
টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: কাল ১৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী মামলার রায় ঘোষনাকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ঢাকা। ১৩ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ ঢাকা লকডাউন ঘোষণা দিয়েছে এবং তারা যে কোন মুল্যে এ কর্মসূচি সফর করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছে। এরপরই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি হাতবোমা (ককটেল) বিস্ফোরণ ও ১০টি যানবাহনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়াও রাজধানীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে হাতবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হয়ে চালক জুলহাস মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। তবে দেশে নাশকতার কোনো শঙ্কা নেই। সারাদেশে শক্ত অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হাতবোমা (ককটেল) বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার করতে পুলিশ ও র্যাব অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও সারাদেশে চলমান বিভিন্ন সহিংসতা, অগ্নিসংযোগের মতো নাশকতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশের সব বিমানবন্দরকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
জানা গেছে, রাজধানীর সূত্রাপুরে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আবারও মালঞ্চ বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পরে ফায়ার সার্ভিসের এক ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সূত্রাপুরে মালঞ্চ বাস পার্ক করা অবস্থায় ছিল। দুর্বৃত্তরা আগুন দিলে আমাদের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কীভাবে আগুন লেগেছে প্রাথমিকভাবে তা জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। এর আগে সোমবার দিনগত রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, উত্তরা ও বসুন্ধরা এলাকায় রাইদা পরিবহনের দুটি ও রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। তার আগে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে শান্ত মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি চলন্ত বাসে আগুন লাগে। এদিন ভোরে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় দুটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
জানা গেছে, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বর ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীসহ সারা দেশে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সম্ভাব্য নাশকতা প্রতিরোধে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান, বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি ও সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলটির পলাতক নেতাকর্মীরা নানা ধরনের উসকানি ও হুমকি ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। লকডাউন সফল ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার লক্ষ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হাতবোমা (ককটেল) বিস্ফোরণ ও যানবাহনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এরমধ্যে রাজধানীর ১৫ স্থানে ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া গত দুই দিনে ৯টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত প্রায় ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অপরদিকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অপচেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে। অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ১৪টি ঝটিকা মিছিল করে তারা এবং স্বল্পস্থায়ী এসব ঝটিকা মিছিলের ছবি সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে। অক্টোবর থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ঝটিকা মিছিলের পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অংশগ্রহণকারী ৫৫২ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি। গ্রেফতারদের কাছে পাওয়া তথ্য এবং পরিচয় যাচাই করে দেখা যায়, তাদের অধিকাংশই ঢাকার বাইরে থেকে আসা। অর্থের বিনিময়ে তারা ঢাকায় এসে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণ করে এবং আবার ঢাকার বাইরে চলে যায়। গত কয়েকদিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, হেলমেট ও মাস্ক পরে তারা ভোর বা দিনের ব্যস্ত সময়ে টার্গেটকৃত স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। অনেক ক্ষেত্রে তারা এই কাজে অপ্রাপ্ত বয়স্কদেরও ব্যবহার করছে।
এর আগের ডিএমপি সদরদফতরে এক জরুরি বৈঠকে ৫০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে এবং গ্রেফতার অভিযান জোরদার করতে। পরদিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সাত হাজার পুলিশ সদস্যের টহল ও মহড়া শুরু হয়। র্যাব ও বিজিবির সদস্যরাও প্রস্তুত রয়েছে যেকোনও সহিংসতা প্রতিরোধে। গত ১০ নভেম্বর থেকে ঢাকার প্রবেশপথ, হোটেল, মেস এবং বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোতে বিশেষ তল্লাশি শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে সাইবার মনিটরিং, গ্রেফতার অভিযান ও টহল বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদরদফতর সব থানাকে নির্দেশ দিয়েছে যেন বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঢুকতে না পারে। এজন্য গণপরিবহন, রেল ও নৌপথেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচি মূলত রাজনৈতিক প্রতীকী প্রতিবাদ হলেও এর আড়ালে থাকতে পারে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কৌশল। তাদের মতে, আওয়ামী লীগের লকডাউন কোনও বাস্তব আন্দোলন নয়, বরং এটা তথ্যযুদ্ধের অংশ। সরকার ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মনোযোগ সরিয়ে দেওয়ার জন্য এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরে এখন তাদের সংগঠিত কোনও শক্তি নেই। তবে, গুজব বা অনলাইন প্রচারণা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। তাই গোয়েন্দা নজরদারি ও জনসচেতনতা দুটোই এখন সমান জরুরি বলে মত তাদের।
