ফুলবাড়ীয় প্রতিনিধি, মো. আ. জব্বার : ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় দুই সাংবাদিকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার মানহানি মামলা করেছেন এক বিএনপি নেতা।
শনিবার (২৪ মে) বিকালে ময়মনসিংহের দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমলী আদালতে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক একেএম শমসের আলী মামলাটি করেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী অমিত হাসান জানান।
তিনি বলেন, “মামলার আবেদন আদালত গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।”
মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন, দৈনিক জনবাণী পত্রিকার ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান সাইফুল ইসলাম তরফদার, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার ফুলবাড়িয়া উপজেলা প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কবির হোসেন, জেলা যুবদলের সহ সভাপতি ও পৌর বিএনপির সদস্য আজহারুল আলম রিপনসহ অজ্ঞাতনামা আরো পাঁচ থেকে ছয়জন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, সোমবার উপজেলা পরিষদের সামনে ফুলবাড়ীয়া বাজারের টোল আদায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন কয়েকটি রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
শমসের আলীর দাবি, মানববন্ধনের প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম তরফদার ও শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন পরিকল্পিতভাবে তার ছবি ব্যবহার করে ‘চাঁদাবাজ শমসের, বাটপার শমসের’ লেখা কার্ড বানান এবং তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এতে তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে অপমানিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
তবে সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম বলেন, “ভুক্তভোগীদের মানববন্ধনের খবর আমি একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে সংগ্রহ করেছি। কিন্তু এতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ঠুকে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমি শুধু সংবাদ করেছি। এটিই আমার অপরাধ।”
ফুলবাড়ীয়া প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম খান বলেন, “পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এমন ভিত্তিহীন মামলা দিয়ে কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”
ওই মানববন্ধনে বক্তব্য দেওয়া কবির হোসেন, আজহারুল আলম রিপন, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, কৃষকদল নেতা ফখরুদ্দিন মাসুমসহ আরো অনেকে।
তারা অভিযোগ করেন, বাজার ইজারার টোল আদায়ের নামে একটি চক্র অবৈধ উপায়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। শমসের আলী এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত।
তবে একেএম শমসের আলী বলেন, “আমি সাংবাদিকবান্ধব মানুষ। কিন্তু আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলে মানববন্ধন ও সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। এতে আমার মানহানি হয়েছে। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।”
