টাইমস ২৪ ডটনেট, ঢাকা: বাংলাদেশে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ব্যাপক উৎসাহ, আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।৩০ দিন সিয়াম সাধনার পর মুসলিম সম্প্রদায় বৃহস্পতিবার সকালে ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেছেন।
ঢাকায় জাতীয় ঈদগাহে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে ঈদের প্রধান জামাত শেষ হয় ৮টা ৪০ মিনিটে। জাতীয় ঈদগাহে প্রধান ঈদ জামাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন ইমাম ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন ক্বারী মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সহকারী ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।
সকালে পল্টন মোড়, মৎস্য ভবন ও হাইকোর্টের সামনে দিয়ে তিনটি চেকপোস্টের মধ্য দিয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করেন মুসল্লিরা। ঈদ জামাতে প্রবেশের মুখে র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তীক্ষ্ণ নজরদারি ছিল। ঈদ জামাতে আসা মুসল্লিদের তিন জায়গায় তল্লাশি করার পরই ঈদগাহে প্রবেশ করতে দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৭টায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয়।এর আগে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাতের পর শুরু হয় ঈদের বিশেষ খুতবা। এ জামাত ছাড়াও বায়তুল মোকাররমে ঈদের আরও ৪টি জামাত পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়াও কিশোরগঞ্জ ও দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় লাখ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদের এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নতুন পোশাক পরে ঈদের পুরো দিনই চলছে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি। বেড়াতে যাচ্ছেন একে অপরের বাড়ি, করছেন মিষ্টিমুখ। ছোটরা নতুন পোশাক পরে বড়দের কাছ থেকে সালামি আদায়ে তৎপর রয়েছে সারাদিন।
ঈদের দিন সেমাই, মিষ্টান্ন, কোর্মা, পোলাও, খিচুড়িসহ নানান পদের খাবার রান্না করতে উপকরণ নিয়ে ঘরে ঘরে প্রস্তুত রয়েছেন আছেন গৃহিণীরা। ঘরহীন পথের মানুষটি পর্যন্ত এ দিন চেষ্টা করেন সাধ্যমতো বিশেষ খাবার রান্নার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি ঈদের শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন।
ইদ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় ভারতীয় কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। হাইকমিশন জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা এক চিঠিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনগণ ও ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগণকে ইদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, আমরা ইদুল ফিতরকে ঐতিহ্য ও উৎসাহের সঙ্গে উদযাপন করি। পবিত্র ইদুল ফিতর বিশ্বজুড়ে মানুষ সহানুভূতি, ভ্রাতৃত্ব এবং ঐক্যের মূল্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বের মানুষের জন্য শান্তি, সম্প্রীতি, সুস্বাস্থ্য ও সুখের আশা ও প্রার্থনা করেছেন এবং দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরো দৃঢ় হওয়ার কামনা করেছেন।পবিত্র বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি পাঠিয়েছেন নরেন্দ্র।