টাইমস ২৪ ডটনেট: ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের শাহাদাতে ইরানের উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক ও সামরিক কর্মকর্তাগণ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। ইয়াহিয়া সিনওয়ারের শাহাদাতের পর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক ও সামরিক কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন: প্রতিরোধ ফ্রন্ট তার বীরদের হারিয়ে দমে যাবে না। পার্সটুডে আরও জানায়, ইসলামী বিপ্লবের নেতা সিনওয়ারের চলমান পথের প্রতি ইঙ্গিত করে একটি বার্তা দিয়েছেন। ওই বার্তায় তিনি বলেছেন: তার মতো কেউ নিজের সমগ্র জীবন দখলদার ও অত্যাচারী শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে কাটায় নি। সুতরাং তার প্রাপ্য ‘শাহাদাত’ ছাড়া আর কী হতে পারে! তার শাহাদাতের ক্ষতি অবশ্যই প্রতিরোধ ফ্রন্টের জন্য বেদনাদায়ক এবং অপূরণীয়। তবে এই ফ্রন্ট শেখ আহমেদ ইয়াসিন, ফাতিহ শাক্কাকি, রানতিসি এবং ইসমাইল হানিয়ার মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শাহাদাতের পরও অগ্রযাত্রা বন্ধ করে নি। সিনওয়ারের শাহাদাতের ফলেও ওই অগ্রযাত্রা থেমে যাবে না। আল্লাহর ইচ্ছায় হামাস বেঁচে আছে এবং বেঁচে থাকবে।ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও ভিন্ন একটি বার্তা দিয়েছেন। ওই বার্তায় তিনি লিখেছেন: আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জিহাদ এবং দখলকৃত জমির প্রকৃত মালিকদের স্বাধীনতা ও মুক্তি প্রদান একটি মহান আন্দোলন। এই আন্দোলনের বীর নেতাদের হত্যা করার মাধ্যমে আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করা যাবে না।
এদিকে, ইরানের সংসদ মজলিশে শুরার স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবফ এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তাঁর নিজস্ব পেইজে একটি বার্তা দিয়েছেন। ওই বার্তায় তিনি লিখেছেন: শহীদ সিনওয়ার নিজের বিশুদ্ধ রক্ত দিয়ে আল্লাহর সাথে তাঁর চুক্তি পূরণ করেছেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার লড়াইয়ের চিত্র এবার সারা বিশ্বে হাজার হাজার সিনওয়ার ও নাসরাল্লাহ তৈরি করবে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচিও তাঁর এক্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কে লিখেছেন: ইয়াহিয়া সিনওয়ার মৃত্যুকে কখনও ভয় পাননি বরং গাজায় শাহাদাত প্রত্যাশা করেছিলেন। যুদ্ধের ময়দানে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেছেন। তার শাহাদাত ফিলিস্তিনি কিংবা অ-ফিলিস্তিনি সকল ভূখণ্ডের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের জন্য অনুপ্রেরণার উত্স হয়ে থাকবে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল বাকেরি জোর দিয়ে বলেছেন: যুদ্ধক্ষেত্রে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের সংগ্রাম ও শাহাদত প্রমাণ করেছে ইসলামি আদর্শে প্রশিক্ষিত এবং উচ্চ আদর্শ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে শাহাদাত বরণকারীরা জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। তারা এই পবিত্র পথে প্রাণপণ লড়াই করে শহীদ হতে ভয় পায় না।
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল সালামিও একটি বার্তায় লিখেছেন: শহীদ সিনাওয়ার, গাজার গোপন সুড়ঙ্গের গভীরে নয়, রণাঙ্গনের কেন্দ্রস্থলে সামনের সারিতে থেকে যুদ্ধের ইউনিফর্ম পরিধানরত অবস্থায় সৈন্যদের কমান্ড দিতে দিতে ইহুদিবাদী সৈন্যদের সাথে যুদ্ধাবস্থায় শহীদ হয়েছেন। যাতে ইহুদিবাদী শাসকরা বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা চিত্র তৈরি করে তাকে অসম্মান করতে না পারে।
সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল সৈয়দ আব্দুর রহিম মুসাভি বলেছেন: প্রতিরোধের কিংবদন্তির শাহাদাত, আল্লাহর পথে জিহাদের অক্লান্ত সেনানি ইয়াহিয়া সিনওয়ার, যদিও তাঁর শাহাদাত ছিল নৃশংস ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অনুসারীদের জন্য বেদনাদায়ক, তবু এটা সত্য যে তাঁর বিশুদ্ধ রক্ত প্রতিরোধ ফ্রন্টের রক্ষক এবং যোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভের আগুন আরও বেশি দাউ দাউ করে তুলবে।
সূত্র: পার্সটুডে।