বাংলাদেশ

ব্রিধান-১০৩:দক্ষিণাঞ্চলে রোপা আমন চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা

মীর সাজু, ভোলা থেকে : ভোলা জেলার তজুমউদ্দিন উপজেলার প্রথমবারের মতো প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এন্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন,এন্টারপ্রেনরশিপ এন্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)প্রকল্পের আওতায় আমন মৌসুমে ব্রিধান-১০৩ এর প্রদর্শনীর বাম্পার ফলনে সারা ফেলেছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে। ২০২৪ -২৫ অর্থ বছরের তজুমদ্দিন উপজেলায় পার্টনার প্রকল্পের আওতায় ব্রিধান- ১০৩ এর প্রদর্শনী দেওয়া হয়। দত্তপাড়া পিএফএস (আমন)এর ৩ জন সদস্য যথাক্রমে সুজিত কুমার দত্ত, তপন চন্দ্র দে এবং আপেল ধুপি এই প্রদর্শনীটি বাস্তবায়ন করেন।দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ করে ভোলা জেলার তুলনামূলকভাবে মোটা চালের চাহিদা ব্যাপক এবং এখানকার কৃষকরা মোটা ধান চাষাবাদে অভ্যস্ত। কিন্তুু ব্রিধান-১০৩ জাতটির চাল সরুও লম্বা বিদায় কৃষকরা এই জাতের ধান দেখে কোন ভাবেই চাষাবাদ করতে চাননি। তজুমদ্দিন উপজেলার কৃষি অফিসার মোঃ নাজমুল হুদা ও উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ নাসিম উদ্দিন কৃষকগণকে এই জাতের ধানের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা দিয়ে তাদেরকে চাষাবাদে আগ্রহী করে তোলেন। পরবর্তীতে ব্রিধান- ১০৩ এর ২০ কেজি প্রয়োজনীয় রাসায়নিক ও যৌবসার এবং ১০টি বীজ সংরক্ষণ পাত্রসহ অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ করেন। পরবর্তীতে কৃষকগণ বীজ শোধন করে আদর্শ বীজ তলায় ব্রিধান- ১০৩ এবং সুস্থ সবল চারা উৎপাদন করেন। গত ০৪/০৯/২০২৪খ্রি: তারিখে ৩০দিন বয়সি চারা তারা ২একর জমিতে রোপন করেন। এরপর সুষম সার ব্যবহার,আগাছা দমন আই পি এম পদ্ধতিতে বালাই দমন সহ কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবদায়নে যথাযথভাবে দান পরিচর্যা করেন।পরবর্তীতে দেখা যায় অন্যান্য জাতের তুলনায় ব্রিধান-১০৩এর মাঠের রোগ ও পোকামাকড় তুলনামূলক কম এবং ফলন ভালো বিদায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে এ জাতের ধান নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়। গত ১৬-১২-২০২৪ খ্রিস্টাব্দে তারিখে নমুনা শস্য কর্তন করে দেখা যায় ১০৩ এর গড় ফলন প্রায় ৬.২ মেট্রিক টন এবং ২.০০ একর প্রদর্শনী প্লটে প্রায় ৫.৫ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয়। বেশ কয়েকটি বহুল প্রচারিত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এই ধান নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর এই জাতের ব্যাপারে স্থানীয় কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ে। এই জাতের ধান নিয়ে কৃষকের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যায়। তাই প্রদর্শনীর প্রাপ্ত কৃষকগণকে সরবরাহকৃত বীজ সংরক্ষণ পাত্রে বীজ সংরক্ষণের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয় এবং উক্ত কৃষকগণ যথা নিয়মে ১০০০ কেজি বীজ সংরক্ষণ করেন যাহা পরবর্তী মৌসুমে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা যাবে। এতে করে পার্টনার প্রকল্পের মাধ্যমে ধানের এই নতুন জাত তজুমদ্দিন সহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধি সহ আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়বে।

Related Articles

Back to top button