বাংলাদেশ

রাষ্ট্রের টাকায় রাজা আ.লীগ নেতা সালামত উল্ল্যাহ এখন পলায়নের পথে !

এস.এম.নাহিদ :রাজধানীর খিলক্ষেত পূর্ব নামাপাড়া এলাকায় বসবাসকারী সাবেক ভূমি কর্মকর্তা ফেনী ফুলগাজীর ফ্যাসিষ্ট হাসিনার আশির্বাদপুষ্ট আ.লীগ নেতা সালামত উল্ল্যাহর বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরির আড়ালে তিনি গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির এক অন্ধকার সাম্রাজ্য, যা প্রশাসনের নীরবতা এবং ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ফুলেফেঁপে উঠেছে।

সালামত উল্ল্যাহ তার স্ত্রী, সন্তান এমনকি ছেলের স্ত্রীর নামেও রেখেছেন বিঘা বিঘা জমি।আইনের চোখ এড়াতে রূপগঞ্জের খুদেবাজারে ছেলের শশুরবাড়ী এলাকায় ছেলের স্ত্রীর নামে রেখেছেন ৯০বিঘা সম্পত্তি।এছাড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পাশে সালামত উল্ল্যাহর রয়েছে ২৫বিঘা জমি।পূর্বাচল উপশহরে রয়েছে একাধিক প্লট। গাজীপুরে বিশাল জায়গা নিয়ে রয়েছে বড়বড় গোডাউন।সেখান থেকে মোটা অংকের টাকা ভাড়া পান প্রতি মাসে।

খিলক্ষেত নামাপাড়া এলাকায় ৭টি বহুতল ভবন সহ প্রায় ৭(সাত) বিঘা জমি রয়েছে সালামত উল্ল্যাহর।বর্তমান বাজারে যার আনুমানিক মুল্য প্রায় ৯০(নব্বই)কোটিরও বেশি।এছাড়া নামাপাড়ায় চ্যাম্পিয়ন ডেভেলপার কোম্পানির ব্যানারে নির্মাণাধীন ১০ তলা নবনির্মিত একটি ভবন রয়েছে ।অথচ জয়েন্ট ষ্টকের রেজিষ্ট্রেশন তালিকায় খিলক্ষেতের এই ‘চ্যাম্পিয়ন ডেভেলপার কোম্পানির নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতেই ভূয়া কোম্পানির ব্যানারে নির্মিত হচ্ছে এই ভবন।এমনকি রাজউকের নীতিমালার বাইরেই চলছে এই ভবনের নির্মান কাজ।বিভিন্ন সূত্র তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।

খিলক্ষেত বোটঘাট নামাপাড়া পানিরপাম্প ‘Y’মোড়ের জায়গাও নিজ দখলে নিয়ে ভোগ করছেন সালামত উল্ল্যাহ।গুরুত্বপূর্ণ ও মুল্যবান এই জায়গাটির প্রকৃত মালিকগন বিদেশে অবস্থানকালে মৃত্যুবরন করায় এবং তাদের ওয়ারিশদের কোন হদিস না মেলায় জাল-জালিয়াতি ও পেশি শক্তি ব্যাবহার করে শৈশবে পাতার বিড়ির ব্যাবসায়ী সালামত উল্ল্যাহ প্রায় ৪/৫ বিঘা জমির মালিক সেজে বসে আছেন।

সম্পদের পাশাপাশি সালামত উল্ল্যাহর স্ত্রী-সন্তানদের নামে-বেনামেও রয়েছে গোপন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। মতিঝিল রূপালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় বিল্ডিংয়ের উপরে তার ছেলের পরিচালনায় একটি সিকিউরিটি কোম্পানি রয়েছে। সালামত উল্ল্যাহর এক ছেলে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করার সুবাদে তিনি ও তার স্ত্রী ইতিমধ্যে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেছেন।বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর ও গ্রেফতার এড়াতে চলতি মাসের মধ্যে যেকোনো সময়ে গোপনে দেশ ছেড়ে পালাতে পারে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়।

তাই দুদকের মাধ্যমে তদন্ত দল গঠন করে দ্রুত সালামত উল্ল্যাহ ও তার পরিবারের সকল সম্পদের হিসাব খতিয়ে দেখা জরুরি।পাশাপাশি অবিলম্বে আদালতের মাধ্যমে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সম্ভাব্য অর্থপাচার ঠেকানোর পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।সালামত উল্ল্যাহ ও তার পরিবারের সকল ব্যাংক হিসাব, জমি, ভবন ও ব্যবসায়িক মালিকানা জব্দ করতে হবে।পাশাপাশি অনুসন্ধানে পাওয়া অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।দ্রুত তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম শেষ করে আইনের কঠোরতম প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।কারন এই দুর্নীতির চিত্র কোনো ব্যক্তি নয়, গোটা ব্যবস্থার ব্যর্থতা ও দুর্বলতার প্রতিচ্ছবি। এখনই যদি দুদক ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে গোটা সিস্টেমকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে দেশের জনগণ।

Related Articles

Back to top button