টাইমস ২৪ ডটনেট: লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে গতকাল (শুক্রবার) ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করেছেন এবং তিনি তাঁর চূড়ান্ত অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে গেছেন। লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ আজ (শনিবার) এক বিবৃতিতে তাঁর শাহাদাতের খবর নিশ্চিত করেছে। হিজবুল্লাহর পূর্ণ বিবৃতিটি নিম্নরূপ:
“সুতরাং যারা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবনকে বিক্রয় করে তাদের আল্লাহর পথে সংগ্রাম করা উচিত। বস্তুতঃ যে আল্লাহর পথে সংগ্রাম করবে, অতঃপর সে নিহত হবে অথবা বিজয়ী, আমি তাকে শীঘ্রই মহা পুরস্কার দান করব। আমাদের মহান শিক্ষক, প্রতিরোধ আন্দোলনের পথিকৃৎ, আল্লাহর একনিষ্ঠ সৎ বান্দা, সাহসী নেতা, প্রজ্ঞাবান ঈমানদার, দূরদর্শী ও মুমিন সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে শাহাদাতের সুমহান কাফেলায় যোগ দিয়েছেন। এ যেন নবী-রাসূল ও শহীদ ইমামগণের পদতলে ঈমানের ঐশী যাত্রায় এক আলোকিত কারবালা।
লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করার মাধ্যমে নিজের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছৈ গেছেন। তিনি প্রায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শহীদদের পথ ধরে অগ্রসর হয়েছেন এবং এই দীর্ঘ সময়ে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের একের পর এক বিজয় উপহার দিয়েছেন। তিনি ১৯৯২ সালে প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতৃত্বের গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০০ সালে ইহুদিবাদীদের কবল থেকে লেবাননের মুক্তি থেকে শুরু করে ২০০৬ সালের ৩৩ দিনের যুদ্ধে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিজয় তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছে। গত প্রায় এক বছর ধরে গাজার নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে তিনিই লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলনকে ইসরাইল বিরোধী সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর শাহাদাতে আমরা যুগের ইমাম (রেজওয়ানুল্লাহি তায়ালা আলাইহ), মুসলিম বিশ্বের মহান নেতা সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী (দামাত বারাকাতুহুম), বিশিষ্ট আলেমগণ, মুজাহিদগণ এবং সকল মুমিনের প্রতি শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। সেইসঙ্গে আমরা আমাদের প্রতিরোধকামী জাতি, আমাদের ধৈর্যশীল ও মুজাহিদ জনগণ, সমগ্র মুসলিম উম্মাহ, বিশ্বের সমস্ত মুক্ত ও নিপীড়িত মানুষ এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিব জনাব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর সম্মানিত ও ধৈর্যশীল পরিবারকে অভিনন্দন জানাই। মহান আল্লাহ তাকে বায়তুল মুকাদ্দাস ও ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার পথের একজন শহীদ হিসেবে কবুল করুন। তিনি ইমাম হুসাইনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালিত করে বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে বিশ্বাসঘাতক ইহুদিবাদীদের আগ্রাসনে ইমামের শহীদী কাফেলায় শরীক হতে সক্ষম হয়েছেন। আমরা হিজবুল্লাহর বর্তমান নেতৃত্ব এই আত্মোৎসর্গকারী মহান নেতা ও শহীদকে এই প্রতিশ্রুতি প্রদান করছি যে, গাজা ও ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে, লেবাননকে রক্ষা করার লক্ষ্যে ইহুদিবাদী শত্রুর বিরুদ্ধে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাব।
সূত্র: পার্সটুডে।