে! সন্তানের কাছেরও নিরাপত্তা অস্থায়ী! কেননা সেখানেও চ্যালেঞ্জ নাই যে সন্তান পুত্র পুত্রবধূ একজন বৃদ্ধা হয়ে যাওয়া অথবা বয়স্ক হয়ে যাওয়া মাকে সম্মান করে খেতে পরতে দেবে। তাড়িয়ে দেবে না নিশ্চিত, এই শক্ত মজবুত আইনী ব্যবস্থা নাই। আছে নামে, কাজে নাই। কাজে থাকলে শিশু ধর্ষক বলাৎকারি চোর ডাকাত সন্ত্রাস এসব থাকত না। লালন পালন করে পুষে রাখা হয় বলেই তো আছে। সব জায়গায় তো নারীকে পরিশ্রম এবং যোগ্যতার পরীক্ষায় টিকে বিনিময়ে ঘুমাবার আশ্রয় খেতে পড়তে হয়। শিশুকালে বাবা মন চাইলে কন্যাকে মেনে নেয় এবং নিরাপত্তা ও খেতে পড়তে দেয়। বাড়িতে রাখে বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত ঘুমাবার জায়গা দিয়ে। মন না চাইলে গ্রহণ করেনা। ওই জায়গা টুকুও আর দেয় না। তখন বেকার অসহায় পেটে ধরা মা-ই অনাথ শিশুকে টেনে নিয়ে বেড়ান। কারণ মায়েরও তো নিরাপদ পার্মানেন্ট জায়গা থাকে না! আস্থা থাকার প্রশ্নই নাই। আইনের আশ্রয়ে সন্তানের এবং নিজের ভরন পোষণ পেতে, সন্তানের প্রমাণের ক্ষেত্রে, ডি এন এ টেস্ট করিয়ে দিতে হয়! বাবা যখন সন্তানকে অস্বীকার করে! এছাড়াও ধরনা দিতে কত যে স্যান্ডেল ক্ষয় হয় অর্থ সহ! যার পেটের ভাত এবং থাকার আশ্রয়ই নাই, তার দ্বারা এসব কি করা আদৌ সম্ভব?!! কাজেই সাঁতার জলে ভাসেন। হ্যাঁ স্ত্রীর দেহটা যখন ভালো না লাগে, তৃপ্তি দিতে পারছে না এমন মনে করে, একজন স্বামী তখন তাকে দ্বিধাহীন ভাবে ত্যাগ করে। অর্থাৎ নারীর দেহের যোগ্যতা যখন হারিয়ে যায়, তখন তার কোন ভ্যালু থাকেনা স্বামী সংসারের কাছে। আর ক্ষমতা হারিয়ে গেলে, সম্পদ এবং গায়ের জোর না থাকলে, সন্তানও বোঝা মনে করে মাকে। সুযোগ নিয়ে পুত্রবধূ অসহায় শাশুড়িকে ঝেটিয়ে বিদায় করে! স্বামীর মানে পুরুষের অনুমতি এবং ইশারায় বাসা বাড়ি থেকে ঘাড় ধরে নামিয়ে দেয় বৃদ্ধা অভাগিনীর! কাজেই সহায় সম্বল সম্পদ সম্পত্তি না থাকলে ক্ষমতা না থাকলে, পুত্রের ঘর ওখানেও জোর থাকে না। অধিকার এবং নিরাপত্তার প্রশ্নই নাই। যুক্তি দিয়ে বোঝানো ভদ্র বোনটির এইসব কথাই আমি শ্রদ্ধাশীল এবং একমত আছি। জানি প্রত্যেকেই একমত থাকবেন। কারণ এটা প্রমাণিত সত্যি লিগাল কথা। অতএব সরকার কেন নারীদের প্রতি সদয় দৃষ্টি দেবে না? যদি না দেবে তাহলে ভোট নেবে কেন? এ ছাড়াও বাবার ঘরে যদি পুত্রর দুই ভাগ, কন্যার একভাগ হয়, তাহলে নারীর একটা ভোটের সমান, পুরুষের দুইটা ভোট হতে হবে। এই ভদ্র সভ্য মহিলা এটাও দাবি রেখে বলেছেন। দেখুন আমি একজন সচেতন নারী লেখক, নারী গবেষক হয়েও, সাধারণ মহিলার কাছে কিভাবে চুপসে গেলাম! হেরে গেলাম?! লিগাল কথা ধারালো অস্ত্রের থেকেও বহু গুণে সাংঘাতিক!! সাধারণ কি অসাধারণ ব্যক্তি, সেটার বাচ বিচারও করে না। কেন নারীর একটা ভোটের সমান পুরুষের দুইটা ভোট হবে না? আমি সাহিত্যিক সাংবাদিক সংগঠক, চিরকাল নারী গবেষক, বহু গ্রন্থের একক লেখক প্রনেতা হয়েও একজন সাধারণ নারীর জবাব দিতে পারি নাই! আপনারাই পুরুষ দেন, কি দেবেন? এই হলো কথা যে জবাব কিন্তু গায়ের জোর ছাড়া, শুদ্ধভাবে দিতে পারবেন না। যুক্তিসঙ্গত জবাবের তো প্রশ্নই নাই। মহিলা বলল ইসলামকে আমি অনেক শ্রদ্ধা করি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও সালাতুল হাজত চাসত ইশরাক নামাজ পড়ি। কুরআন শরীফ পড়ি এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অনেক ইবাদত করি। তাই বলে আমি অন্যায়কে মানতে রাজি নাই। যে কারণে এই সমস্ত যুক্তির কাছে ইসলামকে টেনে আনবেন না।