টাইমস ২৪ ডটনেট: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছে আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে। এই যুদ্ধকে আরও বেগবান করতে রেকর্ড পরিমাণ সামরিক বাজেট ঘোষণা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০২৫ সালের মোট বাজেটের এক তৃতীয়াংশ বরাদ্দ রেখেছেন সামরিক বাজেটের জন্য।রোববার প্রকাশিত বাজেটে দেখা যায়, জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য ১২৬ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে পুতিনের সরকার, যা মোট ব্যয়ের ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ। এ বাজেট গত বছরের চেয়ে প্রায় ২৮ বিলিয়ন ডলার বেশি। এই বাজেট রাশিয়ার পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে অনুমোদিত হয়েছে।তিন বছর মেয়াদি নতুন এই বাজেটে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে সামরিক ব্যয় সামান্য কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় সংঘাত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সর্বশেষ মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলার কথা জানায় কিয়েভ। ক্রেমলিন কড়া জবাব দেওয়া হুঁশিয়ারি দিলে কিয়েভের দাবি নাকচ করে দেয় ওয়াশিংটন।একের পর এক তীব্র আক্রমণে আরও গভীর সংকটে পরিণত হচ্ছে এই সংঘাত। এরই মধ্যে রাশিয়া সামরিক খাতে বিপুল অর্থের বাজেট সংঘাতের তীব্রতা বাড়ার পূর্বাভাসই বলা যায়।
গত দুই বছরে রাশিয়ার সামরিক ব্যয় ব্যাপকহারে বেড়েছে। এর ছাপ পড়েছে সামগ্রিক অর্থনীতির ওপরও। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েই চলেছে। অর্থনীতির লাগাম টানতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত অক্টোবরে সুদহার ২১ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে, যা কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এদিকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্য হ্রাস পাচ্ছে। অনেকে তরুণ রুশ সেনাবাহিনীতে অংশগ্রহণ এড়াতে দেশ ছেড়েছেন। এমতাবস্থায় নতুন সেনা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। নেপাল ও ভারতসহ বিভিন্ন এশীয় দেশ থেকেও ভাড়াটে সেনা সংগ্রহ করেছে ক্রেমলিন।সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে, উত্তর কোরিয়ার প্রায় ১১ হাজার সেনা রাশিয়ার হয়ে লড়ছে। এমনকি উত্তর কোরিয়া অস্ত্র দিয়েও পাশে দাঁড়াচ্ছে দেশটির।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। এরপর ২০২৩ সালে রাশিয়ার সামরিক ব্যয় এক লাফে ২৪ শতাংশ বেড়ে যায়। দাঁড়ায় ১০৯ বিলিয়ন ডলারে। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অস্ত্র, গোলাবারুদ ও লোকবলের অভাব নেই রাশিয়ার। তবে যুদ্ধের যত দিন গড়াচ্ছে, অর্থনীতি ও জনসংখ্যার ওপর চাপ বাড়ছে। ফলে পর্যাপ্ত সেনা এবং যুদ্ধের সরঞ্জামাদির জন্য আবারও বাজেটের বিশাল অংশ সামরিক খাতে দিতে হচ্ছে দেশটিকে।