বাংলাদেশ

বিআইডব্লিউটিসিতে বদলিকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, দপ্তর ঘেরাও

মাখদুম সামি কল্লোল: বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন রবিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে ফেয়ারলী হাউজ, টিসি’র প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

বিক্ষোভের সূত্রপাত ঘটে সম্প্রতি জারি করা এক বদলি আদেশকে কেন্দ্র করে। গত ২৩ অক্টোবর বিআইডব্লিউটিসির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) স্বাক্ষরিত এক দপ্তর আদেশে সিপিএম ফজলে রাব্বীকে সিপিও এবং সিপিও মানসুরা আহমেদকে সিপিএম হিসেবে বদলি করা হয়।

এই আদেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে শ্রমিকরা বলেন, কথিত ‘শ্রমিক-বান্ধব কর্মকর্তা’ ফজলে রাব্বীকে সরিয়ে দেওয়া অন্যায় সিদ্ধান্ত। তারা মানসুরা আহমেদকে সিপিএম পদে না করার দাবি জানায়।

রোববার ২৬ অক্টোবর সকালে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিআইডব্লিউটিসির এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন। এসময় শ্রমিক কর্মচারীগণ তিনটি দাবি উত্থাপন করে, ১. গত ২৩/১০/২০২৫ ইং তারিখের দপ্তরাদেশ নং ৩৮/২০২৫ এ জনাব মোঃ ফজলে রাব্বি এং মানসুরা আহমেদ এর বদলী আদেশ বাতিল করতে হবে। ২. অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন বিআইডব্লিউটিএ এর সমান করতে হবে। ৩. শ্রম নীতিমালা বর্হিভূত অতিরিক্ত সময় কাজের জন্য এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্য ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা চেয়ারম্যান দপ্তর ঘেরাও করে তালা ঝুলিয়ে দেয়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে যখন কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেন— মানসুরা আহমেদকে ওই দিনই ওএসডি করা হয় এবং ফজলে রাব্বীকে সিপিএম পদে বহাল রাখা হয়।

শ্রমিক নেতারা জানান, বিগত সরকার আমলে প্রশাসনিক অদক্ষতা ও পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে বিআইডব্লিউটিসির কর্মচারী বিভাগে ব্যাপক অনিয়ম ঘটে। অনেক শ্রমিক ও কর্মচারী পদোন্নতি ও অবসরজনিত আর্থিক সুবিধা পেতে হয়রানির শিকার হন।

তারা আরও বলেন, “এই বিভাগের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে শ্রমিক ও কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত নথি, এসিআর এবং অবসর সংক্রান্ত দেনাপাওনা সংরক্ষণ করা হয়। অতীতে যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থক বা সুবিধাভোগী ছিলেন, তাদের দ্বারা এই বিভাগে শ্রমিকরা নিগৃহীত হয়েছে। তাই এ ধরনের ব্যক্তিকে আর এই পদে নিয়োগ দিলে পরিস্থিতি আবারও অস্থিতিশীল হতে পারে।”

বিক্ষোভ শেষে চেয়ারম্যান শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা কর্মস্থলে ফিরে যান।

উল্লেখ্য, মানসুরা আহমেদ এর আগে ৫ জুলাই পর্যন্ত সিপিএম পদে ছিলেন, পরে তাকে সিপিও করা হয়। অপরদিকে, ফজলে রাব্বী তখন সিপিও পদে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে উপদেষ্টার সুপারিশে মানসুরাকে পুনরায় সিপিএম পদে পদায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বলে জানা যায়।

শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী বা সুবিধাভোগীদের পুনরায় গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে পদায়ন করা হলে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হবে। আমরা চাই, এই বিভাগে প্রকৃত শ্রমিকবান্ধব কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করুন।”

Related Articles

Back to top button