ক্ষমতাচ্যুত অলির দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক
বৈঠকে জেন-জি প্রতিনিধিরাও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত মাসে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভ প্রতিবাদের মুখে সরকার পতনের পর ক্ষমতায় আসা নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি প্রথমবারের মতো দেশটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জেন-জি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে জেন-জি আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির রাজনৈতিক দল কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট) প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়েছেন।বৃহস্পতিবার দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের বৈঠকের তথ্য জানিয়েছেন বলে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও তরুণদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে সুশীলা কার্কি বলেছেন, ‘‘সংলাপের অভাবের অবসান ঘটিয়ে আমরা সহযোগিতা ও আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে সফল হয়েছি।’’সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারির পর গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর দেশটিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু হলেও পরবর্তীতে তা দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে রূপ নেয়। জেন-জি নেতৃত্বাধীন দুই দিনের সেই বিক্ষোভে অন্তত ৭৩ জন নিহত হন। এছাড়া দেশটির পার্লামেন্ট, আদালত ও সরকারি বিভিন্ন অফিসে আগুনে পুড়িয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।
তরুণদের বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক প্রধান বিচারপতি ৭৩ বছর বয়সী কার্কি। আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত হিমালয় কন্যা-খ্যাত নেপালের নেতৃত্ব দেবেন তিনি। বুধবার তরুণ প্রতিনিধিদের সঙ্গে চার ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন তার কার্যালয়ের গণমাধ্যম সমন্বয়ক রাম রাওয়াল।তিনি বলেন, আগামী বছরের মার্চের নির্বাচন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করাই বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে নেপালের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগণের গভীর অনাস্থা দূর করাই হবে কঠিন কাজ।
কার্কির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সব প্রধান রাজনৈতিক দল এবং কয়েকজন জেন-জি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির দল কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (ইউনিফায়েড মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট) প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়েছেন।
রাওয়াল বলেন, বিক্ষোভের পর তাদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। এই বৈঠক আসন্ন নির্বাচনের জন্য আস্থার পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে কার্কি লিখেছেন, ‘‘নতুন প্রজন্ম, রাজনৈতিক দল ও সরকার—সবার লক্ষ্য এক; অবাধ, নিরাপদ ও সময়মতো নির্বাচন আয়োজন করা।’’
দেশে আইনশৃঙ্খলা ও সুশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নেওয়া সব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করবেন বলেও অঙ্গীকার করেছেন তিনি। বৈঠকের পর দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী জগদীশ খারেল সাংবাদিকদের বলেছেন, বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে।গত সেপ্টেম্বরের অস্থিতিশীলতায় নেপালের নড়বড়ে অর্থনীতির জন্য বিশাল ধাক্কা তৈরি করেছে। নেপালের জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে দেশটির ৮২ শতাংশ শ্রমশক্তি অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। আর ২০২৪ সালে মাথাপিছু জিডিপি ছিল মাত্র ১ হাজার ৪৪৭ ডলার।
সূত্র: এএফপি।



