চরফ্যাশন শহর এখন যানজটের নগরী/ হকার আর অবৈধ পার্কিংয়ে স্থবির প্রধান সড়ক

মীর সাজু চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার চরফ্যাশন শহরের প্রধান সড়কটি বর্তমানে হকার ও যানবাহন চালকদের দখলে। সড়কের দু’পাশে অস্থায়ী দোকান, অবৈধ পার্কিং এবং যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই যানজটে পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষ, রোগী ও সাধারণ জনগণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌর শহরের জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে আধুনিক হাসপাতাল পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে যত্রতত্র অটোরিকশা ও সিএনজির পার্কিং রয়েছে। ফুটপাত তো বটেই, রাস্তার একাংশ দখল করে বসানো হয়েছে চায়ের দোকান, ফল বিক্রেতা ও নানা পণ্যের অস্থায়ী দোকান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যানজটের কারণে কর্মজীবী মানুষ সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে পারছেন না, শিক্ষার্থীরা দেরিতে স্কুলে যাচ্ছে। রোগীদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে গিয়ে দীর্ঘ সময় আটকে থাকছে। গর্ভবতী নারী ও বয়স্ক রোগীদের জন্য এই যানজট জীবনসংকটে পরিণত হচ্ছে।
যদিও পৌর কর্তৃপক্ষ আগে যানজট নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছিল, বর্তমানে তা স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রায় এক বছর আগে হকার উচ্ছেদ ও পার্কিং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিযান চালানো হয় এবং যানবাহনের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চালকরা তা মানছেন না, ফলে পরিস্থিতি আবারও বেহাল হয়ে উঠেছে।
মোটরসাইকেল চালক বেল্লাল বলেন, হাসপাতাল রোড থেকে মেইন সড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট থাকে। জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা যেতে পারি না, বাইপাস সড়ক দিয়ে ঘুরে যেতে হয়।
অটোরিকশা চালক ইব্রাহিম বলেন, নির্ধারিত স্থানে যাত্রী পাওয়া যায় না, তাই বাজারের মধ্যে পার্কিং করি।
ব্যবসায়ী আবু সিদ্দিক বলেন, হকাররা দোকানের সামনে জায়গা দখল করায় ক্রেতারা ঢুকতে পারে না, এতে আমাদের ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অন্যদিকে ফল বিক্রেতা কামাল বলেন, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ, নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে বসি।
হকার শাহিন বলেন, পৌরসভা যদি হকার জোন করে দেয়, তাহলে আমরা সড়ক দখল না করেই ব্যবসা করতে পারব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রাসনা শারমিন মিথি বলেন, সড়কের দুই পাশে হকার ও যানবাহনের পার্কিংয়ের কারণে জনদুর্ভোগ হচ্ছে। পূর্বেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, এখন আরও জোরালোভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।