বাংলাদেশ

শার্শার বাগুড়ি আমের বাজার শুরু হয়েছে পাইকারি কেনাবেচা

মসিয়ার রহমান কাজল,বেনাপোল থেকে: যশোরের শার্শায় ৬ মে মঙ্গলবার সকাল থেকে শার্শার বাগুড়ী বেলতলা বাজারে শুরু হয়েছে এ আমের বাজার।আম চাষিরা তাদের বাগানের পরিপক্ব আম এই বাজারে বিক্রি শুরু করেছে।প্রায় দেড় শতা আড়ৎদার চাষিদের এই আম পাইকারদের হাতে বিক্রি করবে।

আড়ৎদারেরা প্রতি দিন দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারদের কাছে কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন জাতের আম এই বাজারে বিক্রি করবে। বিনিময়ে পাবে কমিশন। শার্শা উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় শার্শা উপজেলার আম চাষি, আমের আড়ৎদার ও আম ব্যবসায়ীদের সাথে মত বিনিময় সভায় মাধ্যমে ৬ মে শুরু হলো আমের বাজার।

শুরুতে এই আমের বাজারে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বায়সহ কয়েকটি আগাম জাতের আম এসেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বাগুড়ী বেলতলা আমের বাজারে জমজমাট ভাবে শুরু হয়েছে আমের বেচাকেনা। দেশের বিভিন্ন জেলার আম ব্যবসায়ীদের আগমনে আড়ৎদারেরা খুশি।শুরুতে আম কেজিদর একটু কম হলেও চাহিদার সাথে আমের কেজিদর বাড়বে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে বাগুড়ী বেলতলা বাজারের আড়ৎদার আনিচুর রহমান জানান, এ বছর আমের ভালো ফলন হয়েছে। কোন দুর্যোগ না হলে চাষিরা লাভবান হবে। তারা বলেন দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের সব চাইতে বড় আমের বাজার যশোর জেলার বাগুড়ী বেলতলা।এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মন আম বেচাকেনা হয় বলে জানান।

এব্যাপারে বাগুড়ী বেলতলা আম বাজারের সভাপতি মাহামুদ আলী বলেন, শুরুতেই পর্যাপ্ত আম বাজারে এসেছে। পর্যায়ক্রমে আরও আম বাজারজাত হবে। তারা বলেন, এই বাজারে আগাম আম উঠার কারণে দেশের ৬৪ জেলার আম ব্যবসায়ীরা এ বাজার থেকে পাইকারী দরে আম ক্রয় করে। এই বাজারে পরিবহন ব্যবস্থা সহজ ও সুলভ থাকায় ব্যবসায়ীরা বাড়তি সুবিধা পায়।

যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের দুই পাশে অবস্থিত আমের এক রাজ্য! এ বাজার থেকে আম নিয়ে যাবে বলে পাকা সড়কজুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছোট-বড় ট্রাকের সারি। মৌসুমের শুরুতে প্রতিদিনই ৫০ মেট্রিক টনের বেশি আমপ ট্রাকযোগে চলে যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

বেলতলা পাইকারি আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সভাপতি মাহামুদ আলী বলেন, প্রতিদিন সকাল নয় টা থেকে বাজার শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল চার টার মধ্যে।
আগামী ২২ মে হিমসাগর গাছ থেকে নামানোর কথা থাকলেও এখন তা বাজারে নিয়ে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, অধিকাংশ হিমসাগর আগাম পরিপক্ব হয়ে যাওয়ায় তা বাজারে তোলা হচ্ছে। আমের গুণগত মানকে এ বাজারে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।

আম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক
কামরুজ্জামান মুন্না বলেন,গত বছরের তুলনায় এ বছর আম কম উৎপন্ন হওয়ায় দামও বেশি। ফলে আম চাষীরা ভালো দাম পেয়ে যথেষ্ট খুশি।

তিনি বলেন, গোবিন্দভোগ মণপ্রতি ১২শ টাকা থেকে মানভেদে দুই হাজার টাকা, গোপালভোগ-বোম্বাই জাতের দাম ১২শ থেকে ১৬শ টাকায় বেচাবিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বাজারে রাসায়নিকে পাকানো বা অপরিপক্ব আম তোলা যাবে বলে সকল জানিয়ে দেওয়া হয়।এই বাজারে মানসম্মত আমই কেবলমাত্র তোলা যায়।
বাজার ঘুরে কথা হয়, আল্লার দান ফল ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মোক্তারুজ্জামানের সাথে।
তিনি জানান, ছোট-বড় মিলিয়ে বাজারে দেড়শত মতো আমের আড়ত থেকে মৌসুমের শুরুতে প্রতিদিন ৫০ মে. টনের বেশি আম ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়।

বেলাতলা আমবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, আর দশ থেকে বারো দিন পর বাজারে উঠবে সুস্বাদু ন্যাংড়া আম। তারপরে সবশেষে উঠবে আম্রপালি আম। তবে ন্যাংড়া আম বাজারে আসার পর আরও বেশি জমজমাট হবে এই বেলতলা পাইকারি আম বাজার।

বাগুড়ি বেলতলা বাজার কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান,এই বাজারে আম বোঝাই ট্রাক, পিকআপ ও যানবাহন থেকে কেহ চাঁদা আদায় করতে না পারে সে জন্য তারা এ ব্যাপারে তারা পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Related Articles

Back to top button