দেখুন আমি একজন আপাত মস্তকে নারী গবেষক, নারীর পক্ষের লেখক মানুষ, ইসলাম ধর্মেও একনিষ্ঠ। আমাকেই মহিলা এই বললো!! আসলে নারী পুরুষ বলে কথা নয়। কথা একটা যেখানে দুর্বলতা দুর্বল সেখানেই অন্যায় মাথাচাড়া দিয়ে জেগে ওঠে। আর উচিত কথা সেখানেই বলা যায়, এই মহিলা আমাকে উচিত কথা বলল। এবং নত না হয়ে বুক টান করে বলল। নারীরা পেটে বাচ্চা ধরে, পুরুষেরা ধরে না। এটা নারীর এক্সট্রা ভাবে আল্লাহর থেকে পাওয়া রহমত। বড় একটা সম্পদ যোগ্যতা এবং বড় একটা মূল্য মর্যাদা। অথচ পুরুষ আল্লাহর দোয়া এই যোগ্যতার উপযুক্ত মর্যাদা না করে, এটাকে উল্টিয়ে, অমর্যাদা করে এবং নারীকে ঠকায়! বলুন তাহলে কোথায় যাই? এটার আবার ব্যাখ্যা বিশাল। ব্যাখ্যা করতে গেলে দুই চারটা গ্রন্থ হয়ে যাবে, দুই একটা পৃষ্ঠায় হবে না। দেখুন দুর্বলতা কারে কয়, পুরুষ নারী বলে কথা নয়। নারীও দুর্বলতা পেলে ছার কিন্তু দেয় না! পুরুষ যেমন নারীর দুর্বলতায় আঘাত করে এবং ঠকায়, তেমন নারী পুরুষের দুর্বলতায় আঘাত করে! পুত্রের দুর্বলতা মায়ের প্রতি। মহান আল্লাহ একজন পুত্রের সকল কল্যাণ মা জননীর মধ্যে দিয়ে রেখেছেন। স্ত্রী ওখানেই সুযোগ নেয়। কি করে? স্বামীকে শাস্তি দিতে, স্বামীর বেহেশ্ত জান্নাত স্বামীর দুর্বলতা স্ত্রী জন্মদাত্রী মাকে, স্বামীর দিয়েই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে ছাড়ে। ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে মাকে বাড়ি ঘরের থেকে বাইর করে দিতে স্ত্রীর ষড়যন্ত্রে স্বামী বাধ্য হয়! কি ঠিক বলি নাই?? মাথায় যদি ঘিলু থাকে তবে বুঝে দেখুন পুরুষ সমাজের আমার প্রিয় ভাইরা। দাড়ান সবুর করেন, নারী-পুরুষ উভয়ের আক্রোশ এক, বোঝাতে আর মাত্র ছোট্ট করে দুইটা উদাহরণ দিচ্ছি। দেখুন নাটোর শহরের একটা উপজেলা পর্যায়ে এলাকার ভাড়াটিয়া দুই দম্পতি, স্ত্রী একটি কলেজের শিক্ষিকা সরকারি অধ্যাপক অর্থাৎ অর্থের দিক থেকে স্বাবলম্বী একজন প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষিকা। সম্মানীয়ও বটে। নাম খায়রুন নাহার। বয়স ৪০ – ৪২ বছর। স্বামী অন্য একটি কলেজের সম্ভবত ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। নাম মামুন হোসেন। বয়স ২২ বছর এবং সে বেকার। প্রতারক মামুন এই স্বাবলম্বী সম্মানীয় নারীকে, মহিলা থেকে সব দিকে অপরিপক্ক অউপযুক্ত তবুও মানবিক কষাঘাতে এমন ঠকানো ঠকালো নারী পেয়ে, যে তার জীবনটাই শেষ করে ছাড়লো!!! ১৪ই আগস্ট ২০২২ খায়রুন নাহার জঘন্য নিষ্ঠুর পাষণ্ড অন্যায়কারী লম্পট স্বামীর হাতে মৃত্যুবরণ করে। আইন আদালতে মামুনের সরাসরি দোষ না দিলেও সেই মেরেছে, ১০০ ভাগ সত্যি। মৃত ব্যক্তি কথা বলতে পারে না। প্রমাণ দিতে পারে না। এই সুযোগে কোনদিন মৃত ব্যক্তিকে জিতানো হয় না। চিরকাল নারীকে মেরে ফেলে আত্মহত্যা করেছে বলে কাটিয়ে দেওয়া হয়। পুরুষ শাসিত সমাজের জন্য এখানে নারীর বাদ প্রতিবাদ করার কোন উপায় থাকে না। তাই ওটাই মেনে নিতে হয়। আবার দেখুন দুর্বলতা কারে