টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল।ঘূর্ণিঝড় রিমালে এখন পর্যন্ত ৭ জেলায় ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ঘূর্ণিঝড়ে পটুয়াখালীতে ৩, সাতক্ষীরায় ১, ভোলায় ৩, চট্টগ্রাম ১, কুমিল্লা ১, বরিশালে ২ এবং খুলনায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসের পর উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি হচ্ছে। প্রবল জোয়ারে কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে, কোথাও পানি উপচে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। বিভিন্ন জেলায় বিধ্বস্ত হয়েছে বাড়িঘর, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অনেক এলাকা।
জানা গেছে, রেমালের তাণ্ডবে উপকূলীয় অঞ্চলসহ সারা বাংলাদেশে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সঙ্গে চলছে তীব্র ঝোড়ো ও দমকা হাওয়া। জোয়ারের জলে নিঝুমদ্বীপ, মহেশখালী, রাঙ্গাবালী, বরগুনার পাথরঘাটা, বাগেরহাট, মোংলা, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। শত শত গাছ উপড়ে পড়েছে। বহু ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ও মোবাইল টাওয়ার ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে উপকূলী অঞ্চল।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ বৃষ্টিপাত ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে।বাংলাদেশের পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরীর বেশিরভাগ এলাকা। ডুবেছে সড়ক, অলি-গলি। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক যানজট। জল ঢুকেছে বাসাবাড়ি, দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এতে নগরীর বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বাংলাদেশে ১৯টি জেলায় ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে সাড়ে ৩৬ হাজার ঘরবাড়ি। আর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি ঘর। ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসাসেবা দিতে ১ হাজার ৪৭১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে চালু আছে ১ হাজার ৪০০ টিম। দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য সব মন্ত্রণালয় সমন্বয় করে কাজ করা হবে।
ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের প্রধান ড. শামীম হাসান ভূঁইয়া জানান, আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি থাকবে। তাই ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে জনভোগান্তি শিগগিরই কমছে না।