টাইমস ২৪ ডটনেট: যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার ভোটের লড়াই শুরু হচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে অনাকাঙ্খিত এক ভয়। কঠিন এক অনিশ্চয়তা। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর পদের এই লড়াই হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ যুদ্ধ এটা। এতে বিজয়ীর হাতে উঠবে হোয়াইট হাউসের চাবি। সারাবিশ্বের কোটি কোটি মানুষের চোখ তাকিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের দিকে। প্রায় ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন ভোটযুদ্ধ হতে যাচ্ছে আজ যুক্তরাষ্ট্রে। ভোটযুদ্ধে একদিকে ডেমোক্রেট কমালা হ্যারিস। অন্যদিকে রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্প। দু’জনের মধ্যে যে ভোটযুদ্ধ হচ্ছে তাতে জয়ের সুযোগ দু’জনেরই ফিফটি ফিফটি। সমানে সমান। কার গলায় উঠবে জয়ের মালা। কেউ পূর্বাভাস দিতে পারছেন না। এই নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে বাকি বিশ্ব। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চূড়ান্ত ফল নির্ধারণী দোদুল্যমান সাত রাজ্যে শেষ সময়ের জরিপে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে চমক দেখা গেছে। গত সোমবার ব্রাজিল-ভিত্তিক এই জরিপ সংস্থা অ্যাটলাস ইনটেলের জনমত জরিপের ফলে বলা হয়েছে, দোদুল্যমান সাত রাজ্যের সবকটিতে কমালা হ্যারিসের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তাদের ব্যবধান একেবারে সামান্য।
জানা গেছে, ৫ নভেম্বর মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আগামী চার বছর যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিসহ বিশ্ব রাজনীতির মেরুকরণে কে করবে প্রভাব বিস্তার; এই নিয়ে বিশ্ববাসীর নজরও এখন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। বিশ্বের অর্থনীতি, রাজনীতি-সবই ঘুরে যেতে পারে। এ জন্যই বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্রের দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে সবাই। তারা দেখতে চায়-কার হাতে ওঠে হোয়াইট হাউসের চাবি। এবারের নির্বাচনের মতো এমন অনিশ্চিত অবস্থা, উত্তেজনা সাম্প্রতিক সময়ে আর দেখা যায়নি। কমালা হ্যারিস-ডনাল্ড ট্রাম্প দু’জনের সামনেই ইতিহাস গড়ার হাতছানি। কমালা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের এ যাবৎকালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট, যার শুরু একজন প্রসিকিউটর থেকে। একই সঙ্গে তিনি হবেন প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
অন্যদিকে ডনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হলে তিনি হবেন ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার পর নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট। নতুন এক ইতিহাস গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দুই প্রার্থীই মাঠ চষে বেড়িয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের শেষ সময়ে ‘সুইং স্টেট’ বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো চষে বেড়াচ্ছেন দুই প্রার্থী— ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমালা হ্যারিস। নির্বাচন নিয়ে করা জরিপগুলো দুই প্রার্থীর মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের আভাস দিয়েছে। শেষ দিকের প্রচারেও ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রচারে অভিবাসন বিরোধী বার্তাকেই সামনে রেখেছেন।
অন্যদিকে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে বিবিসির কোর্টনি সুব্রামানিয়ান লিখেছেন, কমালা হ্যারিসের প্রচার দল তার জয়ের বিষয়ে সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। তারা এখন ‘সুইং স্টেট’ বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য বলে পরিচিতি অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটারদের নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন। আজ মঙ্গলবার এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে এর মধ্যেই প্রায় পঁচাত্তর লাখ ভোটার আগাম ভোট দিয়ে ফেলেছেন। মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এক সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় কমালা হ্যারিস বলেছেন, গাজা যুদ্ধ অবসানে তিনি তার ক্ষমতা অনুযায়ী সবকিছুই করবেন। মিশিগানেই রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় আরব আমেরিকান জনগোষ্ঠীর বাস। ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার আরব-সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর ডিয়ারবর্ন-এ সমাবেশ করেছেন। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও ইসরায়েলকে আর্থিক সুবিধা দেওয়া নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে থাকা ক্ষোভকে পুঁজি করে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। মিশিগান থেকে বিবিসির ম্যাডেলাইন হালপার্ট লিখেছেন, ট্রাম্পের কয়েকটি বক্তৃতা শুনে তার মনে হয়েছে যে তিনি পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়ায় যেসব কথা বলেছেন সে অবস্থানেই তিনি থাকতে চান। তিনি গত কয়েকমাস ধরে অর্থনীতি নিয়ে যেসব নীতির কথা বলেছেন সেগুলোরই পুনরাবৃত্তি করেছেন। ট্রাম্প ও হ্যারিসের একই বক্তব্য বারবার বলা, বিজ্ঞাপন ও দলীয় স্বেচ্ছাসেবীদের তৎপরতা সুইং ভোটারদের জন্য কিছুটা ক্লান্তিকর হয়ে উঠেছে। ভোটারদের মন জয় করার জন্য রাজনৈতিক কর্মীরা সেখানদের ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। এসব কিছুই অবশ্য প্রমাণ করে, সেখানে কতটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। বিবিসির যুক্তরাষ্ট্র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট কাট্টি কে লিখেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা সাতটি ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যের ছয়টিতে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। শুক্রবার ভার্জিনিয়াতে সমাবেশ করে গেছেন ট্রাম্প। আগের দুটি নির্বাচনে তিনি সেখানে বড় ব্যবধানে হেরেছেন। এ বছরের নির্বাচনে সুইং স্টেট হিসাবে পরিচিত পাওয়া রাজ্যগুলোর মধ্যে আছে অ্যারিজোনা, পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া, উইসকনসিন, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলাইনা ও নেভাদা। এসব রাজ্যের ভোটারদের জয় করতে শেষ মুহূর্তের চেষ্টা করে যাচ্ছেন দুই প্রার্থী।
কমালা হ্যারিস বলেছেন, প্রথম দিন থেকেই তার অগ্রাধিকার হবে জীবন যাত্রার ব্যয় কমানো। গ্রোসারি বা দোকানে মূল্য বৃদ্ধি ঠেকানো, ক্রেতাদের সহায়তা এবং ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ নিবেন তিনি। আরও অনেক পশ্চিমা দেশের মতো মূল্যস্ফীতি বাইডেন প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রেও বেড়েছে। ট্রাম্প ‘মূল্যস্ফীতির অবসান ঘটিয়ে আমেরিকাকে আবারো সাশ্রয়ী’ করার অঙ্গীকার করছেন। জ্বালানি খরচ কমিয়ে আনতে তিনি আরও তেল উৎপাদনের কথা বলছেন। সুদের হার কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। তিনি বলছেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে পারলে আবাসনের চাপ কমবে। কমালা হ্যারিস প্রসিকিউটর হিসেবে তার অভিজ্ঞতার সাথে ট্রাম্পের অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প মাদক কার্টেল ও দলগত সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তিনি বলছেন, ডেমোক্র্যাটরা যেসব শহর পরিচালনা করছে সেগুলো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ভরে গেছে। একই সাথে তিনি নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করলে তিনি ‘উগ্র বাম ও শত্রুদের’ বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী বা ন্যাশনাল গার্ড ব্যবহারের কথা বলেছেন। কমালা হ্যারিস গর্ভপাতের অধিকারকে তার প্রচারের কেন্দ্রে রেখেছেন এবং তিনি দেশজুড়ে প্রজনন অধিকার বিষয়ে আইনের পক্ষে তার অবস্থান অব্যাহত রেখেছেন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য গর্ভপাতের বিষয়ে তার অবস্থান এক জায়গায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। এমন পাল্টাপাল্টি যুক্তিতর্ক তুলে ধরেছেন। তবে এই