ঢাকা ১৭ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তপু রায়হানের নির্বাচন ঘোষণা

মাখদুম সামি কল্লোল: শহীদ চলচ্চিত্রকার ও সাহিত্যিক জহির রায়হানের সন্তান তপু রায়হান আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।
রবিবার ৯ নভেম্বর রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
লিখিত বক্তব্যে তপু রায়হান বলেন, “আমাদের দরকার দুর্নীতিমুক্ত, দলীয়করণমু’ ক্ত, রাজনৈতিক এজেন্ডামুক্ত—সত্যিকারের জনকল্যাণমুখী ও সৃজনশীল একটি সরকার ও প্রশাসন।”
তিনি জানান, তিনি ঢাকা-১৭ আসন (গুলশান, বনানী, মহাখালী, ক্যান্টনমেন্ট, শাহজাদপুর, ভাষানটেক ও কড়াইল বস্তি এলাকা) থেকে প্রার্থী হচ্ছেন। তপু রায়হান বলেন, “ঢাকা ১৭ আসনের সমস্যা—বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের সমস্যা—সঠিকভাবে চিহ্নিত করা ও তার সমাধানের পথ নির্ধারণ করতে পারলে এটি সারা দেশের জন্য একটি কার্যকর মডেল হতে পারে।”
তপু রায়হান জানান, তিনি এলাকাভিত্তিক ইশতেহার তৈরি করছেন এবং নির্বাচনী টিম নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করছেন। নভেম্বরের মধ্যেই তিনি প্রতিটি এলাকার জন্য আলাদা ইশতেহার প্রকাশ করবেন, যা তার মূল নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত হবে।
সহযোগিতামূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চান জানিয়ে তপু রায়হান বলেন, “আমি আমার ইশতেহার নিয়ে ঢাকা-১৭ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীর কাছে যাব। যদি কোনো প্রার্থী আমার ইশতেহারের কোনো অংশের সঙ্গে একমত হন, আমি অনুরোধ করব নির্বাচিত হলে সেটি বাস্তবায়নে কাজ করতে। একইভাবে, অন্য প্রার্থীর কোনো প্রতিশ্রুতি যদি আমার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, আমি তাকে সাধুবাদ জানাব এবং ভোটারদের কাছেও তার কথা বলব।”
তিনি আরও বলেন, “আমি যদি নির্বাচনে পরাজিতও হই, তবুও বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে এলাকার উন্নয়ন ও সংস্কারে একযোগে কাজ করব।”
নিজের নির্বাচনী কৌশল প্রসঙ্গে তপু রায়হান জানান, “ইশতেহার তৈরির পর আমরা পলিসি তৈরির কাজ শুরু করব। স্বাস্থ্য, শিক্ষা বা অবকাঠামো—যে ক্ষেত্রেই সমস্যা চিহ্নিত হবে, আমরা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসব।” তিনি বলেন, একটি উপদেষ্টা মণ্ডলী গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেখানে বিশেষজ্ঞরা থেকে নির্বাচনী ও প্রশাসনিক নীতি নির্ধারণে সহায়তা করবেন।
তপু রায়হান বলেন, “আমি চাই, ঢাকা-১৭ আসনের মানুষ সরাসরি জানুক আমি কী কাজ করছি এবং কীভাবে করছি। সাধারণ মানুষ আমাকে সরাসরি পাবেন, মতামত জানাতে পারবেন। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়েই কাজ করব এবং সত্যিকারের অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই।”
তিনি আরও যোগ করেন, “নির্বাচনে জয় আমার একমাত্র লক্ষ্য নয়; বরং মানুষের সঙ্গে সংযোগ তৈরি, তাদের সমস্যা বোঝা এবং অংশগ্রহণমূলক উন্নয়নের একটি মডেল গড়ে তোলা—এই লক্ষ্য নিয়েই আমি রাজনীতিতে এসেছি।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষে তপু রায়হান বলেন, “আমাদের রাজনীতি ক্রমশ সংঘাতময় হয়ে উঠেছে। কেউ কারো কথা শুনছে না। অথচ সমাজে টিকে থাকার মূল ভিত্তি হলো সহযোগিতা। আমি বিশ্বাস করি, ভিন্নমতকে সম্মান জানিয়ে সকল শ্রেণি-পেশার, ধর্ম ও মতাদর্শের মানুষের অংশগ্রহণে একটি কল্যাণমুখী রাজনীতি গড়ে তোলা সম্ভব।”
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ জহির রায়হানের স্ত্রী, চলচ্চিত্রাভিনেত্রী, প্রযোজক ও পরিচালক কোহিনূর আক্তার সুচন্দা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তপু রায়হানের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর, ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটর এবং পলিসি অ্যাডভাইজার।



