topআন্তর্জাতিক

ফের ইসরায়েলে রকেট ছুড়েছে হামাস

টাইমস ২৪ ডটনেট: ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেড বলেছে, লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত থেকে তাদের যোদ্ধারা সোমবার উত্তর ইসরায়েলের একটি সামরিক অবস্থানে বেশ কয়েকটি রকেট নিক্ষেপ করেছে। সোমবার সামাজিক মাধ্যম টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে আল-কাসাম ব্রিগেড বলেছে, ‘গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে জায়নবাদী শত্রুর (ইসরায়েল) গণহত্যার প্রতিক্রিয়া হিসাবে হামাস যোদ্ধারা দক্ষিণ লেবানন থেকে একটি ইসরায়েলি সামরিক অবস্থানের দিকে একটি রকেট ব্যারেজ ছুড়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, ‘প্রায় ২০টি রকেট লেবানন থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করে, তবে বেশিরভাগ রকেট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ভূপাতিত করা হয়েছে।’ এ হামলায় কোনো আহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

এদিকে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল সোমবার মিশরে পৌঁছানোর প্রত্যাশিত সময়ে সর্বশেষ রকেট হামলার খবর এলো, যেখানে তারা গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির জন্য ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার কথা ছিল।

এর আগে গত ২১ এপ্রিল, কাসাম ব্রিগেড উত্তর ইসরায়েলে রকেট হামলার দাবি করেছিল। যা গত জানুয়ারিতে দক্ষিণ বৈরুতে হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ঘাঁটিতে ইসরায়েলের হামলায় হামাসের ডেপুটি লিডার সালেহ আল-আরুরি এবং ছয়জন যোদ্ধা নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়া ছিল।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবরের হামলা গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর হামাসের শক্তিশালী লেবানিজ মিত্র হিজবুল্লাহ সীমান্তের ওপারে ইসরায়েলি বাহিনীর সাথে প্রায় প্রতিদিনই গুলি বিনিময় করেছে।

এএফপির তথ্য অনুযায়ী, লেবানন ও ইসরায়েলের আন্তঃসীমান্ত সহিংসতায় অন্তত ৩৮৫ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ৭৩ জন বেসামরিক লোক রয়েছে। এই তালিকায় অন্তত ১১ জন হামাস যোদ্ধা রয়েছে। ইসরায়েল বলছে, হিজবুল্লাহর হামলায় সীমান্ত এলাকায় ১১ সেনা ও ৯ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এদিন ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পাঁচ হাজারের বেশি রকেট হামলা চালায় গোষ্ঠীটি। পাশাপাশি ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। তারপর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। পরে ২৮ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

৬ মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় ইতোমধ্যেই নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়াও ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এছাড়া গাজার হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে, যা গত ৭৫ বছরে ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সংঘর্ষ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

জাতিসংঘের মতে, গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা ইসরায়েলি আক্রমণে বাস্তুচ্যুত এবং তাদের সকলেই খাদ্য নিরাপত্তাহীন। অন্যদিকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ কমেছে প্রায় অর্ধেক।

অন্যদিকে হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জন। পাশাপাশি ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।

সূত্র: আল আরাবিয়া, এএফপি ও ঢাকা টাইমস।

Related Articles

Back to top button