সারাদেশ

ইহুদিবাদীদের মধ্যে মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

টাইমস ২৪ ডটনেট : অধিকৃত ফিলিস্তিনিদের ভূখন্ডে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের আল আকসা তুফান অভিযানের পর ৩০ লাখ ইহুদিবাদী ইসরাইলি মানসিক ব্যধিতে আক্রান্ত হয়েছে।ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি সামরিক অভিযান আল আকসা তুফান অভিযান ছিল ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাকাণ্ড, আল আকসা মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট করা এবং ফিলিস্তিনি ভূমি বছরের পর বছর ধরে দখল করে রাখার ক্ষেত্রে তেল আবিব সরকারের ধারাবাহিক অপরাধযজ্ঞের পাল্টা প্রতিক্রিয়া। ঐতিহাসিক এই অভিযানটি গাজা এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মধ্যবর্তী সীমান্ত এলাকায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হয়েছিল এবং বেশ কয়েক দিন ধরে অব্যাহত ছিল যার ফলে বিপুল সংখ্যক ইহুদিবাদী নিহত আহত বা বন্দি হয়েছিল। ইসরাইলের গণমাধ্যম এই অভিযানকে ইতিহাসে নজিরবিহীন এবং শাসক গোষ্ঠীর জন্য একটি বড় পরাজয় হিসেবে বর্ণনা করেছে।

আল আকসা তুফান অভিযানের পর ইসরাইলি সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার জনগণের বিরুদ্ধে এক ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ শুরু করে। এক বছর তিন মাস ধরে পাশবিক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পর গণহত্যাকারী ইসরাইলি সরকার স্থল অভিযানের মাধ্যমে বন্দি ইসরাইলিদের মুক্ত করতে এবং গাজায় তুমূল জনপ্রিয় প্রতিরোধকামীদের নির্মূল করার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পর গত ১৫ জানুয়ারি ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করতে সক্ষম হয়। চুক্তিটি ১৯ জানুয়ারি কার্যকর হয়।

ইরনার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে যে ইসরাইলি ক্যাবিনেট অফিসের অবজারভারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের আল আকসা তুফান অভিযানের পর অনেক ইহুদিবাদী বিপজ্জনক স্বাস্থ্য ও মানসিক সংকটে ভুগছেন। কারণ অফিসের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩৮% বলেছেন যে আল আকসা অভিযানের ঘটনায় তারা চরম উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠায় ভুগছেন।

প্রতিবেদন অনুসারে, গাজা যুদ্ধে প্রায় ত্রিশ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক ইহুদিবাদী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৮০,০০০ জন গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছেন। এর আগে প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল যে প্রধান সমস্যাটি কেবল আহতের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বরং ইসরাইলি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের অক্ষমতার সঙ্গেও সম্পর্কিত। এর ফলে যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট মানসিক জটিলতায় ভুগছেন এমন নয় লাখ মানুষ দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে পরিষেবার জন্য আবেদন করেননি। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে এ অপেক্ষা সাড়ে ৬ মাস পর্যন্ত পৌঁছায়।

ইহুদিবাদী মন্ত্রীসভা পর্যবেক্ষকের প্রতিবেদনের আরেকটি অংশে ইসরাইলি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে মন্ত্রিসভা মানসিক স্বাস্থ্য সংকট যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং গাজার আশেপাশের বসতি থেকে স্থানান্তরিত হওয়া ১১ শতাংশ ব্যক্তি ছাড়া যুদ্ধের পরের ছয় মাসে কেউ মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পায়নি, যদিও তাদের এই ধরনের পরিষেবার তীব্র প্রয়োজন ছিল।

মানসিক সংকট কেবল ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারকেই ছাপিয়ে যায় নি বরং ইসরাইলি অর্থনীতিকেও হুমকির মুখে ফেলেছে। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে যে সময়মতো চিকিৎসা না নিলে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং আক্রান্তদের কাজ ও উৎপাদন ক্ষমতা প্রভাবিত হতে পারে। এই সংকট ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার উপর ভারী অর্থনৈতিক ক্ষতি চাপিয়ে দিতে পারে এবং সামাজিক নিরাপত্তা রাজস্ব এবং অন্যান্য সামাজিক সংগঠনের উপর চাপ বাড়াতে পারে যার ফলে সমাজ ও অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে অবিলম্বে মন্ত্রিসভার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হবে।

সূত্র: পার্সটুডে।

Related Articles

Back to top button