লড়াইয়ে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য ট্রাম্পের চেয়ে অনেক কম সময় পেয়েছেন কমালা হ্যারিস। তার দল ডেমোক্রেট থেকে প্রথমে নির্বাচন করার অঙ্গীকার করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শারীরিক অবস্থা ও বয়সের কথা মাথায় নিয়ে ডেমোক্রেট শীর্ষ নেতারা তাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। জো বাইডেন অনড় থাকেন অবস্থানে। কিন্তু প্রথম সরাসরি প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি লেজেগোবরে করে ফেলেন। ফলে তার সরে দাঁড়ানোর দাবি আরও জোরালো হয়। এক পর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। অনুমোদন দিয়ে যান কমালা হ্যারিসকে। তখন কমালার হাতে সময় মাত্র তিন মাস। এ সময়ে ট্রাম্পের মতো একজন জাঁদরেল নেতার বিরুদ্ধে নিজেকে প্রস্তুত করে নেয়া তার জন্য সত্যিই খুব সামান্য। তবু কমালা হ্যারিস নিজেকে লৌহকঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গড়ে তুলেছেন। শুধু তাই নয়। তিনি সমানে সমানে টক্কর দিচ্ছেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। পর্নো তারকা ডানিয়েল স্টর্মিকে অর্থের বিনিময়ে ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে মুখ বন্ধ করিয়ে রাখার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে তার উস্কানিতে দাঙ্গার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। তাছাড়া তার সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ আছে। পুতিনকে দেখা হয় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে। ২০২০ সালের নির্বাচনের পর কমপক্ষে সাতবার পুতিনের সঙ্গে ট্রাস্প সরাসরি ফোনে কথা বলেছেন বলে ‘ওয়ার’ বইয়ে দাবি করেছেন বিখ্যাত সাংবাদিক বব উডওয়ার্ড। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও সুইং স্টেট যেমন গুরুত্ব বহন করছে, একই ভাবে নারী ভোটাররাও গুরুত্ব বহন করছেন। আগাম ভোটে তারা সেই জানান দিয়েছেন। ট্রাম্পের দখলে থাকা মিশিগান রাজ্যে সর্বশেষ জরিপে এগিয়ে আছেন কমালা।
ট্রাম্প যদি হেরে যান, তাহলে তিনি ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারির মতো দাঙ্গা লাগিয়ে দিতে পারেন বলে অনুমান করছেন অনেকে। তিনি এরই মধ্যে আভাস দিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জয়ী হবেন। তার অর্থ তিনি পরাজিত হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না! আইনি লড়াইয়ে যেতে পারেন। এ জন্য শীর্ষ সব আইনজীবীকে আগে থেকেই ভাড়া করেছে উভয় শিবির। ট্রাম্প আইনি লড়াই শুরু করলে তা আইনসম্মত। কিন্তু যেসব আভাস মিলছে, যেসব ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাতে এটা স্পষ্ট তিনি হেরে গেলে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে দিতে পারেন তিনি বা তার সমর্থকরা। এই ভয়ই এখন মার্কিনিদের মধ্যে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন গণতান্ত্রিক। এ নির্বাচনে কোনো হাঙ্গামা, দাঙ্গা স্মরণকালে হয়েছে বলে জানা যায় না। কিন্তু ট্রাম্প এই ধারা শুরু করেছেন ২০২১ সালের ৬ই জানুয়ারি। তাছাড়া তিনি নির্বাচিত হলেও আশঙ্কার ব্যাপার আছে। তার বিরুদ্ধে ডেমোক্রেট সরকার যেভাবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তিনিও ঠিক একই রকম ব্যবস্থা নিতে পারেন-এমন আশঙ্কা শীর্ষ ডেমোক্রেটদের। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি, বিশেষ করে এবারের নির্বাচনে সহিংসতার ভয় করছেন অনেকে। প্রতিহিংসা নেয়ার আশঙ্কা করছেন। এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কড়াকড়ি করা হয়েছে। নির্বাচনে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের মতো অর্থের ছড়াছড়ি করেছে রিপাবলিকান শিবির। বিশেষ করে ট্রাম্পের প্রচারণায় থাকা টেসলার মালিক ইলন মাস্ক প্রতিদিন ১০ লাখ ডলার করে অর্থ দিয়েছেন ভোটারদের। তিনি একটি গ্রুপের মাধ্যমে ভোটারদের নিবন্ধিত হওয়ার টোপ দিয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে লটারি করে প্রতিদিন একজনকে দেয়া হয়েছে ১০ লাখ ডলার করে। এই পদ্ধতি এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে দেখা যায়নি। ইলন মাস্কের এই চর্চার কারণে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। একে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছেন অনেক আইনজীবী। ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোটের লড়াইয়ে সমান তালে লড়াই করছেন কমালা-ট্রাম্প। সেখানে মোট প্রাপ্ত ভোটের ওপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে। একজন প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে হয়। যদি দু’জনের কেউই এই সংখ্যা স্পর্শ করতে না পারেন তাহলে হিসাব অন্যদিকে ঘুরে যাবে। যদি দু’জনেই সমান সংখ্যক ২৬৯-২৬৯টি করে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পান তাহলে সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস। প্রথমে ৫০টি রাজ্যের প্রতিটি থেকে একজন করে প্রতিনিধি ভোট দেবেন দুই প্রার্থীর ওপরে। তাতে যদি কোনো প্রার্থী কমপক্ষে ২৬ ভোট পান তাকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। তারপর ভাইস প্রেসিডেন্ট বাছাই করবে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট। এতে যিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন তিনি হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সমালোচনা করে রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচিত হলে সীমান্ত খুলে দেবেন কমালা হ্যারিস; যাতে অভিবাসী, সংঘবদ্ধ গ্যাং ও অপরাধীরা অনুপ্রবেশ করতে পারেন। দেশটির নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের কিনস্টনে রিপাবলিকান পার্টির এক সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি। সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, কমালা হ্যারিসের কোনও রূপকল্প নেই, কোনও ধারণা নেই এবং কোনও সমাধান নেই। তার একমাত্র বার্তা হলো বিভিন্ন সমস্যার জন্য তিনি নিজেকে দোষারোপ করছেন। সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, কমালা যা বলেন তার সবই মিথ্যা। তার কোনও রূপকল্প নেই, কোনও মতাদর্শ নেই এবং কোনও সমাধান নেই। তিনি শুধু বলতে পারেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প এটা করেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প সেটা করেছেন। তিনি বলেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস যদি জয়ী হতে পারেন, তাহলে প্রথম দিনেই সীমান্ত খুলে দেবেন। আমি জানি, কেন তিনি এটা করবেন। এটা কেউই জানেন না। আমি জিতলে আমেরিকার জনগণই আবার এদেশের শাসক হবে। কমালা তার শপথের লঙ্ঘন করেছেন। আমাদের সার্বভৌমত্বের সীমানা উচ্ছেদ করেছেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস বলেন, মিশিগানে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার নিবন্ধিত মুসলিম ভোটার রয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনকে সমর্থন করেছিলেন। এবারও তাদের থেকে একই ধরনের সমর্থন আশা করছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা। আমরা আজ এখানে আরব আমেরিকান সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে রয়েছি, যারা এখানে গভীর ও গর্বিত ঐতিহ্য নিয়ে এসেছেন। গাজায় মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ এবং লেবাননে বেসামরিক মানুষের হতাহত ও বাস্তুচ্যুতির কারণে এই বছর বেশ কঠিন ছিল। কমলা বলেন, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি গাজা যুদ্ধের অবসান, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা, গাজাবাসীর দুর্ভোগের অবসান, ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ফিলিস্তিনি জনগণ যেন তাদের মর্যাদা, স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার উপলব্ধি করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমার ক্ষমতায় সবকিছু করবো। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন শুরু চায়, যেখানে আমরা পাশের মানুষদের শত্রু হিসেবে নয়, প্রতিবেশী হিসেবে দেখবো। এসময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মিশিগানের গুরুত্ব উল্লেখ করে হ্যারিস আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেন, আমরাই জিতবো।