কয়: মা বাবা ভাইকে হারিয়ে মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে তোফাজ্জল হোসেন নামের শিক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বা বিশ্ববিদ্যালয় পাস একজন ছেলে! বয়স ৩৫ বছর। মোবাইল চুরির দোষ দিয়ে, কিছু ছেলেপেলে তাকে অ্যাটাক করে। মারধর করার একটা পর্যায়ে চাঁদা বা টাকা-পয়সার দাবি করে এবং ওর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার ঠিকানা বা মোবাইল নাম্বার চাই। ও বাঁচার আকুতি করে, মারধরের হাত থেকে বেহাই বা মুক্তি পেতে, ভাই তো মারা গিয়েছে। বাবা মাও নাই মারা গিয়েছে পরপর সকলেই ওকে ছেড়ে চলে গিয়েছে পরকালে। যার জন্যই আঘাতে এবং চিকিৎসার অভাবে ভারসাম্য হারিয়েছে। কারণ ও অসুস্থ ছিলো। সেই চিকিৎসা চলাকালীন তারা সবাই মারা গিয়েছে! তবুও উদ্ধারের আশায় বাঁচার স্বপ্নে তার ভাইয়ের স্ত্রী ভাবীর নাম্বার দিয়েছিল। ভাবি ওর বাচা চাই নাই। কারণ ও তো একমাত্র জীবিত থাকা ভাবির জঞ্জাল। ও মারা গেলে ওই সংসারের সব ভাবির হয়ে যায়। কাজেই সুযোগ নিয়ে দুর্বৃত্তদের মোবাইলেই বলে দেয়, তোফাজ্জল তো আসলেই চোর। আপনারা ওকে ছেড়ে দেবেন না, মেরে ফেলেন! ওর মত চোরের নাম নিতে চাই না। আপনারাও ওর পরিচয় আমাকে দেবেন না। দেখুন কি অবস্থা! মোবাইলে এমন ইনধন পেয়ে, মারতে মারতে ওকে একেবারেই মেরে ফেলেছিল! স্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল। তারিখ ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং সাল। তাহলে শুধু কি পুরুষই নিষ্ঠুর! পুরুষই অন্যায় করে?! না। নারীও নিষ্ঠুর আছে খুনি আছে, আছে অন্যায়কারী। যারা পুরুষের মারে এবং নারীরও আঘাত করে, মারে। ফেসবুকেই দেখবেন নারী নারীকে কিভাবে মারছে! যদিও ষড়যন্ত্র করে পুরুষ করাচ্ছে! পুত্রর দিয়ে আপন মায়েরে সরিয়ে দেয়, ঘায়েল করায়, নারীর দিয়েও নারীরে মারাই। পুরুষের খুশি করতে শান্তি দিতে নারী নারীর শত্রু হয়, এটা সচেতন নয়, বোকার কারণে। বোকাটা গবেষণার মধ্যে এসেছে! যা- যে কারো পক্ষে বোঝা অসম্ভব! প্রকৃত অর্থে বলতে চাই শুধু নারী নয়, নিষ্ঠুর এবং অন্যায়ী নারী-পুরুষ উভয়ে। যে যেখানে যাকে দুর্বলতার সুযোগ পায়, যেখানে দুর্বলতা আছে, সেখানেই অন্যায় বাসা বাঁধে। অন্যায়কে ঘিরেই বৈষম্য বিভেদ পার্থক্য আলাদা ভিন্নান্তর এই সমস্ত শব্দের উৎপত্তি। সেটা শুধু পুরুষ নয় নারী পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে। এই সমস্ত সমস্যার সমাধান খুবই সহজ। শুধু মানুষকে মানুষের স্বীকৃতি দিতে হবে, দুনিয়াটা দুদিনের এটা মনে প্রানে গেথে। তাই অহংকার আহম্মুকি বাদ দিয়ে একটু একঘেয়েমি কাটিয়ে মানিয়ে নিতে হবে। চাইলেই কিন্তু করা সম্ভব। আসুন না হিংসা বিদ্বেষ পিছনে ফেলে, একে অপরে ঠকানোর চিন্তাভাবনা পিছনে ঠেলে, ভালো কাজে এগিয়ে যায়। জাতি ধর্ম দল-মত নারী-পুরুষ কালা ধলা ধনী গরিব নির্বিশেষে, বিভেদ ভুলে, সমস্যার সমাধান করে, আমরা সকলেই ভাল থাকি। স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি পৃথিবীর উপরে মানুষ সবাই সমান। কেউ আলাদা নয়। আল্লাহর কাছে এবং আমাদের কাছেও সেটাই হোক। আল্লাহ কবুল করুন। আমীন।

১৫.১১.২০২৫ইং, সন্ধ্যা ৭টা, শনিবার।

Related Articles

Back to top button