বাংলাদেশ

রাস্তা খোঁড়াখুড়ি, জলাবদ্ধতা ও যানজটে বিপর্যস্ত খিলক্ষেতবাসী!

এস.এম.নাহিদ : রাজধানীর খিলক্ষেত থানা এলাকা এখন উন্নয়ন কাজের নামে দুর্ভোগের আরেক নাম। লাগামহীন রাস্তা খোড়াখুড়ি, ভয়াবহ জলাবদ্ধতা ও তীব্র যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন ধরে চলা এসব কাজের কারণে খিলক্ষেত থেকে ডুমনী, পাতিরা, মস্তুল, ঢেলনা ও তলনাবাসী কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

খিলক্ষেতের দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে প্রবেশের তিনটি প্রধান পথের মধ্যে দুটি এখন সম্পূর্ণ বন্ধ। স্বদেশ বরুয়া হয়ে খিলক্ষেতগামী রাস্তা এবং ৩০০ ফিট সড়কের পূর্বনামাপাড়া পানিরপাম্প হয়ে খিলক্ষেতে প্রবেশপথ,উভয়ই খোড়াখুড়ির কারণে চলাচলের অযোগ্য। ফলে মানুষ এখন বাধ্য হয়ে ৩০০ ফিট কুড়িল থেকে বেপারীপাড়া হয়ে কাদা-পানি ভেঙে খিলক্ষেতে যাতায়াত করছেন।খিলক্ষেত বটতলা থেকে মোহাম্মাদি গার্মেন্টস হয়ে খা-পাড়ার রাস্তাগুলোর অবস্থাও নাজুক। সামান্য বর্ষাতেই হাঁটু সমান পানি জমে থাকে। উত্তরপাড়া, মধ্যপাড়া, বেপারীপাড়া, বোটঘাট থেকে বাঁশতলা পর্যন্ত প্রায় সব রাস্তাই খোড়াখুড়ির কারণে বন্ধ। একই অবস্থা বরুয়া পশ্চিমপাড়া, বাগানবাড়ি, লঞ্জনীপাড়া, বরুয়া বাজার, বড়বরুয়া, সিলনপাড়া ও স্বদেশ ৩০০ ফিট এলাকার রাস্তাগুলোর।গোটা এলাকার মধ্যে কেবল খিলক্ষেত বাজারের মূল রাস্তা কিছুটা চলাচলের উপযোগী আছে। কিন্তু সেই রাস্তায় আবার তৈরি হয়েছে তীব্র যানজট। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছেন যাত্রীরা। বিকল্প রাস্তা না থাকায় এই একটিমাত্র পথই এখন হাজারো মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন-রাস্তাঘাটের এমন অবস্থা আগে কখনো দেখিনি। উন্নয়ন কাজ হচ্ছে, কিন্তু জনগণের দুর্ভোগের কথা কেউ ভাবছে না।এলাকার গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ রোগীদের জন্যও পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে ভয়াবহ। মস্তুল আমতলা থেকে ঢেলনা ও তলনাবাসীর একমাত্র রাস্তাটিও এখন প্রায় চলাচলের অযোগ্য।ওয়াসা, সিটি করপোরেশন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এই দুরবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁরা বলেন,এটা কোন উন্নয়ন নয়, চলছে অব্যবস্থাপনার মহোৎসব।প্রতিদিন খবরের কাগজে উন্নয়ন শব্দটি যতটা ঝলমলে,বাস্তবে খিলক্ষেতে ততটাই মলিন। যেসব সংস্থা কাজ করছে, তাদের মধ্যে যেন কোনো সমন্বয় নেই; এক পক্ষ রাস্তা খুঁড়ছে, আরেক পক্ষ সেটি আবার ভরাটের আগেই নতুন করে কাটছে। এই বিশৃঙ্খলার দায় কেউ নিতে চায় না।

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, রাজধানীর দরজায় বসে এমন দুর্ভোগ পুরো নগর পরিকল্পনার এক নগ্ন ব্যর্থতা। উন্নয়ন মানে শুধু রাস্তা খোঁড়া নয়, মানুষের জীবনে স্বস্তি ফেরানো-অথচ সেই মানুষই এখন সবচেয়ে বেশি কষ্টে।তবে খিলক্ষেতের মানুষের একটাই প্রত্যাশা-প্রশাসন দ্রুত মাঠে নামুক, সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এই দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগের অবসান ঘটাক। উন্নয়ন শুধু প্রকল্পের বোর্ডে নয়, উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছাক মানুষের জীবনে।

Related Articles

Back to top button