সুকুমার সরকার, ঢাকা : টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ইতিহাসে নাম লেখালেন নরেন্দ্র মোদী। রোববার সন্ধ্যায় তিনি এবং ৭২ জন মন্ত্রী শপথবাক্য পাঠ করেছেন। এদের মধ্য ৩০ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, পাঁচজন স্বতন্ত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং ৩৬ জন প্রতিমন্ত্রী। কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন তা পরে ঘোষণা করা হবে।
এদিন শপথ নেওয়ার মাধ্যমে ভারতের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হলেন মোদী। তার আগে কেবল জওহরলাল নেহেরু টানা তিনবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। ১৯৫২, ১৯৫৭ ও ১৯৬২ মেয়াদকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। ভারতের গত দুই নির্বাচনে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও এবার ২৭২ আসন ছুঁতে পারেনি নরেন্দ্র মোদীর দল। এর ফলে সরকার গড়তে জোট শরিকদের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে তাদের। এর প্রভাব দেখা গেছে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও। মিত্রশক্তি, বিশেষ করে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ও নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) একাধিক মন্ত্রণালয় পেতে যাচ্ছে মোদী সরকার। গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠিত হয় মোদীর শপথ অনুষ্ঠান। তাকে শপথবাক্য পাঠ করান ভারতীয় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এরপর একে একে শপথ নেন অন্য মন্ত্রীরাও। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ যুগনৌত, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল ‘প্রচন্দ’, এবং আফ্রিকা মহাদেশের ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্র সিচেলিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আতিফ।
এবারের নির্বাচনে তার রাজনৈতিক দল বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। দেশটির লোকসভায় মোট ৫৪৩টি আসন রয়েছে। কোনো দল যদি এককভাবে দল গঠন করতে চায় তাহলে তাদের কমপক্ষে ২৭২টি আসনে জয় পেতে হয়। কিন্তু বিজেপি এবার পেয়েছে ২৪০টি আসন। তবে তাদের এনডিএ জোট পেয়েছে ২৯৩ আসন। তাই তাদেরকে সরকার গঠনের অনুমতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুরমু। শপথ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ, রাজনাথ সিং, নিতিন গড়করি, নির্মলা সীতারামন, ড. এস জয়শঙ্কর, ধর্মেন্দ্র প্রধান, অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং পীযূষ গোয়েল। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন বিজেপির প্রবীণ শিবরাজ সিং চৌহান, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, জেডিইউ নেতা রাজীব রঞ্জন সিং, এইচএএম নেতা জিতন রাম মাঝি, আরএলডির জয়ন্ত চৌধুরী, জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী, এলজেপি (রামবিলাস) প্রধান চিরাগ পাসোয়ান, জিতিন প্রসাদ, ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি, মুকেশ আম্বানি, বলিউড তারকা শাহরুখ খান, অক্ষয় কুমার, দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার রজনীকান্তসহ আরও কয়েক হাজার অতিথি।