topআন্তর্জাতিক

পালটা আক্রমণে ইসরাইল, দক্ষিণ লেবাননে জোর হামলা

টাইমস ২৪ ডটনেট: দক্ষিণ লেবাননে হামলা জোরদার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। মঙ্গলবার লেবাননের দক্ষিণ উপকূলে বেশকিছু বিস্ফোরণ করেছে তারা। সেসময় আশপাশের গ্রামগুলোর ওপর থেকে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেছে। এছাড়াও হামলা আরও তীব্র করতে সৈন্য সংখ্যা বাড়াচ্ছে ইসরাইলিরা। ইতোমধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তারা। এর আগে একই দিনে লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরালের হাইফা শহরে প্রায় ৮৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এএফপি।

হিজবুল্লাহ ও হামাস পরাজিত না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার নির্দেশেই আবারও হামলার পরিধি বিস্তৃত করেছে ইসরাইল সেনারা। দেশটির বিমান হামলায় লেবাননের আরও এক কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছে।

সোমবার সুহেল হুসেইন নামে সেই কমান্ডারকে হত্যা করা হয়। ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হুসেইনি ইরান থেকে অস্ত্র স্থানান্তর এবং হিজবুল্লাহর বিভিন্ন ইউনিটে অস্ত্র বিতরণের কাজে যুক্ত ছিলেন। তিনি যুদ্ধের অপারেশনাল প্ল্যানসহ সংগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর বাজেট এবং ব্যবস্থাপনায় সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

অন্যদিকে ইসরাইলকে জবাব দিতে দেশটির মধ্যাঞ্চলে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। সোমবার ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি জানায়, মধ্যাঞ্চলের জাফা শহরে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। হুথিদের সামরিক মুখপাত্র জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেছেন, তেল আবিবে দুটি সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালান তারা। পাশাপাশি ড্রোন হামলা চালানো হয়।

ইসরাইলের এলিয়াত শহরেও একাধিক ড্রোন হামলা চালিয়েছেন হুথি যোদ্ধারা। এক বিবৃতিতে ইসরাইলি বাহিনী বলেছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ইসরাইলের মধ্যাঞ্চলের আকাশে একটি সারফেস টু সারফেস ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্তের পর বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে। বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ে যান। ক্ষেপণাস্ত্রটি সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। তবে কারা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তা বলা হয়নি বিবৃতিতে।

আবার ইসরাইলের সঙ্গে এক বছরের যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ফিনিক্স পাখির মতো ধ্বংসস্ত‚প থেকে পুনরায় জেগে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন গোষ্ঠীটির নির্বাসিত নেতা খালেদ মেশাল। হামাস এখনো যোদ্ধা নিয়োগ ও অস্ত্র উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সোমবার গাজা যুদ্ধের বর্ষপূর্তিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন খালেদ মেশাল।

১৯৯৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত হামাসের সর্বোচ্চ নেতা ছিলেন খালেদ মেশাল। ১৯৯৭ সালে ইসরাইল তাকে বিষ প্রয়োগ করে মারার চেষ্টা করলেও বেঁচে যান তিনি। প্রায় তিন দশক ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের কারণে মেশাল এখনো হামাসের প্রভাবশালী নেতা। বর্তমানে তাকে হামাসের কূটনৈতিক মুখপাত্র হিসাবে দেখা হয়।

হামাসের সাবেক এই প্রধান বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ইতিহাস কয়েকটি চক্র নিয়ে গঠিত। আমরা এক একটি পর্যায় দিয়ে যাই যেখানে আমরা শহিদদের হারাই এবং সামরিক সক্ষমতার কিছু অংশ হারাই। কিন্তু আল্লাহর রহমতে, ফিলিস্তিনি চেতনা ফিনিক্স পাখির মতো পুনরায় উজ্জীবিত হয়।’

মেশাল জানান, এখনো ইসরাইলি সৈন্যদের বিরুদ্ধে গুপ্ত হামলা চালাতে সক্ষম হামাস যোদ্ধারা। সোমবারও সকালে গাজা থেকে ইসরাইলের দিকে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হামাস। যদিও এর সবগুলো ঠেকিয়ে দেয় ইসরাইল।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের গোলাবারুদ ও অস্ত্রের একটি অংশ হারিয়েছি। তবে হামাস এখনো তরুণদের নিয়োগ করছে এবং গোলাবারুদ ও অস্ত্রের একটি উলে­খযোগ্য অংশ তৈরি করা অব্যাহত রেখেছে।’ এক বছরের এই চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে অনন্ত ৪১,৯৬৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯৭,৫৭০ জন।

Related Articles

Back to top button