বাংলাদেশ

ভারত কর্তৃক ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণার পূর্বাভাস

টাইমস ২৪ ডটনেট :বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের জন্য ভারতীয় স্থলবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পাঠানোর ট্রানজিট সুবিধা বাতিল করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় শুল্ক বোর্ড সিবিআইসি। নরেন্দ্র মোদী সরকারের এমন অসৌজন্যমূলক আচরণকে বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণার পূর্বভাস বলে মনে করছে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যম পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন সংগঠন টি।

এসময় সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মোঃ মোস্তফা আল ইহযায বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে সিবিআইসি জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুনে বাংলাদেশকে ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে যে সার্কুলার প্রকাশ করা হয়েছিল- তা বাতিল করা হয়েছে। ​যা ২০২০ সালের সার্কুলারের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য ভারতের স্থল কাস্টমস স্টেশন এলসিএস ব্যবহার করে ভারতের সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর হয়ে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের মতো তৃতীয় দেশে পাঠাতে পারত। এতে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের খরচ ও সময় অনেক কমে আসত।
ট্রানজিট সুবিধা বাতিলের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের খরচ ও সময় বৃদ্ধি পাবে। যা আমাদের দেশের রপ্তানিকারকদের জন্য চরম অসুবিধায় পড়তে হবে। ট্রানজিট সুবিধা বাতিলের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের খরচ ও সময় বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে ভুটান ও নেপালের মতো ভূমিবেষ্টিত দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে প্রভাব পড়বে। ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টি হবে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী, সদস্য দেশগুলোকে ভূমিবেষ্টিত দেশগুলোর জন্য অবাধ ট্রানজিট সুবিধা নিশ্চিত করতে হয়। ১৯৯৪ সালে সংস্থাটির জারি করা জেনারেল অ্যাগ্রিমেন্ট অন ট্যারিফস অ্যান্ড ট্রেড ( জিএটিটি) এর অনুচ্ছেদ পাঁচ অনুসারে, সব সদস্যকে স্থলবেষ্টিত দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রানজিট প্রদান করতে হবে। এতে কোনো নির্দিষ্ট সীমা দেওয়া যাবে না এবং পরিবহন শুল্কের আওতায় ফেলা যাবে না। ফলে ভারতের এই সিদ্ধান্ত ডব্লিওটিও’র নিয়মাবলীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকার প্রধান পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া পর থেকেই দেশটি বাংলাদেশ সাথে সাম্রাজ্যবাদী ও আগ্রাসী চরিত্র দেখাতে শুরু করে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পরাজিত সরকার প্রতিনিয়ত প্রচার করতো ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। আবার বহু প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক মানুষ মনে করেন ভারত একটি আধা উপনিবেশিক, আধা সামন্ততান্ত্রিক দেশ। ভারতে বৃহৎ পুঁজিপতি শ্রেণি নেই, যা আছে সব সাম্রাজ্যবাদের তাবেদার দালাল বুর্জোয়া। বাস্তবে ভারত বহু পূর্বেই সাম্রাজ্যবাদী চরিত্র অর্জন করেছে। ভারত একসময়ে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদের ‘জুনিয়র পার্টনার’ থাকলেও বর্তমানে তারা নিজস্ব সাম্রাজ্যবাদী অভিলিপ্সায় মত্ত এবং একক সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠায় নিজের মতো করে এগোচ্ছে। ভারতের এই সাম্রাজ্যবাদী চরিত্র কারণে শুধু বাংলাদেশ নয় ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারসহ দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশের অর্থনৈতি ও জনগণ ভয়ঙ্কর বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।
সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ ভারতীয় আগ্রাসনের কালো থাবা ও গভীর ষড়যন্ত্র থেকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহবান জানান।

Related Articles

Back to top button