সারাদেশ

বাংলাদেশে সুন্দরবনে ৩০ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে

টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: বাংলাদেশে সুন্দরবনে গত শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে লাগা আগুন ৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও ফের যেকোন সময় আবার জ্বলে উঠতে পারে বলে জানিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক। তবে আগামী কয়েক দিন এখানে অগ্নিনির্বাপণ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলমান রাখা হবে। কেননা, ফরেস্ট ফায়ার আপাতত নিভে গেছে বা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে মনে হলেও আবার যেকোনো সময় এটি নতুনভাবে সৃষ্টি ও বিস্তৃতি ঘটতে পারে। আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয়ে তদন্তের জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গতকাল রবিববার বিকেলে সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের সিনিয়র তথ্য অফিসার দীপংকর বরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আওতাধীন চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া ক্যাম্পের বনাঞ্চলের আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। আগুন গাছের উপরে বা ডালপালায় বিস্তৃত হয়নি, শুধু মাটির উপরে বিক্ষিপ্তভাবে বিস্তৃত হয়েছে। ঘটনাস্থলে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট, নৌবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সিপিজি, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় জনগণ অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা করছেন। এ ছাড়া বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও অগ্নিনির্বাপণে উপর থেকে জল ছিটিয়ে সহায়তা করেছে।
গত শনিবার সুন্দরবনে বিকেল সাড়ে ৩টায় আগুন লাগে। গতকাল রবিবার ভোর থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে দমকল বিভাগ। তাদের সহযোগিতা করতে বন বিভাগ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি যোগ দেয় কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর দুটি আলাদা দল। সকাল থেকে দুই দফায় হেলিকপ্টারে করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিমানবাহিনী। দমকল বিভাগ জানায়- সকালেই সুন্দরবনের আগুন নেভাতে তাদের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এর মধ্যে মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার তিনটি ইউনিট কাজ শুরু করে। আগুন অল্প অল্প করে জ্বলছে। শুকনো পাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করার শঙ্কা নেই। দমকলের পাশাপাশি বনবিভাগ ও গ্রামবাসী আগুন নেভাতে কাজ করেছে। কাছাকাছি জলের উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়। দুই কিলোমিটার দূর থেকে জলআনতে হয়। বন বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে বালতি ও কলসি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন।
বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দে জানান, সুন্দরবনের আমুরবুনিয়া জঙ্গলের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। নতুন করে আগুন আর ছড়ায়নি। দমকল বিভাগের সহায়তায় বন বিভাগের ২ শতাধিক বনকর্মীসহ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, আনসার-ভিডিপি সদস্যরা আগুন নেভাতে কাজ করে। বিমানবাহিনীও আগুন নির্বাপণে অংশ নেয়। প্রাথমিকভাবে বনের ৫/৬ একর বনভূমির লতাগুল্ম পুড়ে গেছে বলে সিএফ জানিয়েছেন। গত ২৪ বছরে সুন্দরবনে ২৬ বার আগুন লেগে সরকারি হিসেবে প্রায় ৭৫ একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। মুনাফালোভী মাছ ব্যবসায়ী ও অসৎ বন আধিকারীকের যোগসাজশে এবং অদক্ষ মৌয়ালদের কারণে সুন্দরবনে বারে বারে আগুন লাগছে। এর দায়ভার বন বিভাগ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।সুন্দরবনের আমুরবুনিয়া এলাকায় চার বছর পরে আবারও অগ্নিকাণ্ড সংগঠিত হল।

Related Articles

Back to top button