
এস.এম.নাহিদ :রাজনীতি ও অপরাধ দুটি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ক্ষেত্র। রাজনীতিতে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রায়ই একে অপরের সাথে জড়িত থাকে। রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে অপরাধমূলক কার্যকলাপ করা হতে পারে, আবার অপরাধীরা রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে।
অন্যদিকে, অপরাধীরাও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করে নিজেদের রক্ষা করতে বা রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে নিজেদের অপরাধমূলক কার্যকলাপকে বৈধতা দিতে চেষ্টা করে। এটি ‘অপরাধী রাজনীতি’ নামে পরিচিত।রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে অপরাধমূলক কার্যকলাপের কারণে সমাজে অস্থিরতা, অন্যায়, এবং আইনের শাসনের প্রতি অশ্রদ্ধা দেখা যায়। তাই রাজনীতি ও অপরাধের মধ্যে সম্পর্ক বোঝা এবং এই সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা বর্তমানে নানা অপরাধ ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি কিছু রাজনৈতিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ভূমি দখলসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে – কেন রাজনীতির সঙ্গে এমন অপরাধ জড়িয়ে পড়ছে?
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মীদের জন্য সুনির্দিষ্ট কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারছে না। ফলে তারা বেকার থেকে ধীরে ধীরে ভুল পথে চলে যাচ্ছে।আবার কিছু নেতা রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে অপরাধীদের আশ্রয় দিচ্ছেন যেটি দলের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।রাজনীতি যেন জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়, সেটাই হওয়া উচিত সকল রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্য। সচেতন জনগণ কোন প্রতিশ্রুতি নয় – বাস্তবে কাজ দেখতে চায়।
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবমূর্তি ও গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখতে হলে দলের ভেতরে অপরাধ প্রবণতা চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। নেতারা যদি জনগণের দুর্ভোগ উপলব্ধি করে সমস্যার সমাধানে এগিয়ে না আসেন, তাহলে আগামী দিনের রাজনীতিতে জনগণই জবাব দেবে। রাজনীতি কোনো দলের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। বরং জনগণের সেবায় নিবেদিত একটি পবিত্র দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে শুধু দল নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে গোটা গণতন্ত্র। তাই এখনই সময় আত্মশুদ্ধির, এখনই সময় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক রূপান্তরের।