
এস.এম.নাহিদ :বছরের পর বছর জুড়ে রাজধানী খিলক্ষেতে কাঁচাবাজার মাছ বাজার সহ জনসাধারণের চলাচলের রাস্তার উপরে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি করছে একদল চাঁদাবাজ।ফলে যানজট সহ মানুষের ভিড় লেগে থাকা নিত্যদিনের চিত্র এই খিলক্ষেতে। সকল শ্রেণি পেশাজীবী নারী-পুরুষের নিয়মিত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটা সহ স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে নিয়মিত।অনুসন্ধানের বিস্তারিত নীচে দেয়া হলো –
শিশির : শিশিরের দখলে রয়েছে উত্তর পাশের কাঁচা বাজার সহ প্রায় ৩৫টি দোকান।তার মধ্যে দৈনিক ১হাজার টাকা হারে মুরগির দোকান ৬টা, ছোট-বড় মিলিয়ে দৈনিক ১০০/-টাকা হারে মাছের দোকান রয়েছে ২৬টা এবং ৩০০/-টাকা হারে ফলের দোকান রয়েছে ৩টা।সব মিলিয়ে প্রতিদিনের কালেকশন ৯হাজার ৫শত টাকা।মাস শেষে হিসাব করলে ২লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা চাঁদাবাজি করা হয়।
মামুন : মামুনের দখলে রয়েছে বিরিয়ানির দোকান সহ ২০টা দোকান।তার মধ্যে দৈনিক ৮০০/-টাকা হারে ফলের দোকান ১০টা,১হাজার টাকা হারে সবজির দোকান ২টা,৮শ টাকা হারে মাছের দোকান রয়েছে ২টা,দৈনিক ৩০০/-টাকা হারে চা-সিগারেটের দোকান রয়েছে ৬টা।এছাড়া ফুটওভার ব্রীজ থেকে বাজারের তিনরাস্তার মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশের ফুটপাতের উপরে বসা প্রায় ৪০টা দোকান থেকে দৈনিক ২শ টাকা হারে চাঁদা তোলা হয়।আরো অবাক করার বিষয় যে,ভূয়া সমিতির নাম দিয়ে প্রায় দেড়’শ ব্যাক্তির কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০/-টাকা হারে চাঁদা তুলছে এই মামুন।সব মিলিয়ে প্রতিদিন তার কালেকশন প্রায় ২৭হাজার ৩শ টাকা।মাস শেষে যার পরিমান দাড়ায় ৮লক্ষ ১৯হাজার টাকা।
হাশেম সরকার ; হাসেম সরকারের রেল লাইন চায়ের দোকান থেকে শুরু করে মাছ বাজার সহ দৈনিক ৬শ টাকা হারে দোকান রয়েছে ২০টা।এছাড়া চা-সিগারেটের দোকান দৈনিক ২০০/-টাকা হারে ১০টা,৫শ টাকা হারে একটা মুরগীর দোকান ও ১হাজার টাকা হারে ফলের দোকান রয়েছে ২টা।দৈনিক মোট
কালেকশন করছে ১৪হাজার ৫শ টাকা। মাস শেষে সর্বোমোট ৪লক্ষ ৩৫হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়।
রানা : রানার ৫০০/-টাকা হারে ফলের দোকান ৫টা,৫শ টাকা হারে ডিমের দোকান রয়েছে ১টা,দৈনিক ১হাজার টাকা হারে মুরগীর দোকান রয়েছে ৩টা,৮০০/-টাকা হারে মাছের দোকান ৪টা,১হাজার টাকা হারে কাঁচাবাজারে ৫টা দোকান,দৈনিক ৫০০/-টাকা হারে চা-সিগারেটের দোকান রয়েছে ৪টা।হিসেব করলে দৈনিক চাঁদাবাজি করে আয় হয় ১৬হাজার ২শত টাকা।এছাড়া অটোরিকশা থেকে প্রতিমাসে ১০হাজার টাকা পায়।সবমিলিয়ে সর্বোমোট ৪লক্ষ ৯৬হাজার টাকা চাঁদাবাজি করা হয়।বর্তমানে এই রানা নতুন গাড়ি কিনে তাতেই চলাফেরা করে।এছাড়া এই ৪জনের বাইরেও অনুসন্ধানে উঠে এসেছে আরো অনেকের নাম। তারমধ্যে রাজিবের নামে ৬টা,শহীদ বেপারীর নামে ১০টি,বক্করের নামে ৯টা দোকান,হাবিবুল্লাহর রয়েছে ৩টা দোকান,পলিনের ১৫টারও বেশি দোকান সহ এলাকার অনেক হাজী সাহেব ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যাক্তিরাও বাজারের এই চাঁদাবাজির সাথে জড়িত রয়েছে।প্রয়োজনে পরবর্তিতে নাম,ঠিকানা ও রাজনৈতিক পরিচয় সহ বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্ভাবনার এই খিলক্ষেতে লক্ষ লক্ষ মানুষের বসবাস। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে দ্বারস্থ হতে হয় বাজারে। অথচ এই খিলক্ষেতে স্থায়ী কোন কাঁচা বাজার নেই, নেই কোন মাছের বাজার,নেই কোন মাংসের বাজার।এমতাবস্থায় নিত্য প্রয়োজন মেটাতে স্থায়ী কাঁচা বাজারের লক্ষ্যে সকল স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে এসে দল-মত নির্বিশেষে পরিকল্পিতভাবে স্থায়ীভাবে বাজার নির্মাণের জন্য এলাকার জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে খিলক্ষেতবাসীর দীর্ঘদিনের প্রানের দাবিটা ঝুলে রয়েছে যুগের পর যুগ।পাশাপাশি চাঁদাবাজদের মূলত: রাজনৈতিক কোন পরিচয় থাকেনা।বিভিন্ন প্রয়োজনে এদেরকে ব্যবহার করে কিছু সুবিধাভোগীরা।আর এই সুযোগে কাচা টাকার গন্ধে তারাও বেছে নেয় চাঁদাবাজি করা।আর এভাবেই চাঁদাবাজদের যাতা কলে পড়ে পিষ্ট হচ্ছে নিম্ন আয়ের অসহায় সাধারণ মানুষ। ফলে খিলক্ষেতবাসীকেও পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন দূর্ভোগ দিনের পর দিন,বছরের পর বছর।