
টাইমস ২৪ ডটনেট :বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর আওতাধীন সিভিল এভিয়েশন একাডেমি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির এক নতুন মাইলফলক অর্জন করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ICAO Global Implementation Support Symposium (GISS) 2025-এ আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (ICAO) সেক্রেটারি জেনারেল Juan Carlos Salazar একাডেমিকে Trainair Plus গোল্ড মেম্বারশিপ Plaque হস্তান্তর করেন।
বেবিচক এর পক্ষে এয়ার কমডোর আবু সাঈদ মেহ্বুব খান, বিএসপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি (Air Commodore Abu Sayeed Mehboob Khan, BSP, BUP, ndc, psc), সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এবং সিভিল এভিয়েশন একাডেমির পরিচালক জনাব প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী (Prasanta Kumar Chakraborty) এই Plaque (ফলক) গ্রহণ করেন।
এ সময় মিসেস লরা কামাস্ত্রা, ICAO-এর গ্লোবাল এভিয়েশন ট্রেনিং-এর প্রধান এবং ICAO এশিয়া প্যাসিফিকের আঞ্চলিক পরিচালক মিঃ তাও মা, ICAO-এর ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন পরিচালক জন ভার্গাস এই গৌরবময় ফলক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের জেনারেল সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (GCAA) এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
ICAO সেক্রেটারি জেনারেল তাঁর বক্তব্যে বলেন, “খুব কম দেশই এত অল্প সময়ের মধ্যে সিলভার থেকে গোল্ড ক্যাটাগরিতে উন্নীত হতে পারে। বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন একাডেমির এই অর্জন সম্ভব হয়েছে এর চেয়ারম্যানের অসামান্য দিকনির্দেশনা ও সার্বক্ষণিক তদারকির ফলে। এই গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের জন্য সিভিল এভিয়েশন একাডেমি এর সংশ্লিষ্ট সকল সদস্যদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন। উল্লেখ্য যে, বেবিচক এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া, ওএসপি, বিইউপি, এনডিসি, এনএসডব্লিউসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি (Air Vice Marshal Md Monjur Kabir Bhuiyan, OSP, BUP, ndc, nswc, afwc, psc) দায়িত্ব গ্রহণের পর সিভিল এভিয়েশন একাডেমি পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সিলভার থেকে গোল্ড সদস্যপদ অর্জনের লক্ষ্যে নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জিত হয়।
*এই প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন সত্যিকার অর্থেই এটি বিশাল অর্জন। অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা এটি অর্জন করতে পেরেছি। এর ফলে বাংলাদেশের এভিয়েশন সেক্টরে আরও অনেক দক্ষ জনবল এবং বিশেষজ্ঞ তৈরি হবে। তিনি বলেন যে, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমরা প্ল্যাটিনাম ক্যাটাগরিতেও উন্নীত হতে পারবো। এছাড়া বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন একাডেমি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির এক নতুন মাইলফলক এর জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।*
উল্লেখ্য যে, আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর এভিয়েশন খাতে দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল তৈরির লক্ষ্যে সিভিল এভিয়েশন একাডেমি ICAO-এর সক্রিয় সহযোগিতায় প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ICAO মানদণ্ড অনুসরণ করে কার্যক্রম পরিচালনার ফলে সিভিল এভিয়েশন একাডেমি Silver ক্যাটাগরি থেকে Gold ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে। একাডেমি নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ আয়োজনসহ Capacity Building-এর বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে, যা শুধু বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের জন্যই নয়, বরং দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সের জন্যও ব্যাপক সুবিধা বয়ে আনবে। Trainair Plus Gold সদস্য হিসেবে সিভিল এভিয়েশন একাডেমি এখন ICAO প্রণীত Standardized Training মডেলের অধীনে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা ও মান বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করছে।
সিভিল এভিয়েশন একাডেমির Gold সদস্যপদ অর্জনের ফলে এই অঞ্চলের এভিয়েশন ইন্সট্রাক্টর ও ইন্সপেক্টরদের দক্ষতা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে, যা ICAO অডিটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ICAO-এর আটটি গুরুত্বপূর্ণ Critical Element-এর মধ্যে চতুর্থটি হলো Training। দক্ষ মানবসম্পদ গঠনের মাধ্যমে Surveillance ও Resolution of Safety-তে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা আসন্ন ICAO অডিটে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুসংহত করবে।
সিভিল এভিয়েশন একাডেমির Gold সদস্যপদ অর্জনের ফলে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ খাতে বাংলাদেশের সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন থেকে বাংলাদেশে প্রশিক্ষিত আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষক তৈরি হবে, যারা দেশ ও বিদেশে ICAO-এর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কোর্স ডেলিভারি দিতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ এখন ICAO Training Packages (ITP) উন্নয়ন ও সরবরাহের সক্ষমতা অর্জন করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বব্যাপী প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হবে, যা দেশের বিমান চলাচল প্রশিক্ষণ খাতে নতুন আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করবে।