গতকাল মঙ্গলবার বেবিচকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মাদ কাউছার মাহমুদ বলেন, দেশের বিমানবন্দরগুলোতে সতর্ক থাকার বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে বেবিচক। এতে বলা হয়, সব বিমানবন্দরের সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি, ভেহিক্যাল পেট্রোল, ফুট পেট্রোল বাড়ানোসহ মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। সম্ভাব্য অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক সব ধবনের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি রাখতে হবে। এ ছাড়া সব বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ জনবল রাখা এবং সার্বিক ফায়ার সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রমও জোরদার করতে বলা হয়েছে চিঠিতে। চিঠিতে আরও যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে; ক. কেপিআই নিরাপত্তা নীতিমালা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। খ. বিমানবন্দরে শুধু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অনুমোদিত যাত্রীদের প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং জনসাধারণের প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। গ. বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখতে হবে। ঘ. বিমানবন্দরের প্রবেশ ও প্রস্থান পথে র্যান্ডম নিরাপত্তা তল্লাশি করতে হবে। ঙ. যাত্রী, ক্যাবিন ব্যাগেজ, কার্গো ও যানবাহনের যথাযথ তল্লাশী নিশ্চিত করতে হবে। চ. বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে স্পর্শকাতর এলাকা ও সীমানা প্রাচীর এলাকায় নিয়মিত ও ঘন ঘন নিরাপত্তা টহল পরিচালনা করতে হবে। ছ. নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি (যেমন- স্ক্যানার, মেটাল ডিটেক্টর, সিসিটিভি ইত্যাদি) প্রতিদিন পরীক্ষা করে তাদের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে। জ. দায়িত্ব পালনের পূর্বে নিরাপত্তা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিতভাবে ব্রিফিং প্রদান করে সর্বদা সতর্ক অবস্থায় রাখতে হবে। ঞ. কোনো সন্দেহজনক ব্যক্তি, বস্তু বা কার্যকলাপ শনাক্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। ট. সিসিটিভি মনিটরিং সেল ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় রাখতে হবে এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঠ. গ্যাস লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনাসমূহ পরিদর্শনপূর্বক অগ্নি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ড. বিমানবন্দরের অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রস্তুতি ও সতর্কতা ২৪/৭ সক্রিয় রাখতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, আগামী ১৩ নভেম্বর ঘিরে কোনো শঙ্কা নেই এবং যেকোনো নাশকতার ষড়যন্ত্র ঢাকাবাসী রুখে দেবে। মোটরসাইকেলে করে এসে একটি বা দুইটি ককটেল মেরে যারা পালিয়ে যাচ্ছে, অনতিবিলম্বে আমরা তাদের ধরে ফেলব। ঢাকাবাসীই এই নাশকতা রুখে দেবে। অতীতে যেসব স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে, সেসব দলের নাশকতা ঢাকাবাসীই মোকাবেলা করেছে। এবারও ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও অন্যান্য সংস্থা সম্মিলিতভাবে এটাকে রুখে দেবে। ভয়ের কোনো কারণ নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ১৩ নভেম্বর আরও বাড়বে। প্রতিনিয়ত পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত দলের অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেক সন্ত্রাসী ছাড়া পেয়েছেন, তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে, ডিএমপি সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, ঢাকা মহানগরীতে অপরাধ খুবই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে যে হারে ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধ হচ্ছিল, সেসব ঘটনার ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। উচ্চ আদালতে নিরাপত্তা নিয়ে আইনজীবীদের শঙ্কা আছে, বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, উচ্চ আদালত মানুষের বিচার পাওয়ার জায়গা। সেখানে যেতে আমরা কাউকে বাধা দিতে চাই না। তবে ১৩ নভেম্বরের আগেই সেখানে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবো। তবে আমরা এমন কিছু করতে চাই না, যেটাতে বিচারপ্রার্থীরা হয়রানির শিকার হন।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা পুরো ঢাকা মহানগরীকে একটা নেটওয়ার্কের মধ্যে আনার জন্য কাজ করছি। ঢাকাকে স্মার্টসিটি হিসেবে গড়ে তুলতে একটা প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। এখানে আর্থিক বিষয় আছে, প্রায় ১২০০ কোটি টাকার প্রকল্প এটি। এই প্রকল্পটি পাস হলেই পুরো শহর সিসি ক্যামেরার আওতায় চলে আসবে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান শফিকুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গোষ্ঠী নাশকতার হুমকি দিচ্ছে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে মাঠে আছি। কেউ যদি নাশকতার চেষ্টা করে, কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এমজেডএম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, আগামীকাল ১৩ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে আমরা সাইবার মনিটরিং, টহল এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করেছি। এটি গুজব হোক বা বাস্তব পরিকল্পনা—আমরা প্রতিটি তথ্য যাচাই-বাছাই করছি। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা সতর্ক আছি। র্যাব ও পুলিশ উভয় সূত্রই মনে করছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এখন বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টির সক্ষমতা নেই, তবে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ও উসকানিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে।
পুলিশ সদরদফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসেন বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আগাম তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। কেউ অবৈধ কর্মকাণ্ড, নাশকতা বা সংঘর্ষের চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকার পালিয়ে গেছে গণমানুষের প্রতিরোধে। এখন তারা বিদেশ থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তবে জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে এবং থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ১৩ নভেম্বরকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ এক ধরনের বিশৃঙ্খলা এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম করার চেষ্টা করছে। এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৯টি বাসে আগুন দিয়েছে। একজনকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। সে ডেমরা এলাকায় থাকে। তার বাড়ি গোপালগঞ্জে। এছাড়া ময়মনসিংহে একজন বাসচালককে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে। সবগুলো নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের কাজ।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত অবস্থানে রয়েছে, ওইদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে উপদেষ্টা এ কথা জানান। তিনি বলেন, সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানান। সন্ত্রাসীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। আগামী ১৩ তারিখ ঘিরে আমাদের কার্যক্রম চলছে। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই আমাদের পুলিশকে সবাই সেটা জানান।



