
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা :কখনও তিনি মলম ও অজ্ঞান পার্টির সদস্য, কখনও অস্ত্রধারী ডাকাত ও ছিনতাইকারী। আবার কখনও তিনি অস্ত্র ব্যবসায়ী ও নারী নির্যাতনকারী। এছাড়াও তিনি জাল টাকার ব্যবসা করেন। নাম তার মো. বারেক মিয়া সরদার ওরফে মো. বারেক (৪৫)। বর্তমানে তিনি ভুয়া ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা ও ভুয়া র্যাব কর্মকর্তা পরিচয়ে অপরাধ অব্যাহত রেখেছেন। এক্ষেত্রে তার অপরাধ চক্রের সদস্য সংখ্যা ১৬ জনের বেশি। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা, গুলশান, বিমানবন্দর ও নিউ মার্কেট থানাসহ অন্যান্য থানায় রয়েছে ন্যূনতম ২২টির বেশি মামলা হয়েছে। তিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রায় ১৮/১৯ বার। তাকে জেলে পাঠানো হলেও মোটা অংকের টাকা দিয়ে আইনের ফাঁক- ফোকর দিয়ে অল্পদিনের মধ্যে জামিন নিয়ে বের হয়ে পুনরায় অপরাধমূলক কর্মকান্ড শুরু করেন বলে জানা গেছে।
একটি সূত্রে জানা যায়, ডাকাত ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতা মো. বারেকের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার সখিপুর উপজেলার চর মহিষখালী গ্রামের আরশিনগরে। তার পিতার নাম দুদু মিয়া ও মায়ের নাম জহুরা বেগম। বর্তমানে তিনি থাকেন রাজধানীর মুগদা থানা এলাকার মানিকনগরে আবার কখনও থাকেন সবুজবাগ থানা এলাকার মাদারটেকে। আবার তিনি থাকেন রামপুরা থানা এলাকার পশ্চিম রামপুরার উলন রোডে। এছাড়াও তার একাধিক ভাড়া বাসা ও ফ্ল্যাট রয়েছে। একাধিক বিয়ে করলেও বর্তমানে রিনি আক্তার নামে তার এক স্ত্রীকে নিয়ে একসাথে থাকছেন। এছাড়াও তার একাধিক সুন্দরী বন্ধবী রয়েছে। যাদের দিয়ে তিনি ডাকাতি, ছিনতাইয়ের কাজ করান এবং অজ্ঞান পার্টির কাজও করান। সর্বশেষ তিনি তার বর্তমান স্ত্রী রিনি আক্তারকে নিয়ে ডাকাতি-ছিনতাইয়ের কাজ করাতেন। পরে তাকেই বিয়ে করেন বলে জানা যায়।
ডাকাত বারেক সম্পর্কে জানা যায়, জীবনের প্রথম দিকে চাঁদপুরের দুলাল হোসেন নামের এক জাল টাকার ব্যবসায়ী ও মলম পার্টির নেতার হাত ধরে জাল টাকার ব্যবসা শুরু করেন। পরে তার হাত ধরেই মলম পার্টির কর্মকান্ড শুরু করেন। পরবর্তীতে ভুয়া ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা ও র্যাব কর্মকর্তা পরিচয়ে অপহরণ ও ছিনতাইয়ের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে তার প্রধান টার্গেট বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীরা। তাদের গাড়িতে তুলে চোখে মলম লাগিয়ে বা ব্যাপক মারধর করে প্রবাসীর আনা স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে ভুক্তভোগী প্রবাসীদের রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যায়। আর তিনি এসব অপরাধমূলক কর্মকান্ড থেকে যে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে আনেন সেসব দিয়ে তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের সখিপুর উপজেলার চর মহিষখালীর আরশিনগরে জমি কিনেছে। রাজধানীতে তার রয়েছে ন্যূনতম ৪টি প্রাইভেট কার ও একাধিক ফ্ল্যাট। তাছাড়াও তার দলে রয়েছে একাধিক সুন্দরী তরুণী। তাদের দিয়ে বিভিন্ন সময় ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের কাজ করান বলে জানা যায়। তার স্ত্রী রিনিও এক সময় অপরাধ চক্রের সদস্য ছিলেন। কয়েক বছর এক সাথে লিভ টুগেদার করার সম্প্রতি রিনিকে বিয়ে করেন। লুণ্ঠিত স্বর্ণালঙ্কার তার শরীরেও শোভা পাচ্ছে বলে জানা গেছে।
আরেকটি সূত্র জানায়, বর্তমানে তিনি বিমানবন্দর থেকে বনানী এলাকা পর্যন্ত রাস্তায় বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদের টার্গেট করে তার কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। বিমানবন্দর থেকে প্রবাসীদের তার গাড়িতে তুলে নিয়ে অপহরণ করেন ও তাদের মারধর বা অজ্ঞান করে সর্বস্ত ছিনিয়ে নিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দেন। ওইসব ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে একাধিক মামলার তথ্য গোপন করেন ও সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অল্প দিনের মধ্যেই জামিনে বের হয়ে পুনরায় অপরাধমূলক কর্মকান্ড শুরু করেন।