
মসিয়ার রহমান কাজল,বেনাপোল: যশোরের বেনাপোল পোট থানার খলসি গ্রাম তাল গাছের জন্য বিখ্যাত। গ্রামীণ সড়কের পাশে, পুকুরপাড়ে, ফসলের মাঠে—সর্বত্র ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে শতশত তাল গাছ।এ কারণে এই গ্রামকে তালের রাজ্য বলে থাকে।
প্রতিদিন এ রাস্তা মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে টাটকা তালের রস।রসের মধ্যে আবার তারতম্য বা নাম করন আছে যেমন জটাধরা গাছের রস সবাই খেতে পছন্দ করে।
বেনাপোল সহ শার্শা উপজেলার বাহা
দুরপুর,শাখারীপোতা,রায়পুর,ডিহি,নিজামপুর,খলসি ও অভায়বাস,খড়িডাঙ্গা- অঞ্চলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ তালগাছ সড়কের দুই পাশে সারি সারি ভাবে, মাঠের মধ্যে একই উচ্চতায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
যা দেখে কবিব কথা বারবার মনে পড়ে যায়।
“তালগাছ এক পায়ে দাড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উকি মারে আকাশে।”
দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে তালের রস নিয়ে বসেন গাছিরা।একসঙ্গে অনেক তালগাছ দেখতে ও রস খেতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন মানুষ।কেউ কেউ বাড়ির জন্য বোতলে ভরে নিয়ে যান টাটকা তালের রস।
বেনাপোল পোট থানা বাজার থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে খলসি বাজার। বাজার পার হলে অভায়বাস গ্রাম এ গ্রামে রয়েছে পচুর পরিমাণ তালগাছ।
গত ৫ মে সরজমিনে গিয়ে দেখাযায় খলসি বাজারের প্রধান সড়কের পাশে হাসান নামের এক গাছি টাটকা তালের রস বিক্রি করছে।একটু সামনে গেলেই চোখে পড়বে অভায়বাস গ্রাম গাছিরা গ্রামের রাস্তায় বিক্রি করছেন ভাড় ভাড় তালের রস।
আবার চোখে পড়বে রাস্তার পাশে গাছে ঝুলছে রসের হাড়ি। হাড়ি থেকে রস সংগ্রহ করে টাটকা রস বিক্রি করছেন তারা।
পথ চলাচল পথিক গাড়ি থামিয়ে তৃপ্তি ভরে তাল রস পান করছেন।
খলসি গ্রামের প্রবীণ মুরব্বি ইদ্রিস আলি বলেন এএলাকার মানুষ এভাবেই রাস্তার পাশে,কৃষি জমিতে,পুকুরপাড়ে এসব তালগাছ রোপন করেছে।
বজ্রপাত নিরোধেও তাল গাছের বিশেষ ভুমিকা রয়েছে।
খলসি গ্রামের গাছি,মমিন মিয়া বলেন, খেজুর গাছ ও তাল গাছকে কেন্দ্র করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন।শীতকালে খেজুর রস আর বসন্ত কাল পর্যন্ত চলে তার এই কর্মযজ্ঞ। তার রস বিক্রি করেই তার সংসার চালাচ্ছেন।
এলাকায় ঘুরে সাধারন মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,গরমকালের তিন মাসে গ্রামের চাষিরা কৃষিকাজের পাশাপাশি তালগাছকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করেন।তালের রস, শাঁস, পাকা তাল ও তালপাতা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে তাদের সংসার চলে।এ গ্রামের অন্তত ২০ জনের বেশি কৃষক তালের রস বিক্রি করেন। প্রতিদিন সকাল–বিকেল সেখানে রস খেতে ভিড় করেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। বিকেলে ভিড় বেশি হয়।
বেনাপোল পোট থানার সাদীপুর গ্রাম থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে আসা কাজল নামের এক ব্যাক্তি বলেন গ্রামের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে আর তালের রস খেতে এসেছেন তার বন্ধুরা।
তিনি জানান,আমরা এগ্রামে ঘুরতে এসে দেখি হাসান নামের এক ব্যাক্তি তালের রস বিক্রি করছে আমরা খেলাম অনেক ভালো লেগেছে খেতে।তালের রস খেতে অনেক সুস্বাদু,তাল এবং তালের রস খেয়ে আমরা বড় হয়েছি এটা- ন্যাচারল জুস।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা জানান,কৃষকরা প্রত্যেক তালগাছ থেকে তিন মাসে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করতে পারেন। তায় প্রতিটি গ্রামের সড়কের পাশে ও মাঠে তালগাছ রোপণ করা উচিত।তালগাছের মাধ্যমে কৃষকদের বাড়তি আয় হচ্ছে।