বাংলাদেশ

উত্তরায়”জুলাই ব্রিগেড” এর আত্মপ্রকাশ ও আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

টাইমস ২৪ ডটনেট :জুলাই ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানান। সে সাথে তারা “জুলাই ব্রিগেড ” এর আত্মপ্রকাশ করেন।

আজ রাজধানী উত্তরার ৩ নং সেক্টর সাংগামের মোড়,শহীদ মুগ্ধ চত্বরে ” জুলাই শহীদ পরিবারের চিৎকার রাষ্ট্র শুনবে কি? এ বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় ১৩ টি শহীদ পরিবারের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন এই আয়োজনে।
শহীদ পরিবারের সকল সদস্য গণমাধ্যমের কাছে প্রায় একই ধরনের দাবি তোলেন। তারা শহীদ ছাত্র-জনতার খুনি হাসিনার দোসরদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের কোন প্রয়োজন নেই বলে দাবি তোলেন। এ ছাড়াও সরকারকে আওয়ামী লীগকে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে হবে বলে দাবি জানান।

বক্তব্য ভুক্তভোগীরা বলেন
জুলাই-আগষ্ট-২৪ আওয়ামী লীগ সরকারের গুন্ডা বাহিনিরা নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর চালানো নির্মম নির্যাতনে যেসব তরুণ শহীদ হয়েছে তাঁদের পরিবার এখনো সেই যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন।
দেখতে দেখতে গণঅভ্যুত্থানের ৮মাস পার হয়ে গেলেও তাঁরা জানেন না কারা তাদের পাশে আছে, এছাড়াও সরকার তাদেরকে কোনো সাহায্য করবে কিনা এরও কোন সম্ভাবনা আছে কিনা আদো তাদের জানা নেই। অপরদিকে যারা তাঁদের সন্তানদের জীবন নিয়েছে তারা কিভাবে প্রকাশ্যে মিছিল করে বেড়ায় এ বিষয়ে তারা প্রশাসনের নিকট জানতে চায়। ৫ আগষ্ট ২৪এর পর
তাদের জীবন যাত্রার মান
ও বাস্তবতা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে আজ উত্তরার শহীদ মুগ্ধ মঞ্চ সেক্টর-০৩ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
আজ ২২ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, বিকেল ৫:০০টায়, উত্তরার শহীদ মুগ্ধ মঞ্চে শহীদ পরিবারবর্গকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা তুলে ধরেছেন সন্তান হারানোর পর ৮ মাস ধরে তাঁদের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা।
তারা আফসোস করে জানিয়েছেন নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি রাষ্ট্রের ভূমিকা, সমাজের নীরবতা এবং সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ্যে খুনিদের মিছিল সম্পর্কে তাঁদের অবস্থান ও মতামত।

এ সময় তারা বলেন, অন্তরবর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন বিষয়ে ব্যর্থ। প্রশাসনে ফ্যাসিস্টরা ধীরে ধীরে পুনর্বাসন করা হচ্ছে, যেসব আমলারা ৫ আগষ্টের পর অফিসে যেত না- তারা এখন বিপুল উৎসাহে দুর্নীতি শুরু করেছে।
নিহত শহীদ পরিবারের সদস্যরা আরো বলেন,যেই জুনায়েদ আহমেদ পলক, শাহজাহান খান, ইনু-রা রাজসাক্ষী হতে চেয়েছিল সরকারের ব্যর্থতায় তারা আজ পুলিশকেই হুমকি দেয়।
আমরা এখন দেখছি জুলাই হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার করতে ‘ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির দরকার পড়ছে,এটা কেমন হলো। মিডিয়ায় না আসলে আসামীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে জামিন হয়ে যাচ্ছে। বহুল আলোচিত ডেভিল হান্ট ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।
তারা আরো বলেন,আমরা মনে করি আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন ও তাদের সহায়তাকারী ফ্যাসিস্টদের বিচার, বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ এর জন্য সরকার পর্যাপ্ত সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না।
শহীদ পরিবার ও আহতদের মাঝে থেকে আমরা এরকম হতে দিতে পারি না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা আবার মাঠে নামব। গণহত্যাকারীদের বিচারের প্রশ্নে আর কোন ছাড় দেয়া যাবে না। যেই উত্তরার মাটিতে শতাধিক মানুষ শহীদ হয়েছে সেই উত্তরার ছাত্র-জনতা হিসাবে আমরা পুনরায় মাঠে কাজ করতে চাই। এ লক্ষ্যে আমরা ‘জুলাই ব্রিগেড’ নামের একটি প্লাটফর্ম ঘোষণা করছি। আমরা প্রচলিত কোন প্লাটফর্ম হিসাবে কাজ করব না- বরং এর কাজ হবে ফ্যাসিস্টবিরোধী সংগঠন ও জনগণের মাঝে লিয়াজোঁ স্থাপন করা। জুলাই ব্রিগেডের কোন আহ্বায়ক বা কেন্দ্রীয় কমিটি হবে না- বরং একজন প্রধান সংগঠকের অধীনে অন্যান্য সংগঠকরা কাজ করে যাবেন।
উপস্থিত শহীদ ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা হলেন,
শহীদ সানজিদ হোসেন মৃধার বড় ভাই মোঃ নাজিমুদ্দিন,
শহীদ আসাদুল্লাহ মা আয়েশা-সব্ববি,জাহিদুজ্জান, তানভীনের মা বিলকিস জামান।এ ছাড়াও
শহিদ আব্দুন নুর পরিবারের পক্ষে কথা বলেন মোঃ আবুল বাসার,

শহিদ নাফিসা হোসেন মারওয়ার পিতা আবুল হোসেন, শহিদ আরাকাতের পিতা-মোঃ শহিদুল ইসলাম,
শহিদ জাকারিয়া হাসানের পরিবারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন তার মা পাপিয়া,
শহীদ নাঈমা সুলতানার মা আইনুর বাহার,
শাহীদ মোঃ সামিট আমাননুরের পিতা আমানুল্লাহ,
শহিদ সাগর গাজীর চাচা আরশেদ আলম,
শাহীদ আকরাম খান কাজির বাবা মোঃ ফারুক খান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এসিপির সাবেক মুখ্য সমন্বয়ক রাফিদ ভূইয়া , তিনি তার বক্তব্য বলেন আমরা কোন অবস্থাতেই কোন বিচারের মুখ দেখছি না, তাই আমরা আবারও একযোগে মাঠে নামবো। আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করতে হবে এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ঘোষণা করতে হবে। এই লক্ষে কাজ করতে তারা একটি নতুন প্লাটফর্মের ঘোষণা করেছে “জুলাই ব্রিগেড”।

Related Articles

Back to top button