
টাইমস ২৪ ডটনেট :ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)’র ১৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত।শনিবার ১৯ জুলাই সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)’র ১৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও কেক কাটার আয়োজন করে ।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এবং জনতা পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান, গোলাম সরোয়ার মিলন।প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সকল জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অতিসত্বর নির্বাচন করার লক্ষ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতীয় ঐক্যের বিপরীতে বিভাজন ফ্যাসিবাদকে আবার পুনরবাসিত করবে।বর্তমান সৃষ্ট অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা রাজনৈতিক দলের অনৈক্যের কারণে বাংলাদেশকে গভীর সংকটে ফেলবে। এটা হলে জুলাই শহীদদের প্রতি শুধু বিশ্বাসঘাতকতাই নয় গণতন্ত্র উত্তরণের পরিবর্তে বাংলাদেশ হবে বিদেশী শক্তির স্বার্থ হাসিলের উর্বর স্থান।
তিনি আরো বলেন, ঐক্যমত প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার অনেক নিবন্ধিত দলকে বাদ দিয়ে আলোচনা করছে। নবগঠিত অনেক দল যারা অতীতে রাষ্ট্র গঠনে সফল ভূমিকা রেখেছে তাদেরকেও আলোচনায় ডাকছেনা। তাই বর্তমান সরকারকে পরামর্শ দিব বিগত দিনগুলোতে আলোচনার সংস্কৃতি তৈরি করে সরকার একটি ইতিবাচক স্থান করেছেন। তার পাশাপাশি যারা আলোচনায় ছিলেন না তাদেরকে ডেকে কথা বলে শক্তিশালী কার্যকর জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আলোচনা সভায় এনপিপি’র আহবায়ক জাতীয় নেতা আলহাজ্ব শেখ ছালাউদ্দিন ছালু সভাপতিত্ব করেন পরে অনুষ্ঠানে কেক কাটা হয়।
সভাপতির বক্তব্যের শুরুতেই জাতীয় নেতা আলহাজ্ব শেখ ছালাউদ্দিন ছালু গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জাতীয় নেতা মরহুম শেখ শওকত হোসেন নিলুকে। তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করার পাশাপাশি তিনি এনপিপি’র প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত যেসকল নেতৃবৃন্দ মৃত্যুবরণ করেছেন এবং বাংলাদেশে সকল অধিকার আদায়ে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
১৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এনপিপি’র সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক শুভানুধ্যায়ী ও দেশবাসীকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা জানেন ২০০৭ সালের এই দিনে জাতীয় নেতা মরহুম শেখ শওকত হোসেন নিল’বু নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে আত্ম প্রকাশ করে এনপিপি। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। হাঁটি হাঁটি পা পা করে দলটি ১৮ বছর পার করে আজ ১৯ বছরে পদার্পন করলো। এই স্লোগানের ভিত্তিতে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় এনপিপির কমিটি গঠন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের পরে অর্ন্তবর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই সরকারের কাছে জনগণের অনেক আশা ভরসা ছিলো। অনেকগুলো সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশ একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতো। কিন্তু বর্তমানে এই আন্দোলনের যে চালিকাশক্তি তার মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। তারা ঐক্যমত কমিশনে আলোচনা করে কোন ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছে না। তার কারনেই জনগণ হতাশ এবং সারা বাংলাদেশে এখন গনতন্ত্রের পরিবর্তে মবতন্ত্র চলছে। জনগণ এর থেকে মুক্তি চায়।
তিনি আরো বলেন, অনেক দলের নেতারা জাতীয় সরকার গঠনের কথা উত্থাপন করেছে। আমি দেশের স্বার্থে এই জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই। কিন্তু জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠা করা দরকার। আর জাতীয় সংসদ প্রতিষ্ঠা করতে হলে পিআর পদ্ধতির কোন বিকল্প নাই।
পরিশেষে আমি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে বলতে চাই, দ্রুত সংস্কার ও জুলাই সনদ ঘোষণা করে নির্বাচনের তারিখ দিতে। যাতে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গনতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং গনতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)’র সভাপতি এ কে এম মহিউদ্দিন আহাম্মেদ (বাবলু), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)’র যুগ্ম আহবায়ক মর্জিনা খান আঞ্জু, ডাঃ মোঃ আলতাফ হোসেন, ন্যাপ ভাসানীর মহাসচিব মোঃ জহিরুল ইসলাম, এনপিপি ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মোঃ গিয়াস উদ্দিন, এনপিপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য নূরুল ইসলাম খোকন, জিয়া জামান খান প্রিন্স, শফিউল আলম রাকু, সাহেব আলী হাওলাদার রনি, রাজ্জাক হোসেন মিঠু, মোঃ নাজিম উদ্দিন, মোঃ ইকবাল হোসেন, সাবিনা জাবেদ, মোশারফ হোসেন লিটন, মাহবুব মোড়লসহ এনপিপির কেন্দ্রীয় ও অংঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।