বাংলাদেশ

খিলক্ষেতে ভূমি কর্মকর্তার অঘোষিত সাম্রাজ্য: পাঁচটি বাড়ি, গোপন ব্যাংক ব্যালেন্সে শত কোটি টাকার মালিক

এস.এম. নাহিদ:রাজধানীর খিলক্ষেতে অবসরপ্রাপ্ত ভূমি কর্মকর্তার অস্বাভাবিক সম্পদের চিত্র জনমনে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ভূমি অফিসের সাবেক কর্মকর্তা ছালামতুল্লা, যিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসরে গেলেও রেখে গেছেন এক প্রকার ছায়া সাম্রাজ্য। দুর্নীতি, জালিয়াতি ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে তার এই বিত্ত বৈভব।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নোয়াখালীর জেলে পরিবারের সন্তান ছালামতুল্লা খিলক্ষেত পূর্ব নামাপাড়ায় নিজের এবং আত্মীয়দের নামে গড়ে তুলেছেন পাঁচটি বাড়ি। এর মধ্যে সাততলা বিশিষ্ট ‘নাহার হাউজ’ রয়েছে তার ব্যক্তিগত আবাস হিসেবে ব্যবহৃত। শুধু তাই নয়, তার নামে-বেনামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে শত কোটি টাকার বেশি অর্থ, যার উৎস মেলেনি তার চাকরির বৈধ আয়ের সঙ্গে।আরও ভয়াবহ বিষয় হলো – ছালামতুল্লার বিরুদ্ধে জাল দলিল তৈরি, জমি দখল, ও অবৈধ নির্মাণের অভিযোগও রয়েছে। পানির পাম্প মোড় এলাকায় কৌশলে জমি দখল করে তিনি নির্মাণ করছেন ২০টি দোকান সহ একটি দশতলা ভবন, যা বর্তমানে পুরোদমে চলমান। তবুও তার বিরুদ্ধে নেই কোনো দৃশ্যমান প্রশাসনিক পদক্ষেপ। বরং স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে তিনি এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বিঘ্নে।ছালামতুল্লাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে বিস্তর অভিযোগ আসছে যার ফিরিস্তি আগামী পর্বে তুলে ধরা হবে।

দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা চাকরির বাইরে অতিরিক্ত সম্পদের বৈধ উৎস ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ ছালামতুল্লার বিপুল সম্পদের উৎস এখনও অজ্ঞাত রয়ে গেছে।
তবে এই ঘটনা শুধুমাত্র একজন কর্মকর্তার নয়, বরং এটি দেশের ভূমি প্রশাসনের দীর্ঘদিনের দুর্নীতিগ্রস্ত ও অবহেলিত বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। এই চক্রের লাগাম টেনে ধরতে হবে এখনই। সময় এসেছে ছালামতুল্লার সম্পদের পূর্ণ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের। অন্যথায় এ ধরনের দুর্নীতিবাজরা জনসেবাকে নিজের আখের গুছানোর হাতিয়ার বানিয়ে রাখবে।

Related Articles

Back to top button